বইমেলায় সাধারণত দুই ধরণের লোক যায়।
১) যারা বই কেনে।
২) যারা বই পড়ে।
এছাড়া যারা যায় তারা ঠিক বইমেলায় যায় বলা ভুল হবে। বলতে হবে তারা মেলায় যায়।
তো একরাশ ধূলোর পাশাপাশি এবারের মেলায় যেটা সবচেয়ে ভালো ব্যাপার তা হল মেলার পরিসর। মেলার পরিসর আমার কাছে গতবারের তুলনায় দ্বিগুণ লেগেছে। লিটল ম্যাগের স্টলের সংখ্যাও বেড়েছে। সেই সাথে বেড়েছে লেখক আড্ডার সংখ্যা। তবে সিকিউরিটি অনেকটাই হালকা হয়ে গেছে আর ফুটপাতে কোন স্টল চোখে পড়ে নি। এছাড়া গতবারের মতোই প্রয়াত সাহিত্যিকদের ব্র্যাণ্ডিং করে চলা প্রকাশনীগুলো এবারও স্টল সাজিয়েছেন নন্দিত সাহিত্যিকের স্থিরচিত্র দিয়েই। ই-বুক ডাউনলোডের অ্যাপসের বেশ কিছু স্টলও দেখলাম। যেমন- ঘূণপোকা, সেই বই। মেলায় ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের a2i অর্থাৎ access to information technology। ১০ এমবিপিএস আনলিমিটেড প্যাকেজের এই সুবিধা ভোগ করা যাবে বিনামূল্যে a2i স্টলের ২০০ মিটার সীমার মধ্যে। বইমেলা উপলক্ষে ব্রিটিশ কাউন্সিল দিচ্ছে তাদের মেম্বারশীপের উপর ১০% ডিসকাউন্ট আর রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান টেলিটক দিচ্ছে কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য মাত্র ৫০ টাকা মূল্যমানের নতুন সিম প্যাকেজ "বর্ণমালা"।
এবার ব্যক্তিগত কিছু বলি। এবারের বইমেলায় টার্গেট নিয়েছি ২৮ দিন উপস্থিত থাকার। এক বন্ধু জানতে চেয়েছে, "কি মজা পাস বইমেলায় গিয়ে?" আমি বলেছি, "বইমেলায় আমি দুটো জিনিস দেখতে যাই। ১) বই, ২)মানুষ।" সত্যিই তাই! বইমেলায় বই কিনতে আসার লোক যতজন তার দ্বিগুণ বই দেখতে আসে আর যতজন বই দেখতে আসে তার দ্বিগুণ আসে মেলা দেখতে। আর পাশাপাশি সেলফি তো চলছেই। নতুন একটা চল শুরু হয়েও যেতে পারে "স্টলফি"। অনেককেই দেখলাম যে স্টল পছন্দ হচ্ছে তার সাথেই সেলফি তুলছেন। তবে হরতাল-অবরোধ আর সবেমাত্র শুরু বলে সেরকম জনসমাগম চোখে পড়ে নি। কিছু স্টল এখনো সাজগোজে ব্যস্ত। তো আমি কিছুটা দয়াপরবশ হয়ে যেসব স্টলের হ্যাণ্ডসাম সেলসম্যান আর কিউট সেলসগার্লরা ঝিমুচ্ছিলেন তাদের জাগিয়ে তুলে তাদের বইগুলোর ধুলো ঝেড়ে দিলাম। অন্তত বই দেখার জন্যও কেউ স্টলে এসেছে দেখে তারা ধন্য ধন্য করে উঠল। তারপর মেলা তো শুরু, পরে কিনব বলে কেটে পড়ি।
এভাবেই কেটে গেল বইমেলার প্রথম দুটি দিন