১
শীতের পিঠা খেতে হঠাৎ বাড়িতে আসা। বোন জামাই বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে ফেরার পথে তিন খালের একটা মোহনা। পাশেই উত্তর দিকে একটা ঘাটলা। তিনটে বাচ্চা খেলছে। ঘাটলার লাগোয়া একটা মসজিদ। মসজিদের পূর্ব পাশে মাঠের অপর প্রান্তে জীর্ণ একটি টিনের ঘর। ওটা হলো মক্তব। আছরের নামাজ পড়ে সিএনজি ধরতে যাবো। মোহনায় হারিয়ে যাওয়া গরু,নৌকো ও মানুষের গল্প শুনছিলাম। তখনি খালের অপরপ্রান্তে এই করুন দিনযাপন চোখে পড়ল।
তিনটি খালের মোহনায় এরকম একটি বাড়ি। সম্বল একটা নৌকা। কলস দেখে মনে হলো দুধ দিতে যায়। মানে কয়েকটি গরু আছে। সন্ধ্যার সময় কিশোরী মেয়েটা মাকে বলতেছে "ও মা,মুই গেলাম দুধ দিয়া আইতে"। অনেকটা সময় দাড়িয়ে রইলাম। সন্ধ্যার মলিনতা ধীরে গ্রাস করছিলো শীতের করুণ সূর্যকে।কুয়াশা নামার দাড় প্রান্তে মনে হলো পৃথিবী সন্ধ্যার মতই মলিন।
২
বাড়ি আসার দ্বিতীয় দিন গোসলে যাবার সময়ে হঠাৎ গাছটাকে নজরে পড়লো। প্রতিদিন এমন দৃশ্য দেখে অভ্যস্ত তবুও গাছের দু'প্রান্তে দুইটি নৌকো বিষয়টা ভালো লাগল।
ওনারা সকাল থেকে বঁড়শি ফেলে চিংড়ি মাছ ধরেন। শীতের নদী পুকুরের মত শান্ত। নরম রোদে গা জুড়ায়, মনের সুখে গান গায় আর চিংড়ি ধরে সন্ধ্যার হাটে বেঁচে।
৩
বাড়িতে ফজরের নামাজ পড়েও খানিকটা ঘুমোই। ওদিন সকাল ৯টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে উঠে মনে হলো ৭ টাও বাজেনি। নদীর পাড়ে গিয়ে দেখি সূর্য অনেক চেষ্টা করেও পারেনি। নদীর শান্ত জ্বলে দু'একটা নৌকা আসা যাওয়া করে। ঢাকা থেকে আসার পরে এমন একটা সকালে কানটা বড়ই অদ্ভুত আচরণ করে। এত নিরবতা কিছুতেই মেনে নিতে পারে না। মাঝে মাঝে নৈঃশব্দের মাঝেও কেমন ঝিঃ ঝিঃ করে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৪:১৫