একবার দুই বন্ধু মিলে বনে শিকারে গেল। দুজনই সাহসী। তবে দ্বিতীয় বন্ধুটি প্রথম বন্ধুর চেয়ে একটু বেশি চালাক। বনে হাজির হয়ে তারা ঠিক করলো, আজকে তারা শিকারের প্রতিযোগিতা করবে। এরপর তারা শিকার করার জন্য দুজন দু দিকে চলে গেল। প্রথম বন্ধু এই বনে আগেও শিকার করার কারনে সে জানত যে এই বনে বাঘ অনেক বেশি। তাই সে বাঘ শিকার করবে বলেই ঠিক করলো। অভিজ্ঞ শিকারি বলে একটু খুঁজতেই সে বাঘের পায়ের ছাপ পেয়ে গেল। এরপর সেই ছাপ অনুসরন করে সে সামনের দিকে এগুতে লাগলো। এদিকে অন্য বন্ধুটি এই বনে নতুন হওয়ার কারনে ঠিক করতে পারছিল না যে কে শিকার করবে সে। অনেকক্ষন চিন্তা করার পর সে তার বন্ধুকেই অনুসরন করার সিদ্ধান্ত নিল, কারন সে ভেবেছিল যে তার বন্ধুর শিকার করার আগেই সে ঐ শিকার নিজের করে নিবে । তার গতি একটু বেশি হওয়ায় সে অল্প সময়েই তার বন্ধুর ৩০ গজের মধ্যে পৌছে গেল। কিন্তু অনুসরন করতে গিয়ে সে অনেক শব্দ করতে লাগলো। এদিকে প্রথম বন্ধুটি সেই শব্দ শুনতে পেরে কিছুটা ঘাবড়ে গেল। এদিকে আবার একটা ক্ষুধার্ত বাঘ ঐ সময়ই পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। মানুষের গন্ধ পেয়ে সে চুপি চুপি সামনের দিকে অগ্রসর হতে লাগলো। তার সামনেই ছিল প্রথম বন্ধুটি। এই সময় বাঘটিকে দেখতে পেয়ে দ্বিতীয় বন্ধুটি একটু জোরে হাঁটা শুরু করলো যাতে তার বন্ধু দেখার আগেই সে বাঘটি শিকার করতে পারে। এছাড়া তার মনে সন্দেহ জেগেছিল যে তার বন্ধুর পক্ষে সেই বাঘ বশ করা সম্ভবও নাকি। এদিকে তার দ্রুত হাঁটার শব্দে বোকা বন্ধুটি ভুল করে তাকেই বাঘ ভেবে বসলো। সে ঠিক করলো যে দশ পর্যন্ত গুনে সে আওযাজ লক্ষ্য করে গুলি করবে। তাই সে মনে মনে দশ পর্যন্ত গুনা শুরু করলো। দ্বিতীয় বন্ধুটির নিশানার ভেতর বাঘটি এসে পড়লো, ঠিক তখনই প্রথম বন্ধুটি ঘুরে তাকে গুলি করে বসলো। আর সেই গুলির শব্দ শুনে বাঘটি পালিয়ে গেল। বাঘটি পালিয়ে যাচ্ছে দেখে দ্বিতীয় বন্ধুটি মুখে হাসই নিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো। কারন সে জানে তার বন্ধু অন্তত বাঘের হাতে মারা যায়নি।
শিক্ষাঃ
১) অতি চালাকের গলায় দড়ি
২) সত্যিকারের বন্ধুর কাছে নিজের জীবনের চেয়ে বন্ধুর জীবন বেশি গুরুত্বপূর্ণ
৩) সম্পূর্ন পরিস্থিতি না বুঝে কাজ করলে ক্ষতিই বেশি হয়
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০০৮ ভোর ৪:০১