আড্ডা! আবার আড্ডা! হেলাল মামা আর জিসান মামাকে মনে মনে কোটি কোটি মাইনাস দিয়ে আড্ডাস্থলে যাইবার সিদ্ধান্ত লইলাম। পুশকিন ভাই আর কাউছার রুশো ভাইয়ের গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হইয়া সবাই আড্ডা দিতে প্রস্তুত হইলো। ২৩ তারিখ এলো। বিকেলের আড্ডা শুরু হলো! নিশাচর তখনো কম্বলের নিচে গভীর ঘুমে! ঘুম ভেঙ্গে দেখে,একি! আড্ডা যে শুরু হয়ে গেলো! পড়িমড়ি করে দে ছুট। বাসে বসে একা ভাবি,কখন যে পৌছাবো! কত কিছুনা মিস হয়ে যাচ্ছে!
অবশেষে পৌছালাম, টিএসসি তে! গিয়ে দেখি কেউ নাই! সব কি চলে গেলো! আশকারিকে ফোন দিলাম। শয়তানটা বলে,আপনি কে! মর্মান্তিক মর্মাহত হয়ে গেলাম! আমার এতো সুন্দর গলার আওয়াজ ভুলে গেছে! মাইনাস,মাইনাস। আশকারি জানালো সবাই উদ্যানে। এতো বড় উদ্যানের কোথায় তাদের খুঁজে পাই! প্রবেশ পথেই দেখি এক ভদ্রমহিলা ছুটতে ছুটতে আসছেন। চিনিলাম! আশকারির আরজুপনি খালা যে! উনার পিছু নিলাম। গন্তব্যে পৌছে গেলাম(কে বলে, নারী শুধু বিপদ্গামী করে! পথও দেখায়,সেদিন বুঝলাম)। গুটিকয়েক মানুষের আড্ডা হবে ভেবেছিলাম। গিয়ে দেখি জনসমুদ্র! কে নেই! প্রিয় ব্লগারদের সবাই আছে। আশেপাশে মানুষ জমে গেছে!
সবাই নিজ নিজ পরিচয় দিলো। সবার মুখোশ উন্মচিত হইলো। আহা! কি শান্তি! পাইছি এইবার! যারা নিজেকে লুকিয়ে রাখবেন বলে এসেছিলেন, তারাও লুকাতে পারেন নি(এটার জন্য আশাকরি তাদের কোন রাগ নেই)। পরিচয় পর্ব শেষে আড্ডা আর সিনেমাখোরদের ছবি বিনিময়। কঠিন নিরাপত্তা বলয়ে তাহারা ছবি বিনিময় করিলেন (কারন কি! ১৮+ ছিলো নাকি)। এরপর আমব্লগারদের আড্ডায় যোগদান করলাম। সেকি আড্ডা!
ব্লগ ডেতে নিশাত আর আরজুপনি আপু ফিসফিস করেছিলেন। এইবার তাহাদের দলে আরো একজন যোগ দিলেন। সেই মেয়েটার নাম অপরিনীতা (দুইমাসের বেশি সময় ধরে ব্লগ লিখছেন। এখনও ওয়াচে আছেন। দারুন সব লেখা লিখেন। তাকে সেফ করা হলে সবাই দারুন কিছু লেখা পাবে) । জ্ঞানীজনেরা বলেন, নারী চুপ থাকার নয়!
শিপু ভাইদের সাথে চলচ্চিত্রের সাময়িক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করিলাম। উনাদের অনেক জ্ঞান দিলাম!
এরপর খাওয়া-দাওয়া পর্ব। সহচর ভাই আর আমাকে পাঠানো হলো, পিঠার সন্ধানে। আমরা এই অভিযানে সফল হইলাম। পরে সবাইকে পথ দেখিয়ে নেয়ার দায়িত্ব আমাকে আর সহচর ভাইকে দেয়া হলো।পিঠা খাওয়ার আগেই সহচর ভাই ডিগবাজী খেলেন। উনি নাকি পথ ভুলে গেছেন! কি আর করা! জাতি এই নিশাচরকে ছাড়া যে অসহায়,সেটা আবার প্রমানিত হইলো।
পিঠা খাইতেছিলাম। এমন সময় হঠাৎ ঘোমটা টেনে দূর্যোধনের আভির্ভাব!
আড্ডায় এক চমক হয়ে এলেন! নিজের পরিচয় দেয়ার আগেই উনি সব বলে দিচ্ছেন! উনি জইতিষি নাকি! বলতেই হবে দারুন এক মানুষ। মনসুর ভাই খুব খেপাচ্ছিলেন। মনসুর ভাইকে দূর্যোধন বারকয়েক বিনীত হুমকিও দিলেন! সবাইকে পিঠামুখ করিয়ে দূর্যোধন ভাগলেন।
অবশেষে বাড়ি ফেরার গান। আশকারিকে পথ দেখিয়ে তাহার পিতার হাতে সোপর্দ করে আড্ডায় ফিরে আসার সময় আমি নিজেই পথ হারাইলাম। এইপথ ,সেই পথ ঘুরে সবাইকে যখন খুঁজে পাচ্ছিলাম না। ভাবলাম পোষ্ট দিয়ে বিদায় নিয়ে নেবো। পরে পাইলাম। এবং বিদায় নিয়ে বাড়ির পথে যাত্রা করলাম।
(এই পোষ্টে বাকিদের নাম না আসায়,তারা যেনো ভাববেন না, তাদের কথা ভুলে গিয়েছি। ভুলা কিভাবে যায়? আপনারা পারবেন ভুলতে?)
উৎসর্গঃ আজকে যাহার জন্মদিন- সেই মামাকে জিসান শা ইকরাম