প্রায় চারশত বর্গকিঃমিঃ-র এই গোজে দ্বীপে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ জাহাজ নির্মান প্রতিষ্ঠান গুলো রয়েছে, একারনে গতবৎসর প্রফেসরের সাথে গিয়েছিলাম সেখানে, কিন্তু পুরো দ্বীপটি ঘুরে দেখবার সৌভাগ্য হয়ে ওঠেনি, তাই এবার আর সেই চান্সটি মিস করতে চাচ্ছি না। আর আইল্যান্ডে এডভেঞ্চারের কথা শুনে সবাই যাবার জন্য এক পায়ে খাড়া। সিদ্ধান্ত নেয়া হল পড়শুদিন সকালে রওনা দেব আমরা।
যাত্রা হল শুরু
মনে হয় যেন আজীবন থেকে যাই ...
দুজন নারী আর পাঁচজন পুরুষের এই সাত সদস্যের টিম সক্কাল-সক্কাল বেড়িয়ে পরলাম গোজে আইল্যান্ডের উদ্দেশ্যে, প্রথমে আমাদের গন্তব্য- এক্সপ্রেস বাস টার্মিনাল, এরপর বাসে করে দ্বীপ যাত্রা। ক্যাম্পাসের কাছ থেকে সাবওয়ে-তে করে বাস টার্মিনালে যাচ্ছি আমরা। কোরিয়ার একটা জিনিস বেশ লাগে আমার আর তা হল এদের যোগাযোগ ব্যাবস্থা, কেউ চাইলে খুব ক্যালকুলেটিভ ওয়েতে বের হতে পারে ঘর থেকে, যেমনঃ আমাদের বিশ্বঃবিদ্যালয় থেকে পাবলিক ট্র্যান্সপোর্টে করে বাস টার্মিনালে যেতে পঁয়তাল্লিশ মিনিট লাগবে, এক্কেবারে ঘড়ি ধরা, দু’এক মিনিট এদিক ওদিক হতে পারে বড়জোড়। বাসের জন্য অপেক্ষা করছি সবাই টার্মিনালে, মামুন ভাই এদিকে তার সদ্য কেনা আইফোনটি নিয়ে হিসেবে ব্যাস্ত, আমাদের ক্যাশিয়ার যে উনি।
আমাদের পেনসন ...
জাহাজীর ট্রলারখানা ...
হাস্যরত দুই কোরিয়ান বালিকা...
গোজে দ্বীপে যেখানে আমরা উঠবো সেই ‘পেনসনের’ মালিককে আগেই বলে রাখা ছিলো আমাদের রিসিভ করার জন্য। ওখানে ট্যুরিস্টদের জন্য আবাসিক মোটেলগুলোকে পেনসন বলে। বাসে আমি ঘুমিয়ে কাটালেও সদ্য কোরিয়া আগত তিন সহযাত্রী উৎসুক দৃষ্টিতে বাহিরে নেত্রক্ষেপন করছে আর মুখদিয়ে হর্ষমিশ্রিত বিষ্ময়কর বাক্য বেরিয়ে আসছে তা বুঝতে আর বাকি রইলনা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে নষ্ট না করেও যে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধার যোগান দিয়ে একটি উন্নত লোকালয় গড়ে ওঠা সম্ভব তার প্রকৃষ্ট উদাহরন এই গোজে দ্বীপ। ভূল বলছি, শুধু গোজে নয় বরঞ্চ পুরো কোরিয়া দেশটি এরকম। গিয়ে দেখি বাসটার্মিনালে সেই পেনসনের মালিক তার ছেলেকে নিয়ে আমাদের জন্য বাস টার্মিনালে অপেক্ষমান। লাঞ্চের সময় হয়ে গিয়েছিলো, তাই কিছু খাবার মুখে দেয়ার জন্য রেষ্টুরেন্টে ঢুকলাম আমরা।
(চলবে...)
গোজে দ্বীপে স্বেচ্ছানির্বাসন -২