ঘটনা: ০১
রাজধানীর গুলিস্তান থেকে যেকোন সাধারন নাগরিক ৬০ টাকা দিয়ে দিঘীরপাড় নামক বাসে উঠলে পোস্ত গোলা, ফতুল্লা, কাঠপটটি জায়গা গুলো দেড় ঘন্টা পাড় হলেই ধলেশ্বরী নদীর নয়নাভিরাম সৌন্দর্য দেখতে পাবে। তারপর নদীর উপর মুক্তার পুরের ৬ষঠ চীন বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু।সেটা পার হলেই মুন্সিগঞ্জ। এছাড়াও নিজস্ব প্রাইভেট কার,নদীপথ, ট্রেন পথ তো আছে। ঢাকার অদূরে আরেক পৃথিবীর গল্প।
কয়েক মাস আগের কথা আমি অনেকদিন পর জাপান থেকে ফিরেছি। ভাই সহ গেলাম ঢাকার বাসা থেকে মুন্সিগঞ্জের বাড়ি। দূরত্ব কম হওয়ায় ঢাকা এবং মুন্সিগঞ্জে নিয়মিতভাবে যাতায়াত। সেদিন সকাল বেলা।আমার মা বাবা ভাই এবং আমি নাস্তা করছি। আমার ভাই তরুন এডভোকেট। নাস্তা করে কোর্টে যাবে। এমন সময়ে উপর তলা থেকে ভাড়াটিয়া মহিলার সাথে ডিস লাইনের টাকা নেওয়ার ছেলেটির সাথে তর্ক। ডিস লাইনের মাসিক টাকা নিবে কিন্তু রশিদ কার্ড দিবে না। ভদ্র মহিলাকে ২২/২৩ বছরের মামুন নামের বেয়াদব ছেলেটি হুংকার দিয়ে বলছে, কার্ড কি হাতের মোয়া নাকি চাইলেই দিতে হইবো। মহিলা , বলছে তাহলে টাকা যে নিচেছা প্রমান কি? আমরা চেঁচামেচি শুনে বের হই। ভদ্র মহিলার ছোট দুই বাচচা নিয়ে একা বাসায়। তার বর চাকরিতে। যেহেতু আমরা বাড়ির মালিক। কিছু দায়িত্ব আমাদের কাধে এসে পড়ে। আমার ভাই ধমক দেয়। এই ছেলে বেয়াদবের মতো কথা বলছো কেনো? এটা তো আইনত অন্যায়।বিল নিলে রশিদ দিতে হবে। টাকা যে নিচেছা তার প্রমান কি?
ছেলেটি ঘাড় বাকা করে, চোখ ছোট করে বলে রশিদ কার্ড দেওন যাইবো না। আমরা এমনেই টাকা নেই। আমগো কথা মতো চলবো।
রাজনৈতিক ক্ষমতার বড় ভাইদের ছায়ায় থাকা ছোট ভাইরা একটু ক্ষমতার নেশায় থাকে। তার অন্যায়কে ন্যায় মেনে নিয়ে আমাদের সাধারন নাগরিকদের বেচেঁ থাকতে হয়।তার উদ্ধত আচরনে কারও মাথা ঠিক থাকবে না শুরু হলো তর্কাতর্কি। এরপর হাতাহাতি। বের হয়ে এলো আরেক ভারাটিয়া অবসর প্রাপ্ত পুলিশ। সেও অন্যায়ের প্রতিবাদ করলো। ছেলেটি বেশি সুবিধা করতে পারলো না। তাকে ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হলো। তার মালিক কে ফোনে তার বেয়াদবির কথা জানাতে গেলে সেই ধরে কেটে দেয়।এবং স্বাভাবিক নিয়মে আমার ভাই কোর্টে চলে যায়। আব্বা এগিয়ে দিয়ে আসতে যায়। কিছুক্ষন পর সেই ছেলেটি ২০/২৫ জন নেশা গ্রস্ত গুন্ডা পান্ডাদের সহ অস্ত্র নিয়ে আসে আক্রোমন করার জন্য। আমার ভাই কে খুজতে থাকে । আমি আর আমার মা বের হই। তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা হম্বিতম্বি করতে থাকে। আমি ঠান্ডা মাথায় রইলাম। আমাদের বাসা থেকে ১০ মিনিট দূরত্বে মুন্সিগঞ্জ থানা। আমাদের অন্য ভারাটিয়ারা না করলো মেয়ে মানুষ হয়ে যেন পুলিশের ঘটনায় না যাই। আমি বুঝলাম তারা সমস্যা করবেই। বিকৃত মানসিকতার নেশাখোরদের বিশ্বাস করতে নেই। আমি চলে গেলাম। থানায় ডিউটিরত অফিসাররা বেশ দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করলো। ডিস লাইনের মালিক নিজে চলে এলো মিমাংসায় যে এর পর থেকে নিয়মিত ডিস বিলের রশিদ দিবে। আর ঐ ছেলেটিকে সরিয়ে নেওয়া হলো। অন্য ছেলে বিল নিতে আসে।
এটা সত্যি তার ব্যবসা আয়ের উৎস এবং আইনের কঠিন শাসনকে সবাই ভয় পায়। যদি সেটা সঠিকভাবে প্রয়োগ হয়।
আজকে মেয়ে মানুষ হয়ে যদি ঘরে বসে থাকতাম। তাহলে কিছু বিকৃত পথ ভ্রষ্ট মানুষের কাছে জিন্মি হয়ে মাথা নিচু করে থাকতাম। এটাও সত্যি সূযোগ পেলে তারা আমাদের যেকোন সময়ে ক্ষতি করতে পারে। সাহস আর সচেতনতার কাছে পৃথিবীর সব সন্ত্রাস পিছু হটে যায়। আইনের সঠিক প্রয়োগ আর দায়িত্বশীলতা দেশে ন্যায় বিচার এনে দিতে পারে।
যুদ্ধই যদি বেচেঁ থাকা। তাই যুদ্ধ কে ভয় পেতে নেই।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:০১