মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি চরম দারিদ্রের মধ্যে থেকেও সাহিত্য কর্মকেই জীবন ও জীবিকার একমাত্র অবলম্বন হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। প্রকৃত নাম প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। মানুষের অবচেতন মনে যে নিগুড় রহস্যলীলা প্রচ্ছন্ন থাকে তার নিপুণ বিশ্লেষণ উপস্থাপিত হয়েছে তাঁর লেখায়। তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ’পদ্মা নদীর মাঝি ’। ষাটটি গ্রন্থ ও অসংখ্য অগ্রন্থিত রচনার প্রণেতা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উল্লেখযোগ্য সাহিত্য কর্মগুলো হচ্ছে- জননী, দিবারাত্রির কাব্য, পুতুল নাচের ইতিকথা, চিহ্ন, চতুষ্কোণ, জীয়ন্ত, সোনার চেয়ে দামী ইত্যাদি। জীবনবাদী লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক। সাহিত্যই ছিল তাঁর উপার্জনের একমাত্র উপায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবী জুড়ে মানবিক মূল্যবোধের চরম সংকটময় মূহুর্তে বাংলা কথা-সাহিত্যে যে কয়েকজন লেখকের হাতে সাহিত্যজগতে নতুন এক বৈপ্লবিক ধারা সূচিত হয় মানিক বন্দোপাধ্যায় ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। বহু বিচিত্র অভিজ্ঞতার ভারে নুইয়ে পড়া মানিক পাঠককে তার অভিজ্ঞতার ভাগ দেয়ার জন্যই লেখা শুরু করেন। তার রচনার মূল বিষ্যবস্তু ছিল মধ্যবিত্ত সমাজের কৃত্রিমতা, শ্রমজীবী মানুষের সংগ্রাম, নিয়তিবাদ ইত্যাদি। ফ্রয়েডীয় মনঃসমীক্ষণ ও মার্কসীয় শ্রেনিসংগ্রাম তত্ত্ব দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন যা তার রচনায় ফুটে উঠেছে। জীবনের অতি ক্ষুদ্র পরিসরে মাত্র আটাশ বছরের সাহিত্যজীবনে রচনা করেন বিয়ালি্লশটি উপন্যাস ও দুই শতাধিক ছোটগল্প। তাঁর রচিত পুতুলনাচের ইতিকথা, দিবারাত্রির কাব্য, পদ্মা নদীর মাঝি ইত্যাদি উপন্যাস ও অতসীমামী, প্রাগৈতিহাসিক, ছোটবকুলপুরের যাত্রী ইত্যাদি গল্পসংকলন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলে বিবেচিত হয়। বাঙলা ছাড়াও তার রচনাসমূহ বিদেশী বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে। আজ এই কথাসাহিত্যিকের ১০৮তম জন্মবার্ষিকী। ১৯০৮ সালের আজকের ১৯ মে তিনি বর্তমান ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দুমকা শহরে জন্ম গ্রহন করেন। বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১০৮তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০১৬ সকাল ১০:৪৫