somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কণ্ঠশিল্পী, সংগীত পরিচালক ও অভিনেতা পঙ্কজ কুমার মল্লিকের ১১০তম জন্মবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা

১০ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


প্রখ্যাত ভারতীয় বাঙালি কণ্ঠশিল্পী, সংগীত পরিচালক ও অভিনেতা পঙ্কজ কুমার মল্লিক। পঙ্কজ মল্লিক নামে যিনি সমধিক পিরিচিত। বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের প্রথম যুগের এক অগ্রণী সংগীত পরিচালক ও নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী ছিলেন পঙ্কজ মল্লিক। শুরুটা মার্গ সঙ্গীত দিয়ে হলেও শেষটা কাব্য সঙ্গীতে রূপ লভ করে। পিতা মাতা দু'জনই ধর্মপ্রাণ লোক হওয়ায় বাড়িতে প্রায়ই বসত নামকরা ধর্মীয় সঙ্গীত শিল্পীদের আসর। সেখানে পঙ্কজ মল্লিক ধর্মভিত্তিক মার্গ সঙ্গীত তথা টপ্পা জাতীয় গান শিখতেন এবং গাইতেন। রবীন্দ্রসংগীতেও ছিলো তাঁর বিশেষ অবদান। সুমিষ্ট কণ্ঠের অধিকারী পঙ্কজ মল্লিক কোন এক সময়ে কণ্ঠে ধরণ করেন রবীন্দ্রসঙ্গীত, যা তাঁর পরবর্তী জীবনে প্রধান সম্পদ হয়ে দাঁড়ায়। মাত্র সতের বছর বয়সে এই তরুণের মনে বিশ্বাস জন্মেছিল যে, রবীন্দ্রনাথের গানে তাঁর ইহজনমের মুক্তি। সঙ্গীত জীবনের শুরুতে এমনও হয়েছে না জেনে রবীন্দ্রনাথের গানে নিজেই সুর করে গাইতেন। রবীন্দ্র সঙ্গীতের এই প্রখ্যাত শিল্পী ১০৫ সালের আজকের দিনে ভারতের মানিকতলায় জন্মগ্রহণ করেন। আজ তার ১১০তম জন্মবার্ষিকী। সঙ্গীতজ্ঞ পঙ্কজ মল্লিকের জন্মদিনে আমাদের শুভেচ্ছা।[/sb


১৯০৫ সালের ১০ মে উত্তর কলকাতার মানিকতলার কাছে চালতাবাগানের এক বৈষ্ণব পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন পঙ্কজ মল্লিক। তার পিতার নাম মনিমোহন এবং মাতা মনোমোহিনী। পিতা মাতা উভয়েরই সংগীতের প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল। দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেন পঙ্কজ কুমার। ভাগ্যক্রমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতুষ্পুত্র দ্বিপেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুত্র দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখার সুযোগও পেয়েছিলেন তিনি। অল্পকালের মধ্যেই পঙ্কজ কুমার রবীন্দ্রসংগীতের এক অগ্রণী শিল্পীর খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি যখন বঙ্গবাসী কলেজের ছাত্র তখন অনেক রবীন্দ্রসঙ্গীত তিনি শুদ্ধভাবে আয়ত্ত করেছিলেন। স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করেন পঙ্কজ মল্লিক। অর্থের লোভ এড়িয়ে শুধুমাত্র গানের পেছনে ছুটতে গিয়ে স্নাতক অর্জন হয়ে ওঠেনি তাঁর।


১৯২৬ সালে মাত্র আঠারো বছর বয়সে তিনি "নেমেছে আজ প্রথম বাদল" গানটি ভিয়েলোফোন কোম্পানি থেকে রেকর্ড করেন। ১৯২৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যাতেই পঙ্কজ কুমার মল্লিক জীবনে প্রথম বেতারে গাইলেন রবীন্দ্রনাথের দুটি গান 'এমন দিনে তারে বলা যায়/এমন ঘন ঘোর বরিষায়' আর 'একদা তুমি প্রিয়ে আমারি এ তরম্নমূলে/বসেছ ফুলসাজে সে কথা যে গেছ ভুলে। বস্তুতপক্ষে সে মুহূর্তটি থেকে সঙ্গীতকে জীবিকা করে জীবনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলো পঙ্কজের। জীবিকার তাড়নায় পিতার নির্দেশে পাটের দালালির উমেদার যুবক পঙ্কজ মল্লিক সেই দিন থেকে ১৯৭৫ সালের শেষ পর্যন্ত প্রায় আটচল্লিশ বছর কলকাতা বেতারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯২৭ সাল থেকে তিনি কলকাতার ইন্ডিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনে কাজ শুরু করেন। এই সংস্থা পরে অল ইন্ডিয়া রেডিও (এআইআর) (বর্তমানে আকাশবাণী কলকাতা) নামে পরিচিত হয়। এখানে তাঁর সহকর্মী ছিলেন রাইচাঁদ বড়াল। প্রায় পঞ্চাশ বছর তিনি আকাশবাণীকে সংগীতশিল্পী ও সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেন।


(পণ্ডিত জওহারলাল নেহেরুর সাথে পঙ্কজ মল্লিক)
রবীন্দ্রসংগীতকে জনপ্রিয় করে তোলার কাজেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ১৯২৯ সালের শেষের দিকে পঙ্কজ মল্লিক কলকাতা বেতারে সঙ্গীত শিক্ষার আসর নামে একটি অনুষ্ঠান পরিচালনা শুরু করেছিলেন। সঙ্গীত শিক্ষার আসরে তার সুর করা প্রথম গানটির গীতিকার ছিলেন অলক গঙ্গোপাধ্যায়। আর দ্বিতীয় গানটি ছিল কাজী নজরম্নল ইসলামের মোর ঘুম ঘোরে এলে মনোহর/নমো নম, নমো নম, নমো নম। সেই আসরে নজরুল, রবীন্দ্র সঙ্গীতসহ অতুল প্রসাদ, রজনীকানত্ম এবং দ্বিজেন্দ্র লালের গান শেখানো হতো। এছাড়াও তাঁর শিক্ষার সহস্রাধিক গানের তালিকায় ছিল পদকীর্তন, শ্যামাসঙ্গীত, পল্লীসঙ্গীত, দেশাত্মবোধক সঙ্গীত, আনুষ্ঠানিক গান, তুলসীদাস, সুর দাস, গুরুনানক, মীরাবাঈ প্রমুখের হিন্দী ভজন। তিনি রবীন্দ্রনাথের খেয়া কাব্যগ্রন্থের শেষ খেয়া কবিতাটিতে ("দিনের শেষে ঘুমের দেশে") সুরসংযোজন করে গেয়েছিলেন।


১৯৩১ সাল থেকে দীর্ঘ ৩৮ বছর পঙ্কজ কুমার বাংলা, হিন্দি, উর্দু ও তামিল চলচ্চিত্রে অবদান রাখেন। ১৯৩২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রলয়নাচন নাচলে যখন ও তোমার আসন শূন্য আজি তাঁর প্রথম রবীন্দ্রসংগীতের রেকর্ড। তিনি কুন্দনলাল সায়গল, শচীন দেব বর্মণ, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, গীতা দত্ত, আশা ভোসলে প্রমুখ সংগীত পরিচালক ও শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেছেন। ভারতের প্রথম যুগের ফিল্ম স্টুডিও নিউ থিয়েটার্সের সঙ্গে তিনি ২৫ বছর যুক্ত ছিলেন। চলচ্চিত্রে তিনি কুন্দনলাল সায়গল, প্রমথেশ বড়ুয়া ও কানন দেবীর মতো শিল্পীদের সঙ্গে অভিনয়ও করেন। নীতিন বসু ও রাইচাঁদ বড়ালের সঙ্গে তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রে নেপথ্য কণ্ঠসংগীতের প্রবর্তন করেছিলেন। সঙ্গীতে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৭০ সালে তিনি পদ্মশ্রী পদক লাভ করেন। এছাড়া ১৯৭২ সালে ভারতীয় চলচ্চিত্রে তাঁর অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ভারত সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র পুরস্কার দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে সম্মানিত করে।


(তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা ইন্দিরা গান্ধীর কণ্ঠে রবীন্দ্র সংগীত শুনছেন পঙ্কজ মল্লিক)
১৯৭৫ সালের সেপ্টেম্বরে আসরে শেখানো শেষ দুটি গান ও ছিল রবীন্দ্রসঙ্গীত। একটি হলো 'শেষ গানেরই রেশ নিয়ে যাও চলে/শেষ কথা যাও বলে/সময় পাবে না আর, নামিছে অন্ধকার, গোধূলিতে আলো-অাঁধারে/পথিক যে পথ ভোলে।' শেষ গানটি 'তোমার শেষের গানের রেশ নিয়ে কানে/চলে এসেছি। কেউ কি তা জানে/তখনো তো কতই আগাগোনা/নতুন লোকের নতুন চেনাশোনা/ফিরে ফিরে ফিরে আসার আশা/দ'লে এসেছি/কেউ কি তা জানে।' গানের শেষ কথাটি যে তার জীবনের কথা তা জানা গেল কলকাতা বেতার কেন্দ্রের তদানীনত্মন স্টেশন ডিরেক্টর ডিকে সেনগুপ্তের ৩ অক্টোবরের পত্রে। এই পত্রে সঙ্গীত শিক্ষার আসর পরিচালনা থেকে পঙ্কজ কুমার মল্লিককে অব্যাহতি দেয়া হয়। তবে প্রায় ৪৬ বছর মেয়াদকালে আসরটির সবচেয়ে বড় অবদান ছিল বিশুদ্ধ রবীন্দ্রসঙ্গীতের ব্যাপক প্রচার। পঙ্কজ মল্লিকের সঙ্গীত শিক্ষার আসরটি কেড়ে নেয়ার কয়েক মাস পরেই তাঁর ৪৪ বছর বয়সী অনুষ্ঠান 'মহিষাসুর মর্দিনী'ও রূঢ়ভাবে কেড়ে নেয়া হয়।


বেতার জগতের কর্তা ব্যক্তিদের বক্তব্য ছিল যে, বৃদ্ধ বর্গ পরিচালিত বেতারের শ্রেষ্ঠ দুটি অনুষ্ঠান একেবারেই একঘেয়ে হয়ে উঠেছে। এগুলো জনগণ আর শুনতে চাইছে না। অথচ বন্ধ অনুষ্ঠান প্রচারের দাবিতে মিছিল নেমেছিল কলকাতার রাস্তায়। একে কে দুট অনুষ্ঠান বন্ধ করার আঘাতটি সইতে পারছিলেন না পঙ্কজ মল্লিক। মহিষাসুর মর্দিনী বন্ধ করার পরদিন আক্রান্ত হলেন হৃদরোগে। চিকিৎসকের নির্দেশে থেমে যায় তাঁর গান গাওয়া। মৃত্যুৃর মাত্র সোয়া এক মাস আগে কোনমতে শেষ করতে পেরেছিলেন তাঁর স্মৃতিকথা। তার স্মৃতি কথা থেকে যানা যায় ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আমন্ত্রণে কয়েকজন খ্যাতিমান শিল্পীসহ পঙ্কজ মল্লিক বাংলাদেশে এসেছিলেন । বঙ্গবন্ধুকে তিনি তার সুরাশ্রিত কবিগুরুর দুটি রচনা 'ভগবান তুমি যুগে যুগে দূত পাঠায়েছ বারে বারে' এবং 'রুদ্র তোমার দারুন দীপ্তি এসেছে দুয়ার ভেদিয়া' গেয়ে টেপ করে উপহার দেন। যা ছিলো বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত প্রিয়। বঙ্গবন্ধু পঙ্কজ মল্লিকের দেওয়া সেই উপহার আবেগের সঙ্গে গ্রহণ করেছিলেন।


বাংলাদেশ সফরের ৪ বছর পরে ১৯৭৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিম বঙ্গের কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন এই কিংবদন্তি শিল্পী। আজ সঙ্গীতজ্ঞ পঙ্কজ মল্লিকের ১১০তম জন্মবার্ষিকী। প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী, সংগীত পরিচালক ও অভিনেতা পঙ্কজ কুমার মল্লিকের জন্ম দিনে আমাদের শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:৪১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

অদ্ভুতত্ব.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৩

অদ্ভুতত্ব.....

আমরা অনিয়ম করতে করতে এমন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, অনিয়মকেই নিয়ম আর নিয়মকে অনিয়ম মনে হয়। নিয়মকে কারো কাছে ভালো লাগে না, অনিয়মকেই ভালো লাগে। তাই কেউ নিয়ম মাফিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের কালো রাজনীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত অধ্যাপক ইউসুফ আলী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৫৮




অধ্যাপক ইউসুফ আলী মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন।

উনি ছিলেন বাংলার অধ্যাপক। ৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার সদস্য হন। ৬৫ সালে পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার দশটা ইচ্ছে

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩১



প্রত্যেক রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মনে হয়-
যদি সকালটাকে দেখতে না পাই। কেউ যদি জিজ্ঞেস করেন, পৃথিবীর সবচেয়ে বিস্ময়কর জিনিস কি? তাহলে বলব মানুষের বেচে থাকা। মরে গেলেই তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×