বাবার উপস্থিতি অনেক বেশি প্রয়োজন
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
বিশ্ব বাবা দিবস আসলে মনটা আরও একবার খারাপ হয়ে যায়। যাদের বাবা আছে তারা হয়তো কত মজা করবে-কিন্তু আমি? আমি কার সাথে মজা করব? নানা ব্যস্ততার মধ্যে হয়তোবা মসজিদে গিয়ে তার জন্য আল্লাহর কাছে অনেক দোয়া চাইবো। আমি অনেকটা কম বয়সেই বাবাকে হারিয়েছি। তখন সবে মাত্র ইউনিভার্সিটি প্রথম বর্ষে পড়ি। মধ্যবিত্তের সংসারে বেড়ে ওঠা এই আমি জানি বাবার কতটা প্রয়োজন। তবে বাবা দিবসে আমার কষ্ট নেই। আমার কাছে বাবা মৃত নন, সব সময় তিনি আছেন আমার মনের গহীনে, থাকবেন যতদিন আমি বেচে থাকবো। তবে এটা জানি বাবার উপস্থিতি একটি সংসারে অনেক বেশি প্রয়োজন।
সংসারে আমরা ছিলাম ৩ভাই, ৩বোন। আছেন মা। বড় ২ বোনের পড়াশোনা-বিয়ে দেওয়ার চিন্তা যেমন তার ছিল, একই চিন্তা ছিল সবাইকে নিয়েই। কির্মজীবনে একজন ম্যারেজ রেজিস্ট্রার ছিলেন তিনি। আমি বিশ্ববিদ্যালয় পড়া শেষ করে ভালো কিছু করবো হয়তো সে আশাও পোষণ করতেন তিনি।
আজ আমরা ৫ভাই-বোনই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নেওয়া। সরকারি-বেসরকারি চাকরি নিয়ে আছি ভালোই। ছোট ভাইটাও সিভিলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করছে। হয়তো আগের সেই টানাটানিও নেই। মা হয়তো সবকিছু মিলে টেনশনমুক্ত। কিন্তু দু:খ একটাই, বাবা তো এ ভালোটা দেখে যেতে পারলেন না।
২০০৩ সালের ৮ ই মে। বাবা ওইদিন সকালে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হলেন। নেওয়া হলো সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে। ডাক্তার পরামর্শ দিলেন ঢাকায় নিতে। খুব কম সময়ের মধ্যেই বাবাকে নিয়ে ঢাকার জাতীয় হ্রদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে রওয়ানা হলাম। মা, বড় ভগ্নিপতি আর আমি সাথে। মাঝে মাঝে বাবাকে নির্জীব হওয়া দেখছি কাছ থেকে। মনে হচ্ছে আর বুঝি বাঁচাতে পারলাম না। তার ওপর সাভারের পরবর্তী যানজটে আমরা আশা অনেকটা ছেড়েই দিচ্ছিলাম। বার বার মনে হচ্ছিল অ্যাম্বুলেন্সকে মনে হয় যেকোন সময় ঘুরে আবার বাড়ির দিকেই নিতে হবে। মা অঘোরে কাদছিলেন আর শেষ সহায় আল্লাহকে ডাকছিলেন।
৩টা নাগাদ পৌঁছলাম হ্রদরোগ গেটে। দ্রুত চিকিৎসা দিতে সবাই সহযোগিতা করলেন। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তাররা চেষ্টা করছেন। মা বাইরে। ভেতরে কম্পিউটার স্ক্রিনে বাবার হ্রদযন্ত্রের ক্রিয়া আমি দেখছিলাম। ডাক্তার যে ওষুধ আনতে বলছিল দ্রুত তা এনে দিচ্ছিলাম। সকলের প্রাণান্তকর চেষ্টার পরেও চোখের সামনে বাবাকে হারালাম। একই অ্যাম্বুলেন্সেই বাবাকে বাড়িতে নেওয়া হলো। পরদিন সকালে নামাজে জানাজা শেষে দাফন। সেই সব স্মৃতি আমাকে এখনও পিছু টানে। তবে নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে যাওয়া বাবার আদর্শকে লালন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি অবিরত।
* নূরনবী সিদ্দিক সুইন, সাংবাদিক,
ই-মেল: [email protected]
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?
সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী
বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন
=বেলা যে যায় চলে=
রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।
সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন