কোন ভূমিকা না দিয়ে, সরাসরি ঘটনায় চলে যাই:
সকালে একটা কাজে কোন এক কলেজে গিয়েছিলাম। কলেজের ব্যাংকে টাকা জমা দিতে গিয়ে চোখ আটকে গেল। টাকা জমাদানের রশিদের উপর লেখা, "শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ।"
আমার সমস্যা কোথায়, সেটা বোঝার সুবিধার্থে কথাটা অন্যভাবে বলিঃ
১। শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ, নিজাম উদ্দিনের বাংলাদেশ।
২। "শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ, মোদের প্রিয় বাংলাদেশ।"
৩। "শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ।"
৪। "শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ, লাখো শহীদের বাংলাদেশ।"
৫। "শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ, এগিয়ে যাক/স্বপ্নের এক বাংলাদেশ।"
......
একটু খেয়াল করে দেখুন তো, ২/৩/৪/৫ বাক্যটাতে একটা আবেগ কাজ করছে না। অথচ প্রথমটাতে কেমন একটা রাগ কাজ করছে(মানে, আমি শিক্ষা নিয়ে নিজামের দেশ গড়বো কেন?)।
"আমার বাংলাদেশ"/"আমাদের বাংলাদেশ" বললে আমাদের মধ্যে একটা দেশপ্রেম কাজ করে। কিন্তু "নিজামের বাংলাদেশ" বা "উমুকের বাংলাদেশ" বললে দেশপ্রেমের পরিবর্তে, ঐ নামটার মধ্যে একটা স্বৈরাচারী মনোভাব প্রকাশ পায়।
আচ্ছা?
এরপর অন্যকেউ প্রধানমন্ত্রী হয়ে যদি তার নাম লিখে? মানে,
"শিক্ষা নিয়ে গড়বো দেশ, বেগম জিয়া/জয়/তারেকের বাংলাদেশ।"
তখন কেমন লাগবে?
আমার তো রাতে ঘুম হবে না।
এখন প্রশ্ন আসে, দেশটা আসলে কার?
উত্তরটা যুক্তি দিয়ে দেই,
সংবিধানের প্রস্তাবনা
"আমরা, বাংলাদেশের জনগণ, ১৯৭১ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়া [জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রামের] মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি।.... "
প্রথম ভাগ: প্রজাতন্ত্র
১৷ বাংলাদেশ একটি একক, স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র, যাহা “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ” নামে পরিচিত হইবে৷
সংবিধানের প্রাধান্য
৭৷ (১) প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ; এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে৷
(২) জনগণের অভিপ্রায়ের পরম অভিব্যক্তিরূপে এই সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন এবং অন্য কোন আইন যদি এই সংবিধানের সহিত অসমঞ্জস হয়, তাহা হইলে সেই আইনের যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হইবে৷
সংবিধানের অনুচ্ছেদগুলো আলাদাভাবে আর ব্যাখ্যা করলাম না। ব্লগের সবাই শিক্ষিত। আপনারা মনদিয়ে দুবার পড়লেই বুঝতে পারবেন। আবার চাঁদগাজীর মত বলেন না, ড. কামাল হোসেন সংবিধান লিখতে ভুল করেছেন/ম্যাওপ্যাও কিছু লিখেছেন।
এসব উল্টাপাল্টা কথা শুনলে/দেখলে মেজাজ আমার গরম হয়। সেটা ব্লগেই হোক বা কোন কলেজে.....
সারমর্মঃ
হাসিনা আপা যতই দেশ প্রেমিক হোক, এভাবে নামটা লেখা ঠিক হয় নি(অন্তত আমার কাছে)। কেউ দেশের জন্য কাজ করলে, এমনিই তার নাম লেখা থাকবে। মানুষ মনে কারো নাম লিখতে কি খাতা কলমের দরকার পড়ে?
প্রথম ছবি দেবার কারণ, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া এ দেশ আমাদের সবার। এদেশ কোন নেতা, দল বা গোষ্ঠির একার নয়।(না বুঝলে আবার পড়েন)
দ্বিতীয় ছবি দেবার কারণ, শেখ সাহেব আমার পছন্দের নেতা। দেশকে নিয়ে উনার যে প্ল্যানগুলো ছিল, সেসব আমার পছন্দ। (আপার উপর রাগের কারণ: শেখ হাসিনা নামেই শেখের বেটি। উনার দেশ পরিচালনার সিস্টেম আমার পছন্দ নয়।)
বি. দ্র.: প্রতিউত্তরে দেরী হবে....
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৮:২৮