।। ১ ।।
নরকে বিরাট হুলস্থূল শুরু হইয়াছে। এমনিতেই ড্রীংকসের বদলে গরম পুঁজ আর তিনবেলা মুগুরের বাড়ি খাইতে খাইতে সকলের অবস্থা শোচনীয়। এরি মাঝে আজ যমদূতের স্পেশাল ফোর্স নরকের অলি গলি সার্চ করিতেছে। অন্ধকারের রাজত্যে হঠাৎ আসমানী টর্চলাইট লইয়া উপস্থিত হওয়া অনাহুত অতিথিগণকে কেহ সহ্য করিতে পারিতেছে না। আবার কিছু বলিতেও পারিতেছে না। শুধু খাওয়ার উপরেই থাকা নরকবাসী প্রতিবাদ করিয়া বঙ্গরাজ্যের কামাল সাবানের বিশেষ ধোয়া খাইতে চাহে না। ঘটনা হইল গতকাল হইতে রাহি নিখোঁজ। তাঁহার শাস্তির মেয়াদ শেষ হইয়া গিয়াছে। অবিনশ্বরের কাছে হাজিরা দিয়া এতক্ষণে তাঁহার লুঙ্গী কাচা মারিয়া হুর পরীর উপরে ঝাঁপাইয়া পড়িবার কথা। কিন্তু গর্দভটা নরক ছাড়িয়া যাইতে চাহে না। কহে নরকের সহিত তাঁহার ভালোবাসার বঙ্গরাজ্যের কোনো তফাৎ নাই। উহার লাগিয়া দেশমাতৃকার প্রেমে মত্ত গর্দভটা নরকেই তাঁহার আবাসস্থল বানাইবার স্বপন দেখিতেছে। অবিনশ্বরের আদেশ অমান্য করিয়া কোথা জানি লুকাইয়া রহিয়াছে কেহই জানে না।
অবশ্য তাঁহার কথা সত্য। বঙ্গরাজ্যের সহিত নরকের তেমন কোনো পার্থক্য নাই। যেমন বঙ্গের দুই রাণী এবং তাঁহাদিগের মুরিদ বাহিনীও নরকে অবস্থান করিতেছেন। অবস্থান করিতেছে আজম-সাঈদিগং। দুই রাণী অবিনশ্বরকে স্বৈরাচার উপাধীতে ভূষিত করিয়া নরকের মাঝারে গণতন্ত্র প্রতিষ্টায় ব্যস্ত। যখন তাঁহারা তাঁহাদিগের জবান খুলেন... নরককে মনে হয় পল্টনের ময়দান! আজম-সাঈদিগং এর ভাবসাবও সুবিধার নহে। অর্ধদিন এক রাণীর প্রাসাদের সম্মুখে ঝিম ধরিয়া বসিয়া থাকে, অবশিষ্ট অর্ধদিন মগবাজারীয় শাসনের উপকারীতা বর্ননা করিয়া লিফলেট বাটে!
আইন শৃঙ্খলার অবস্থাও খারাপ। একদিকে মিছিল মিটিং, জ্বালাও পোড়াও অন্যদিকে কিছুক্ষণ পর পর যমদূতের ধবল ধোলাই খাইতে খাইতে নরকবাসীর প্রাণ উষ্ঠাগত! সকলে প্রতীক্ষায় রহিয়াছে কবে যে মুক্তি পাহিবে নরক হইতে! আর গর্দভ রাহি নরকে রাজপ্রাসাদ বানাইবার স্বপন দেখিতেছে!
তাঁহার জন্য করুণা!
**
জনপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক দোযখে হাভিয়ার আজিকার প্রধান শিরোনাম ''অবশেষে রাহি গ্রেফতার। অবিনশ্বর তলব করিয়াছেনঃ যমদূত''
***
আরশে হেলান দিয়া উদাস সুরে অবিনশ্বর কহিলেন কহো কেন পলাইতেছিলে?
মস্তক নিচু করিয়া রাহি কহিল হে অবিনশ্বর একটি স্বপ্ন মোরে সর্বদা তাড়া করে!
-কি সেই স্বপ্ন?
একদা মোদের দুই রাণী একত্রিত হইয়াছিলেন রাজ্যরক্ষার্থে। রক্ষাও করিয়াছিলেন। আবার খোয়াইয়াও ছিলেন!!
-খোয়ানো মতলব?
হতাশা মিশ্রিত সুরে রাহি কহিল একজন গড়িয়াছিলেন বলদের আশ্রম, আরেকজন বরাহ্ছানার খামার। ফলাফল বঙ্গরাজ্য ভরিয়া গিয়াছিল বরাহ্ছানার মল মূত্রে। উহা পরিষ্কার না করিয়া বলদগণ ব্যস্ত থাকিল বলদামিতে! রচনা হইল এক কবরের। বঙ্গরাজ্যের কবর!
বিরক্ত হইয়া অবিনশ্বর কহিলেন তোমারে ইতিহাস ঘাটিতে কহি নাই! কহো স্বপ্ন কি?
মস্তক উচু করিয়া অবিনশ্বরের পানে চাহিয়া ভরাট গলায় রাহি কহিল হে অবিনশ্বর স্বপ্ন হইল এইবার হয়তো দুই রাণী ভুল করিবেন না। নষ্ট করিয়া ফেলিবেন বরাহ্ ছানার প্রজনন ক্ষমতা! বসিবে না গদিতে কোনো বলদ! থাকিবে না কোনো রক্তকলংক! থাকিবে না উপোস কোনো সোনাবারু!
ভ্যাবাচ্যাকা খাইয়া অবিনশ্বর কহিলেন এন্টেনা জনিত সমস্যা! বুঝিলাম না!
দন্তের ঝিলিক দেখাইয়া রাহি কহিল নরক স্বাধীন হইবার পথে!
**
দুই পা রশিতে বাঁধিয়া রাহিকে বিশেষ কায়দায় লটকাইয়া রাখা হইয়াছে। এমনরুপে রাখা হইয়াছে যাঁহাতে সকল নরকবাসী শাস্তি প্রত্যক্ষ করিতে পারে। একদল দেবদূত বেসবল ব্যাট হাতে দফারফা করিতেছেন। শাস্তির কারন অবিনশ্বরের সহিত বেয়াদবী। রাহির শাস্তি নরকের আন্দোলনে জোয়ার আনিয়াছে। চারিদিকে মিছিল মিটিং, রাহি মুক্তি পরিষদ খোলা হইতেছে। ভালো লক্ষণ। সমস্যা হইলো দুই রাণী রাহিকে তাঁহাদিগের মুরিদ বলিয়া দাবী করিতেছেন!
এই দুই বেটি অতীত হইতে শিক্ষা লয় নাই!!