সদ্য পার হওয়া ২০০৮ সাল বলিউডের এমন কিছু মুভির সাক্ষী হয়ে রয়েছে, যেখানে অপ্রত্যাশিতভাবে মুভিটি হয়েছে হিট এবং তার মধ্যে রয়েছে ডেবুট্যান্ট ডিরেক্টরদের জয়জয়কার।
১. জানে তু.. ইয়া জানে না
এই মুভিটির সাফল্য কোন একক কৃতিত্বে নয়, বরং এসেছে একটি টিমওয়ার্ক হিসেবে। যদিও মুভিতে আমির খানের ভাগ্নে ইমরান খানের ডেবু হয়েছে, কিন্তু রিলিজের পর শুধু ইমরান আর জেনেলিয়া ডি সুজা নয়, তাদের পুরো বন্ধু গ্রুপ জি¹ি, শালিন, রতলু ও বোম্বসও হিট হয়েছে। প্রডিউসার আমির খানকে যোগ্য সমর্থন দিয়েছেন ডেবু ডিরেক্টর আব্বাস টায়ারওয়ালা। তবে এ আর রহমানের ডান্স ট্রাক পাপ্পু কান্ট ডান্স সালা পুরো ইনডিয়াকেই ডান্স করিয়েছে। মুভিটি অনেককেই তাদের কলেজ লাইফের স্মৃতিতে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে।
রেজাল্ট: ২০০৮ এর অন্যতম সুপারহিট এবং ব্যবসা সফল মুভি। পাশাপাশি সুপারহিট মিউজিক উপহার দিয়েছেন মিউজিক মিউজিশিয়ান এ আর রহমান।
২. রক অন!!
প্রডিউসার, ডিরেক্টর ও রাইটার হিসেবে নিজের যোগ্যতার প্রমান এর আগে ভালোভাবেই দিয়েছেন ফারহান আখতার। বাকি ছিলো অ্যাক্টর ও সিংগার হিসেবে কিছু করা; আর সেটিই তিনি পূর্ণ করলেন এই মুভিটির মাধ্যমে। নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে ভেঙে যাওয়া একটি রকব্যান্ড-এর নিজের অস্তিত্ব ফিরে পাবার ইমোশনাল কাহিনী। মজার বিষয় রিলিজের আগে তেমন আলোচিত না হওয়া শংকর-এহসান-লয় ত্রয়ীর মিউজিক পরে সুপারহিট হয়, ফলে এখন আয়োজিত হচ্ছে রক অন ফর হিউম্যানিটি কনসার্ট। ফারহান আখতার ছাড়াও প্রশংসা পেয়েছেন অর্জুন রামপাল, পূরব কোহলি, লুক কেলি ও ডেবুট্যান্ট প্রাচী দেশাই।
রেজাল্ট: সুপারহিট এবং একটি লং টাইম মেমরেবল হার্ট-টাচিং মুভি। বাম্পার ব্যবসা করেছে মুভিটি।
৩. এ ওয়েডনেজডে
২০০৮ সালে হাইজ্যাক, ব্লাক অ্যান্ড হোয়াইট, মুম্বাই মেরি জান, আমির ইত্যাদির মতো টেরোরিজম বেসড্ মুভি রিলিজ হয়েছে। এদের থেকে এই মুভিটির পার্থক্য হলো, এখানে দেখানো হয়েছে একজন ব্যক্তির হতাশা ও ভেতরকার অনুভূতি, যিনি কিনা টেররিস্ট অ্যাটাক দ্বারা অ্যাফেক্টেড হয়েছেন। হিরো হিসেবে খান বা কাপুররা ছাড়াও যে মুভি সফল হতে পারে, তা প্রমাণ করেছেন অভিজ্ঞ অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ ও অনুপম খের মিলে। ডেবুট্যান্ট ডিরেক্টর নীরাজ পান্ডে ক্রিটিকস ও দর্শকদের কাছ থেকে বিপুল প্রশংসা পেয়েছেন।
রেজাল্ট: সপ্তাহের প্রতিটি দিনই বক্স-অফিসে নিজের প্রভাব রেখেছে এই মুভিটি। ব্যবসাসফল মুভি।
৪. জান্নাত
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, ইনডিয়ান লোকেরা ক্রিকেট ও ফিল্মের খুব ভক্ত। আর সেই কারণেই হয়তো মুভির প্রডিউসার মুকেশ ভাট চেয়েছিলেন পিক আওয়ারে কিছু এক্সট্রা ক্যাশ কামিয়ে নিতে। মুভিতে কিস-মাস্টার ইমরান হাশমি একজন শর্ট-টাইম গ্যাম্বলার হিসেবে অভিনয় করেন, যে কিনা একজন হাই-প্রোফাইল বুকি হিসেবে ক্রিকেট ওয়ার্ল্ডকে কন্ট্রোল করতে চায়। ডেবুট্যান্ট ডিরেক্টর কুনাল দেশমুখ নিজেও একজন ক্রিকেট ফ্যানাটিক এবং তিনি তার হোমওয়ার্কও ভালোই করেছেন। একই সাথে নবাগতা সোনাল চৌহানও দেখিয়েছেন যে, সুন্দর চেহারা ও আকর্ষণীয় ফিগার ছাড়াও অভিনয় করার যোগ্যতাও তার রয়েছে।
রেজাল্ট: আইপিএল জ্বরের সময় মুভিটি রিলিজ পায় এবং মুভিটিতে ইমরান হাশমি কিস দেবার তেমন সুযোগ না পেলেও এটি হিট হয়ে বিপুল অর্থ আয় করে।
৫. আমির
শাহরুখ খানের মতো খুব অল্প কিছু অভিনেতাই ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দায় এসে সাফল্য পেয়েছে। তাই প্রডাকশন হাউজ ইউটিভি যখন ডেবুট্যান্ট ডিরেক্টর রাজকুমার গুপ্তা ও টেলিভিশনের ওয়ান্ডারবয় রাজিব খান্দেলওয়ালকে নিয়ে মুভি করার পরিকল্পনা করে, তখন অনেকেই বিষয়টিকে আমলে আনেনি। কিন্তু বক্স-অফিস যে আনপ্রেডিকটেবল! মুভিতে রাজিব একজন মিডল-ক্লাস মুসলিম হিসেবে অভিনয় করেন, যিনি অজান্তে একটি টেররিস্ট প্লানের শিকার হন। রিলিজের পর ক্রিটিকস ও দর্শকের প্রশংসা অজর্ন করে মুভিটি।
রেজাল্ট: মুভিটি ইউটিভি-র জন্য একটি প্রফিটেবল ভেঞ্চার বলে বিবেচিত হয় এবং ছোট পর্দাও হয়তো সামনে এগিয়ে যাবার মতো একজন অ্যাক্টর রাজিবকে বড় পর্দাকে উপহার দিলো।
৬. ফুঁক
তার গত কয়েকটি প্রজেক্ট তেমন বলার মতো সাফল্য পায়নি, কিন্তু ডিরেক্টর রাম গোপাল ভার্মাকে আবার আলোচনায় এনে দিলো তার এই লেটেস্ট মুভিটি। মুভি রিলিজের আগে কেউ এটিকে পাত্তাই দেয়নি; তাছাড়া এর কাস্টিং ছিলো একেবারে নতুন! কিন্তু রিলিজের প্রথম শো থেকেই ব্লাক ম্যাজিক থিমের ওপর মুভিটি দিনে দুপুরে দর্শকের ওপর ম্যাজিক চালিয়ে ভয় পাইয়ে দিয়েছে। ভালো স্ক্রিপ্টের ওপর যোগ হয়েছে সবিতা সিংয়ের অসাধারণ সিনেম্যাটোগ্রাফি।
রেজাল্ট: অভিনেতা-অভিনেত্রী ও ক্রুদের আন্তরিক প্রয়াস ও ভালো মার্কেটিং পলিসিতে সারপ্রাইজ সাকসেস পায় মুভিটি।
পুনশ্চ: লেখাটি আজ যায়যায়দিন-এ প্রকাশিত হয়েছে;
(Click This Link)।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ২:১৫