somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একাকী ল্যাম্পপোস্টের সাথে কিছুক্ষণ: দ্বিতীয় পর্ব

১৫ ই মে, ২০২০ রাত ১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয় সুহৃদ, আপনি গল্পটি একবার পড়তে শুরু করুন, শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ত্ব কিংবা ব্যর্থতা আমার
দ্বিতীয় পর্ব: 'একাকী ল্যাম্পপোস্টের সাথে কিছুক্ষণ !'
এপ্রিল ২৯, ২০২০, আলুপট্টি, সাহেব বাজার, রাজশাহী।


রাত এখন সবে ১০:৩০ মিনিট। অথচ শহরের ব্যস্ততম এই মোড়ের নীরবতা দেখে মনে হচ্ছে এখানে রাত এখন শুধু গভীরই নয়, দ্বিপ্রহর! পিনপতন নিরবতা। ঐ যে দূরে এ গলির শেষ মাথায়, যেখানে চারটি রাস্তা পরস্পর মিলেছে, কেবল একটি অত্যাধুনিক এলইডি ল্যাম্প পোস্ট দশ দিক আলো করে ঠায় দাড়িয়ে আছে। কোন মানুষের চিহ্ন পর্যন্ত নাই। বাসা থেকে বের হতেই দেখি লালু নামের সেই কুকুরটি বাসার বাইরে বসে আছে। আমার উপস্থিতি টের পেয়ে, লাফ দিয়ে দাড়িয়েই গা টা ঝাড়া দিয়ে নিল। লালুর সাথে হাটা দিলাম মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থাকা ৫৬ ফুট উচ্চতার সেই ল্যাম্পপোস্ট বরাবর। মাস্তুল আকৃতির মজবুত পোলের ওপর রিং বসিয়ে তার চতুরদিকে উচ্চমানের এলইডি লাইট বসানো হয়েছে। আলুপট্টি মোড়, সাহেব বাজার, রাজশাহী।

-- লালু, পৃথিবীতে দিক কয়টি বলতে পার? চারটি নাকি দশটি?
- মোটা ভাই, দিক তো মোটে চারটি। সামনে, পেছনে, ডানে আর বামে।
-- হাসলাম। ভালই বলেছ। মানুষের অবস্থাও বিশেষ সুবিধার না। দশ দিক বলার পর নিজেই কনফিউসড হয়ে গেছিলাম। দশ দিক? ঠিক বললাম? দিক আবার দশটা কোথায় থেকে আসলো দিক তো চারটি; পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর আর দক্ষিণ। তারপর মনে পড়লো উপর আর নিচ। বাকি আরো চার টা? ভাগ্যিস আমার পড়াশুনা এ প্লাস আর গোল্ডেন এ প্লাস যুগের আগে নইলে হয়তো দশটা মিলাতেই পারতাম না।

এখনকার যুগ হয়ে গেছে শর্টকার্ট এর যুগ। এখন আমরা বুক কম, ফেসবুক বেশি পড়ি। তাও আবার ফেসবুক ওয়ালে কোনোকিছু পড়তে গেলে আগে দেখে নেই, কত বড়? তিন লাইনেই পুরো গল্প পড়ে ফেলতে চাই। স্ট্যাটাস আপডেট। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাই, পড়ার আসল মজাটা অনাবিষ্কৃত-ই রয়ে যায় আজকের প্রজন্মের কাছে।

দুজনে হাঁটতে হাঁটতে আলুপট্টি মোড়ের ল্যাম্পপোস্ট টির ঠিক গা ঘেঁষে দাড়াতেই, লালু বল্ল:
- মোটা ভাই, আপনি এখানে লম্বু'র সাথে গল্প করেন, সামনের মোড়ে কিছু কুকুর অকারণে জটলা করছে, আমি একটু দেখে আসি।

-- তোমার নামটা তো জটিল হয়েছে। 'লম্বু'
- জি, আমি রাস্তার ল্যাম্পপোস্ট। আমাদের তো আর মানুষের মতো নানান ধরনের নাম হয় না। তাছাড়া, এই মোড়ে আমিই সব চাইতে লম্বা কিনা, তাই এ তল্লাটের সবাই আমাকে লম্বু বলে ডাকে। লালু একদিন বলছিল, আপনাদের সমাজেও নাকি কম গুরুত্বপূর্ণ লম্বা মানুষ দের অন্যরা এই রকম নামেই ডাকে। এই শহরে আমরা যে ১৬ জন সম্প্রতি যুক্ত হয়েছি, টাকায় আমাদের মূল্য অনেক হলেও আমাদের সমাজে অর্থাৎ মানুষ ছাড়া বাকি আর সবার কাছে আমাদের গুরুত্ব বোধ হয় নিতান্তই কম। সে কারণে এরা আমার নাম দিয়েছে লম্বু '। মূলত শহরের একটা ল্যাম্পপোস্ট থেকে আরেকটা ল্যাম্পপোস্ট এর কোন পার্থক্য নেই। পার্থক্য কেবল একটা জায়গায়। বলেন তো মোটা ভাই পার্থক্যটা কোথায়?

-- এই ধরনের একটা প্রশ্নের জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। তাই
মুহুর্তের জন্য আমার মুখেও কথা সরছিল না।

: আমার নিরবতা দেখে সে নিজেই বলে চলল। একটু খেয়াল করলেই বুঝবেন, উত্তরটি খুব সহজ। প্রতিটি ল্যাম্পপোস্টের ই আছে এক একটি গল্পের ঝুড়ি, তাতে শত শত গল্প, থরে থরে জমানো। কিন্তু প্রত্যেকের সংগ্রহ ই আরেক জনের থেকে আলাদা, স্বতন্ত্র। প্রত্যেকেই আমরা প্রতিদিন নীরব দর্শকের মতো শত শত নতুন নতুন গল্পের সাক্ষী হই। আমাদের গল্পগুলো আবর্তিত হয় আপনাদের মত ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের নিয়ে। আর তাই একেক জন ল্যাম্পপোস্টের ঝুড়িতে জমা থাকে একেক রকম গল্প। এই একটা জায়গাতেই কেবল আমরা একে অন্যের থেকে আলাদা।
- ঠিক বলেছ। আমরা তো দেখি সমান্তরালে কিন্তু তোমরা দেখো ওপর থেকে যাকে আমরা বলি 'বার্ডস আই ভিউ'। কিন্তু তুমি আমার এই বিশেষ নামটি জানলে কেমনে ?

: লম্বু সশব্দে হেসে উঠলো! আপনার নাম জেনেছি লালুর কাছ থেকে। ও তো সারারাত আমার গা ঘেঁষে ই শুয়ে থাকে। ওর কাছ থেকে আপনার অনেক গল্প শুনেছি। ইনফ্যাক্ট এই মোড়ের আরো অনেকের ব্যাপারেই তার কাছ থেকে জেনেছি। ও তো আর আমার মত নিশ্চল নয়। সারাক্ষণ ছুটে বেড়ায় এ মাথা থেকে ও মাথা। তারপর ক্লান্ত শরীরে ফিরে এসে আস্তানা গাড়ে আমার পায়ের কাছে। তারপর শুরু হয় ওর বকবকানি। ওর বকবকানি থেকে একটা জিনিস বুঝেছি, একটা মানুষ আরেকটা মানুষকে যতটা না চেনে তার চেয়ে ঢের বেশী চেনে একটা রাস্তার কুকুর। আপনারা একজন মানুষ আরেকজন মানুষের সাথে বছরের পর বছর একই ছাদের নিচে বসবাস করেও চিনতে পারেন না অথচ আমরা কয়েকদিনের দেখাতেই সব বুঝে ফেলি, আপনাদের ভাষায় চিনে ফেলি। বলেন তো মোটাভাই কেন আমাদের দ্বারা এটা সম্ভব হয়?

-- না লম্বু! তোমার ঝড়ো ব্যাটিং এর সামনে আমার কোন বলই আজকে টিকতে পারবে না। আজকের দিনটি কেবলই তোমার। তাই উত্তরটি তুমিই দাও?
: লম্বু আবার হাসল। তার হাসির দমকে চারপাশ জুড়ে আলোর ঝলকানি খেলে গেল! আপনারা না মানুষ, সৃষ্টির সেরা জীব! ওর টিপ্পনী টি গায়ে কাঁটার মতো বিঁধলো। ওর কথাগুলোও ওর লোহায় পেটানো শরীরের মতোই শক্ত।
- ওর কথাগুলো যতই শুনছি, নিজের কানকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। কি সূক্ষ্ম জীবন দর্শন। অথচ সে রাস্তার একটি ল্যাম্পপোস্ট। চারিদিকে আধা কিলো পর্যন্ত সে তার দৃষ্টির সীমানা বরাবর আলো ছড়িয়ে রেখেছে। সে তার অত্যাধুনিক এলইডি আলোকছটায় দশদিক আলোকিত করে রেখেছে অথচ রাস্তায় কোন মানুষের চলাচল নেই। এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখলাম গোটাকয়েক সিকিউরিটি নিজ নিজ এটিএম বুথের সামনে গুটিসুটি মেরে বসে আছে।

: আমি ল্যাম্পপোস্টের গায়ের সাথে হেলান দিয়ে মাঝ রাস্তা বরাবর আইল্যান্ডের উপর বসা। সে বলে চলেছে, এ সমাজের বেশিরভাগ মানুষ হলো গিরগিটির ন্যায়। প্রতিনিয়ত খোলস পাল্টায়। এবং সেটি এমন সতর্কতার সাথে করে যেন কোনভাবেই আর একজন মানুষ দেখতে না পায়। মানুষ ধরেই নিয়েছে, একমাত্র মানুষ ছাড়া তার চারপাশে থাকা বাকি জীব-জন্তু-ইট-কাঠ আর আমার মত ঠায় দাড়িয়ে থাকা ল্যাম্প পোস্টের জানা না জানায়, দেখা না দেখায় মানুষের কিছুই যায় আসে না। মূলত সেই কারণেই, আমরা মানুষের আসল রূপটা সহজেই দেখতে পায় কিংবা বলা যায় মানুষ সহজেই তাদের আসল রূপটা নিজের অজান্তেই মেলে ধরে আমাদের সামনে। কিন্তু আপনারা একজন মানুষ আর একজন মানুষের প্রকৃত রূপটা সহজে দেখতে পান না। এমনকি দীর্ঘদিন একই ছাদের নিচে থেকেও একজন আর একজনকে চিনতে পারেন না, দেখতে পান না তার ভেতরের প্রকৃত মানুষটিকে।

- লম্বু, একটা ব্যাপার খেয়াল করেছ? এখনকার সন্ধ্যাগুলো। মুহূর্তেই সন্ধ্যা গড়িয়ে এই শহরের রাস্তায় রাস্তায় মোড়ে মোড়ে অলিতে-গলিতে নেমে আসে গভীর রাত ।

: ঠিকই বলেছেন, মোটা ভাই! একটা সময় ছিল যখন এই মোড়ে সন্ধ্যা হতো সূর্যের ইশারায়। কিন্তু এখনকার সন্ধ্যাগুলো একেবারেই অন্য রকম। ঘড়ি ধরে ঠিক ছয়টার কাটায় যেন থমকে আছে এখনকার সন্ধ্যাগুলো। আজ থেকে মাস দুয়েক আগেও এখানে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতো, সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত; অতঃপর রাতগুলো গভীর থেকে গভীরতর হতো। একই সমান্তরালে মানুষের কোলাহল আর ব্যস্ততা কমতে কমতে রাত দ্বিপ্রহর হলে, তবেই রাস্তাঘাট মানুষের দাপাদাপি থেকে মুক্তি পেত। অথচ এখন ঘণ্টার কাটা ৬টা পেরিয়ে কিছু পথ পেরুলেই রাত দ্বিপ্রহর।

- লম্বু! অসাধারণ তোমার দেখার ভঙ্গি। কি আর করা বল, বেঁচে থাকার সংগ্রামে, এটাই এখন নিয়ম। এমন বিভীষিকাময় পরিস্থিতি কেবল ইংরেজি সাইন্স ফিকশন মুভিগুলোতেই ছিল এতদিন। অথচ এখন সেটা চলমান বর্তমান। পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকা মানুষগুলো সাক্ষী হচ্ছে কল্পনাতীত একটা সময়ের।

: মোটা ভাই, মানুষ না হওয়ায় নিজেকে বেশ ভাগ্যবান মনে হয়। আমি রাস্তার ল্যাম্পপোস্ট । আমার না আছে অতীত না আছে ভবিষ্যৎ। আমি থাকি বর্তমান নিয়ে। কিন্তু করোনা নামের ভাইরাসের থাবায় আমাদের সেই বর্তমানও হয়ে গেছে একেবারেই প্রাণহীন। এখন সারাটাদিন কাটে উৎকণ্ঠা আর দুশ্চিন্তা ভরা একঘেয়েমিতে। যদিও তাতে করে কারো কিছু যায় আসে না।

- তো, তোমার উৎকণ্ঠা আর দুশ্চিন্তা কি নিয়ে?

: মানুষ, মোটা ভাই, মানুষ! এই আলুপট্টির মোড় কে ঘিরে, এই মোড়ের ' কিছু সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ ' কে ঘিরে আমার যত দুশ্চিন্তা!

এই মোড়ে বেশ কয়েকটি চায়ের দোকান আছে। তারা সকলেই দিন আনে দিন খায়। এমন হঠাৎ করে দেশজুড়ে আঁধার নেমে আসবে এইটা বোঝারও তারা সুযোগ পায়নি। আজকে দেড় মাস থেকে তাদের আয় রোজগার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ। তাদের সম্বল বলতে ওই ছোট্ট একটি অস্থায়ী টং দোকান আর মাথার উপরে আপনার দেয়া একটি ছাতা। ওদের ইদানিং প্রায়ই দেখি মলিন মুখে দোকানের আশপাশ দিয়ে ঘোরাফেরা করতে। অভাব তাদের চোখে মুখে স্পষ্ট। তাদের দেখে আমার লোহায় পেটানো বুকের মধ্যেও হু করে ওঠে!

: এই মোড়ে একটা বোবা ডাব বিক্রেতা আর তার বউ মিলে ডাব বিক্রি করতো, একটা ভ্যান গাড়ির উপরে। বউটা যখন শাড়ির আঁচল দিয়ে বোবা জামাইটার কপালের ঘাম মুছে দিত, আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে দেখতাম। স্বল্প আয়, তবুও তাদের ঘরে সুখ ছিল। জানি না কিভাবে তাদের দিন কাটছে।

: পান সিগারেট বিক্রেতা, বাদাম আর চটপটি বিক্রেতা সকলের বাড়িতেই আজ রাজ্যের অন্ধকার। আর আমি একা ঠায় দড়িয়ে আছি আলোর পসরা সাজিয়ে। তাহলে কিভাবে ভাল থাকি বলেন। এই মোড়ের ছোট ছোট দোকানিরা, আজ না পারছে কারো কাছে সাহায্য চাইতে, না তাদেরকে কেউ টাকা ধার দিবে। সমাজের অসহায় গরিব মানুষের তালিকাতেও তারা নেই। অন্ধকার যখন আসে তখন চারপাশ জুড়েই আসে।
: এ মোড়ের নিম্ন আয়ের মানুষ গুলোর মাঝে কিছুটা স্বস্তিতে আছে, গরিব ভিক্ষুকগুলো। কেননা তাদের গায়ে ভিক্ষুকের ট্যাগ লাগানো আছে। ফলে ত্রাণ বিতরণকারীদের তালিকায় তারা নিশ্চয় আজ সবার ওপরে।

: রাত যখন গভীর হতো, ঠোঁটে সস্তা লিপিস্টিক এর গাঢ় রং চড়িয়ে দু তিনটে মেয়ে এই গলির অন্ধকারে মিশে দাড়িয়ে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতো সমাজের নষ্ট মানুষ গুলোর জন্য। ওরা প্রতিদিন নিজেকে বিক্রি করে পেটের ক্ষুধা মিটাতো। কথাগুলো বলতে গিয়ে লম্বু র গলা ভারী হয়ে আসছে। আমাদের সমাজের সব চেয়ে কঠিন কাজ হলো: " নিজের পেটের ক্ষুধা মেটাতে অন্যের মনের ক্ষুধা মেটানো" অথচ সবচেয়ে কঠিন কাজটা যারা করে তারাই সমাজে সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত, নিগৃহীত। এইটা বলতে বলতে, ল্যাম্পপোস্টের আলোটা নিভে গেল, মুহূর্তেই চারিদিক নিকষ অন্ধকারে ডুবে গেল। সেই সাথে রাতের নিরবতা বেড়ে গেল বহুগুণ।

: এই প্রথম আমি একটি ল্যাম্পপোস্টের কান্নার শব্দ শুনছি। আমাদের প্রতি সৃষ্টিকর্তার সবচেয়ে বড় কৃপা কি জানে জানেন, আমরা ক্ষুধার দায় থেকে মুক্ত। আমার পায়ের নিচে যে গল্পের হাট বসে, সেখানকার প্রতিটা গল্পের মূলেই রয়েছে ক্ষুধা; শরীরের নয়ত মনের। লম্বু কাদতেঁ কাদতেঁ বলছে, দোহাই লাগে মোটা ভাই, যদি পারেন ওই অসহায় মেয়েগুলির জন্য কিছু করেন..... জানিনা তারা কেমন আছে, কোথায় আছে....

: লম্বুর কন্ঠে বিলাপের সুর। আজ থেকে দুই মাস পূর্বেও এখানে প্রতিদিন গল্পের হাট বসতো। শত শত মানুষের পদ চারণাই প্রতিদিন মূখর হয়ে উঠতো এই মোড়। একপায়ে দাঁড়িয়ে, শত শত ঘটনার নীরব সাক্ষী আমি এ মোড়ের আলোকবর্তিকা। একেকটা মানুষের একেকটা গল্প মঞ্চায়িত হতে দেখি নির্বাক আমি দিনের পর দিন। এইসব গল্প দেখতে দেখতে আমার দিন পার হয়ে যেত। কিন্তু এখন কেবলই প্রতীক্ষা, নিঃসঙ্গতা আর একাকিত্ব।

- আমি উঠে দাড়ালাম। আমার দম বন্ধ, দম বন্ধ লাগছে। ওর আবেদনে সাড়া দেবার কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। সাথে হঠাৎ নেমে আসা গুমোট অন্ধকারে মনের ভেতরটাতে দিকবিদিক শুন্য মনে হচ্ছে। হাঁটা দিলাম বাসার উদ্দেশ্যে....

ইতোমধ্যে কখন জানি লালু এসে বসেছিল পাশে। আমার সাথে সাথে সেও হাঁটা শুরু করল।
কিছুদূর এগুতেই, পুনরায় উজ্জ্বল আলোর বন্যায় পুনরায় ভেসে গেল নগরীর ব্যস্ততম অফিস পাড়া। বাসায় ঢোকার আগে বা পাশে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালাম লম্বুর দিকে, মৃদু আলোয় মিটি মিটি চোখে যেন মাথা উচু করে আমার পানে চেয়ে আছে!

ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, সময় পেলে আরেক দিন....
(পরের পর্ব: দশ টাকার জীবন)
---------------------
নস্টালজিয়া, রাজশাহী।
প্রথম পর্ব পড়তে আমার ব্লগ অনুসরণ করুন। আপনাদের ভাললাগা কিংবা মন্দলাগা জানালে সামনে এগুতে উৎসাহ পাবো।।

সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০২০ রাত ২:৩৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×