গুলশান ও শোলাকিয়ায় দু‘টি ভয়াবহ সন্ত্রাসী ঘটনার পর আমাদের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
থেক আনুষ্ঠানিক সাংবাদিক সম্মেলন করে জানানো হলো, এসব সন্ত্রাসী কর্মকান্ড দমনের
সক্ষমতা বাংলাদেশেরই রয়েছে, বিদেশী সহযোগীতার কোন প্রয়োজন নেই।
অন্যদিকে ঢাকার একজন পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের কাছে বললেন, বিদেশী সহযোগীতার প্রয়োজন আছে।যা দেশের সব মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। এই কর্মকর্তা কার নির্দেশে কোন অথরিটিতে এমন কথা বললেন, তা বোধগম্য হয়নি।
পরদিনই শুনতে পেলাম, ভারত থেকে ভয়ঙ্কর এক বিশেষ বাহিনী বাংলাদেশে চলে এসেছে। অবশ্য রহস্যজনক কারণে দেশের মূলধারার মিডিয়গুলো এ নিয়ে বিস্তারিত কিছু প্ৰকাশ করেনি। যে কারণে জনমনে ভারতীয় ফোর্স নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি
আছে।
নয়াদিগন্তের খবরে দেখলাম, কাশ্মীরের মুসলিম বিদ্রোহীদের দমনে ভারতের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য যে বাহিনী ভয়ঙ্কর নির্মমতা চালিয়েছে, সেই স্পেশাল
সিকিউরিটি গার্ড-এর একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে ঢুকেছে।
এদিকে ভারতীয় বংশোদ্ভুত মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাইও সন্ত্রাস দমনে
যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগীতার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ
করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে তার আগ্রহের বিষয়টিকে অনেকটাই গুরুত্ব দিয়ে সহযোগীতার ধরণ নিয়ে কাজ শুরু হয়ে গেছে।
গ্রামে একটি প্রবাদ আছে, ‘শিয়ালকে ভাঙ্গা বেড়া দেখাইতে নাই।’ বাংলাদেশের এতো এতো বহিনী কি তাহলে ব্যর্থ!
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিদেশী সহযোগীতা
অস্বীকার করার পরেও ভারতীয় বাহিনী আসলো কার হুকুমে! সরকার কি
তাহলে স্বাধীনভাবে কোন নিদ্ধান্ত নিতে পারছে না! রাষ্ট্র ও সরকার কি তাহলে এতোটাই অসহায় হয়ে পড়েছে! তাহলে কারা
চালাচ্ছে দেশ? আমাদের যে সশস্ত্র বাহিনী গোটা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার
মিশনে সুনাম কুড়াচ্ছে, তারা কি তাহলে নিজ দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায়
ব্যর্থ!
যে ভারতের নিজের অঙ্গেই আগুন জ্বলছে, সে ভারত কি আমাদের দেশে এসেছে আগুন নিভাতে নাকি আগুনে বাতাস দিতে! যে আমেরিকা
দুনিয়াটাকে সন্ত্রাসের মাধ্যমে নরকে পরিণত করেছে, সে আমেরিকা কী করতে আসতে চায়
আমাদের দেশে! দেশটাকে ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া,
আফগান বানাতে? আমেরিকার নজর কাশ্মীর, আরাকানের দিকে পরে না কেন? ওখানকার মজলুমরা মুসলমান বলে! গোটা বিশ্বে যেখানেই যতো সন্ত্রাস হচ্ছে, এর মূলে রয়েছে
সন্ত্রাসী রাষ্ট্র আমেরিকা ও তাদের পোষ্য ইজরাইল।
আর ভারত কোন দিন স্বাধীন বাংলাদেশে শান্তি ও
স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা হোক, তা চায় না। কারণ, তাহলে তারা তাদের বিশাল অখন্ডতা জুলুম করে ধরে রাখতে পারবে না। অতএব ভারতীয়
বাহিনীকে এদেশে ডেকে আনা মানে, সন্ত্রাসবাদকে আরও উস্কে দেয়া। নিজেদের কবর নিজেরাই খোড়া। মূলতঃ গণতন্ত্রের
লাশ খুবলে খাওয়ার অপেক্ষায় বাংলার
সঙ্কটাপন্ন আকাশে অতিথি শকুনরা যেভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে, জাতির বিবেক জাগ্রত না হলে বিপন্ন হবে সবই।