ঢাকার এক ব্যস্ত বাজারে আজ মানুষের উপচেপড়া ভিড়। দোকানে দোকানে হুড়োহুড়ি, শব্দের বন্যা। এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে এক চার চাকার ভ্যান, উপরে সাজানো টমেটোর স্তুপ। বিক্রেতা দর হাঁকছে ২০ টাকা! ২০ টাকা! ২০ টাকা! ”
এদিকে, বাজারে এক লোভী ছাগল ঘুরে বেড়াচ্ছে। তার চোখ টমেটোর দিকে নিবদ্ধ, মুখে লালা ঝরছে। এক পা এক পা করে সে টমেটোর ভ্যানের দিকে অগ্রসর হয়।
বিক্রেতা তার মতলব বুঝে ফেলে। “ওই! হুশ! হুশ!” করে সে ছাগলটিকে তাড়িয়ে দেয়। ছাগলটা দ্রুত পিছিয়ে যায়। সে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে, তারপর আবার ফিরে আসে।
বিক্রেতা আবার ছাগলটি দেখে চিৎকার করে বলে, “ওই! হুশ! হুশ!” আর ছাগলটি আবার সরে যায়। বারবার তাড়ানো হলেও ছাগলটির মনোবল ভাঙে না। সে আবার ফিরে আসে, টমেটোর কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু প্রতিবার বিক্রেতা তাকে তাড়িয়ে দেয়।
কিছু সময় পর, ছাগলটি একেবারে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। পেটের তাড়নায় মনোযোগ হারিয়ে, সে বাজারের একপাশে অবস্থিত একটি স্কুলের দিকে তাকায়। একটা কম উঁচু দেওয়াল, আর তার ওপারে এক বড়ো মাঠ। ছাগলটি বাজার ছেড়ে নীচু দেয়ালটি টপকাানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এক ঝটকায় সে স্কুলের খেলার মাঠে চলে আসে, এবং আবিষ্কার করে তার চোখের সামনে এক বিশাল টমেটো আর সবজির স্তূপ। একপাশে কিছু মহিলা দল বেঁধে সম্ভবত কোন অনুষ্ঠান বা পিকনিকের জন্য সবজি কাটছে। ছাগলটি সেদিকে এগিয়ে যায়।
এক মহিলা টমেটোর দিকে তাকিয়ে হঠাৎ ছাগলটি দেখে ফেলে। “এই! হুশ! হুশ!” বলে মহিলা ছাগলটিকে তাড়াতে যায়। কিন্তু ছাগলটি মরিয়া হয়ে সোজা একটা টমেটো মুখে নিয়ে দৌড় আরম্ভ করে।
মহিলারা কিছুই করতে পারে না, শুধু দূর থেকে দেখতে থাকে। ছাগলটি মাঠের এক কোণে গিয়ে বসে, বড় টমেটোটা মুখে নিয়ে এক কামড় দিয়ে চিবাতে শুরু করে। ছাগলটা কিছু না ভেবেই শুধু টমেটোতে মগ্ন হয়ে যায়। বাজারের সব হইচই আর বিক্রেতার ডাক এখন তার কাছে কিছুই না, তার পুরো মনোযোগ ছিল সেই টমেটোর দিকে, যেন এক কামড়ে মনের শান্তি এনে দিয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৫