টং দোকানে চায়ের ধোয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে তর্কের ঝড় বহিয়ে দেয়া যাবে আরো কিছুটা কাল। এর সাথে হয়তোবা হা হুতাশও চলবে। মা হয়তো মেয়েকে সতর্ক করার সময় স্মরণ করিয়ে দিবে তনুর নাম।
মেয়েও ভয়ে ঝড়োসড়ো হয়ে নিজেকে বন্ধী করে নিবে গৃহের অন্ধকার প্রকৌষ্টে।
পুরুষতান্ত্রিক সমাজে শত নির্যাতনও হয়তো নারী সহে যাবে নীরবে,নিভূতে।
কারণ সে জানে ইয়াছমিন পুলিশের কাছে বাঁচার আকুতি নিয়ে গিয়েছিল।
পুলিশ হেফাজতেই সে ধর্ষিত ও নিষ্ঠুরভাবে খুন হয়েছিল।
সোহাগী জাহান তনু হয়তো একটু নিশ্চিন্তে ক্যান্টনমেন্টের ভিতর হাটছিলো।তার সেনাবাহিনী ভাইয়েরা থাকলে আর ভয় কি?
দেখো!
ক্যান্টনমেন্টের ইট পাথরের বেষ্টনীও তনুকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি।
চায়ের কাপে ঝড় উঠা তাই স্বাভাবিক। শত শত মানুষের জন্য ইয়াছমিন, তনুরা তাই উদাহরন হবে, মায়ের চোখে মেয়ের জন্য দুশ্চিন্তার সময় চোখে ভাসা দৃশ্য হবে। হয়তো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মীদের কাছে সাহায্যের জন্য যাওয়ার আগে পুনরায় ভেবে দেখার কারণ হবে।
তনুদের লাশ ইলেকট্রিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার হেডলাইন হবে।
কিন্তু তনুরা তো তা হতে চায়নি।
যে মেয়েটি স্কুল কলেজের গন্ডী পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রেখেছে সেও একটি স্বপ্ন দেখতো।
"সুন্দর আগামীর স্বপ্ন।"
আমি বুকে হাত দিয়ে বলছি লিখে রাখুন কলেজের গন্ডী পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখা প্রতিটি তনুমনই সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখে।
হতে পারে তা ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় কিংবা রাষ্ট্রের সীমা ছাড়িয়ে বিশ্বব্রক্ষান্ডের।
অথচ তনুদের হতে হচ্ছে নিকৃষ্টতম উদাহরণ।যে তনু স্বপ্ন দেখতো সুন্দর আগামীর,তাকে জীবন দিতে হলো কোন লালসার কাছে,কোন বিপথগামী কিটের কাছে।
উদাহরণ হতে হলো নিষ্ঠুরভাবে ধর্ষিত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার।
আঘাতে আঘাতে এবড়ো থেবড়ো প্রাণহীন দেহের দিকে তাকিয়ে বাবার আত্ননাদ হয়তো আমাদেরকে সাময়িক অশ্রুসিক্ত করেছে
কিন্তু প্রকৃতপক্ষেই কি আমরা সহসায় মুক্তি পাবো এমন নৃশংসতার হাত থেকে?
যেখানে সেনানিবাসের বেষ্টনীও আমাদের বোনদের রক্ষা করতে পারেনা!
বিষয়গুলো ভাবতে ভাবতেই স্পষ্ট স্বরেই মুখ ফুটে বেরিয়ে আসে,
"নাহ,
পরিবর্তন দরকার একদম শুরু থেকেই।
অ, আ, ক,খ শুরুটা এখান থেকেই চাই।"
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১৬ ভোর ৪:০৯