তরুন এবং তরুনীর মধ্যে অনেকদিনের প্রেম। একজন ছাড়া আরেকজনের জীবন প্রায় অচল। সপ্তাদশী তরুণীর মা বাবা ইতিমধ্যে তার বিয়ে ঠিক করেছেন রোমা নামক এক যুবকের সাথে।
তরুণী কিছুতেই বিয়ে করবে না রোমাকে। তবুও পরিবার তাকে জোর করেই বিয়ে দিয়ে দিলো।
বিয়ের পরও তরুণী তরুণের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত।
এবং এক পর্যায়ে তরুণী তার স্বামী শশুরবাড়ি ছেড়ে আগের প্রেমিকের সাথে পালিয়ে গেল।
রোমা শালিশ ডাকলেন। বিচারকরা তার স্ত্রীকে তার হাতে তুলে দিয়ে ঘটনার মিমাংসা করলেন।
ঘটনার পাঁচ ছয়মাস পর তরুণী আবার তার পুরোনো প্রেমিকের সাথে পালিয়ে গেল।
এবার রোমা আর শালিশের অপেক্ষা করলেন না।
নিজেই প্রেমিককে (তরুণ) এবং প্রেমিকের মাকে ডেকে এনে দুজনকেই বিবস্ত্র করে নির্যাতন করলেন এবং ছেলের সামনে তার মাকে ধর্ষন করলেন।
এরপর তরুনের(প্রেমিক) মা থানায় মামলা করলেন এবং পুলিশ রোমাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে গেল।
ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন এবং টাঙ্গাইল -ময়মনসিংহ মহাসড়ক বন্ধ করে রোমার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করতে শুরু করলো।
এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে বিক্ষুব্ধ জনতার সংঘর্ষ বেধে যায় এবং পুলিশের গুলিতে তিনজন নিহত ও ৫০ জন আহত হন।
খবর : প্রথম আলো, বিডিনিউজ ২৪ডটকম।
না এতক্ষন আমি কোন বাংলা ছবির স্ক্রিপ্ট লিখিনি। শুক্রবার ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার বর্ণনা দিয়েছি মাত্র।
আমরা একসময় এই ঘটনাগুলো টিভির পর্দায় দেখতে অভ্যস্ত ছিলাম আর এখন বাস্তব জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি।
আমাদের বিবেকবোধ,মানুষিকতা, জীবনবোধ এবং রাষ্ট্রীয় মূল্যবোধ কতটা তলানীতে ঠেকলে এই ধরনের ঘটনা নিত্য ঘটে যায়?
দেখুন এখানে তিনটি ইলিমেন্ট প্রেমিক,প্রেমিকা এবং স্বামী এর যেকোন একটিও যদি নিষ্ক্রিয় হতো তাহলে এতগুলো প্রাণনাশ এবং এতোগুলো মানুষকে আহত হতে হতো না।
প্রথমত, তরুণী (প্রেমিকা) যদি তার স্বামীকে মেনে নিতো তবে ঘটনার সূত্রপাতই হতো না। এরপরও প্রেম ভালোবাসা যেহেতু জাতিকুলের দ্বার ধারে এবং তরুণী যেহেতু অপ্রাপ্তবয়স্ক সেহেতু যদি তার দোষ নাও দেই তবুও দ্বিতীয়বার তরুনীর পালিয়ে যাওয়া সভ্যতার কোন কাতারে পড়ে আমার জানা নেই।
দ্বিতীয়ত, প্রেমিক(তরুন) তার পুরোনো প্রেমিকাকে ভূলতে পারে নি মেনে নিলাম। তারপরও আরেকজনের স্ত্রীকে ভূলিয়ে নিয়ে যাওয়া কোনভাবেই মুসলমানদের জীবনধারার সাথে যায় না।
তাও একবার নয় দুবার। এরপরও সাহস নিয়ে তরুণীর স্বামীর মুখোমুখি দাড়ানো কতটা বাস্তবসম্মত?
তৃতীয় ব্যক্তি রোমা (রফিকুল ইসলাম) যে কাজটি করেছেন তা সভ্যতার সবচেয়ে নিকৃষ্টতম কাজের একটি।
কারণ ছেলে এবং মাকে বিবস্ত্র করে ছেলের সামনে মাকে নিপীড়ন ধর্ষন নিকৃষ্ট মানুষের পক্ষে, ইতর প্রাণীর পক্ষেই কেবল সম্ভব।
আমাদের দেশে এরকম মানুষের খুব একটা অভাব নেই। কারণ এ নিয়ে অনেককেই রোমাকে সাপোর্ট করতে দেখেছি।
রোমার জন্য শুধু একটি কথাই প্রযোজ্য, অন্যের প্রেমিকাকে জেনে শুনে জোর করে বিয়ে করে একটি অন্যায় করেছে এবং মাকে ছেলের সামনে বিবস্ত্র করে ধর্ষন করে পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ কাজটিই সে করেছে। তাকে কেবল নিকৃষ্টদের কাতারেই রাখা য়ায়।
আর কো ইলিমেন্ট হিসেবে তরুণীর মা বাবাই ঘটনার মূখ্য ভূমিকা রেখেছে।
কারণ মেয়েটির সম্মতিতে তাকে বিয়ে দিলে আজ হয়তো এতগুলো প্রাণ অকালেই ঝরে যেতনা। সবচেয়ে বড় কথা হলো মেয়েটি এখনো প্রাপ্তবয়স্ক নয়। সে এখনো আবেগ তাড়িত।
যদি সে প্রাপ্তবয়স্ক হতো তাহলে হয়তো পুরোনো ব্যাপারগুলো ভূলে সে স্বামীর সাথে সংসার করারই স্বিদ্বান্ত নিতো। আর এতগুলো প্রাণ ক্ষয়ে যেতো না অকালেই।
তাই সকল পিতামাতারই উচিৎ সন্তানদের পছন্দ অপছন্দরে গুরুত্ব দেয়া।সন্তানের প্রাপ্তবয়স হলেই তারপর বিয়ের ব্যবস্থা করা।
তাহলে হয়তো জাতি হিসেবে আমাদেরকে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা দেখতে হবে না এবং অকালে ঝড়ে পড়াদের হার কিছুটা হলেও কমবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৭