তসলিমা নাসরিনের জন্মদিন, দুটি সংবাদ এবং কিছু অনিবার্য প্রশ্ন
২৬ আগষ্ট ' আমাদের সময়' পত্রিকায় দুটি সংবাদ ছাপা হয়েছে। একটির শিরোনাম- প্রিয় স্বদেশ আমার , অমি ফিরবই । অন্যটির শিরোনাম - ভারত ত্যাগের পরিকলপনা আমার নেইঃ তসলিমা নাসরিন।
প্রথম খবরের বিষয় হলো, ঢাকায় তসলিমা নাসরিনের বাসায় ( শান্তিনগরে এই ফ্ল্যাটটি তসলিমা কিনেছিলেন আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত নির্বাচিত কলামের রয়্যালিটি থেকে) জন্মদিন পালন হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমকালের তুখোড় সব তরুনরা।
নামগুলো না হয় উল্লেখই করি। ঢাবি শিক্ষক রোবোয়েত ফেরদৌস, কবি ও গণমাধ্যম পার্সেনালিটি ( অধুনা চলচ্চিত্র নায়ক) পারভেজ চৌধুরী, সাংবাদিক শামীমা বিনতে রহমান এবং পাহাড়ের তুখোড় রাজনৈতিক কর্মি দীপায়ন খীসা।
ওই সংবাদের প্রতিবেদক জাহিদ আল আমীন জানিয়েছেন, তসলিমা নাসরিন তাকে টেলিফোনে বলেছেন, প্রিয় স্বদেশ আমার, আমি ফিরবোই।
অপর সংবাদটি পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে ছাপা হয়েছে ।সেখানে পিটিআই কে দেয়া সাক্ষাৎকারে তসলিমা বলছেন, আমি এই দেশকে( ভারতকে) ভালবাসি।...এ দেশ ত্যাগ করার কোনো পরিকল্পনা আমার নেই।
প্রিয় পাঠক -একই দিনে পাশাপাশি ছাপা হওয়া এই সংবাদ দুটি কি কোনো মেসেজ দেয় ?
তসলিমা নাসরিন নিশ্চয়ই আলোচিত লেখক । তাঁর লেখার শিল্পমূল্য, সাহিত্যমূল্য এবং সামজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে নানাজনের নানা রকম অভিমত রয়েছে। সে সব আলোচনায় না গিয়ে এখন আরো একটি খবর দেই।
স্রেফ খবর!?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্লাবে সম্প্রতি একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে তুমুল আলোচনা- আড্ডার মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে তসলিমা নাসরিনকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে। এই বৈঠকে থেকে কিছু খসড়া কর্মসূচির কথাও বিবেচনা করা হয়েছে । ওঠানো হয়েছে অল্প কিছু চাঁদা। আর এই বৈঠকে যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের কয়েকজনই তসলিমার জন্মদিনের কেক কেটেছেন।
এবার নিকট অতীতের ঘটনা মনে করিয়ে দেই পাঠক আপনাদের।
যখন দেশে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে একাত্তরের ঘাতক দালার নির্মূল কমিটির আন্দোলন তুঙ্গে, যুদ্ধাপরাধী মৌলবাদী জামাত-শিবির এবং ফতোয়াবাজ চক্রের বিরুদ্ধে গোটা দেশ ঐক্যবদ্ধ ; ঠিক সে সময় প্রকাশিত হয় তসলিমা নাসরিনের 'লজ্ঝা"।
গর্তের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে হিংস্র মৌলবাদী গোষ্ঠী। হরতাল- নৈরাজ্য... এবং অতঃপর ....
নানা ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে তসলিমার আদালতে আত্মসমর্পন এবং দেশ ত্যাগ।
পাদটীকাঃ
এখনো যখন আবার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে দাবীতে মুক্তিকামী জনতা ঐক্যবদ্ধ, তখনই তসলিমাকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ!!!
নিজেদের অজান্তেই আন্তর্জাতিক রাজনীতির দাবার গুটি হয়ে যাচ্ছে না তো তুখোড় তরুনরা।!!??