somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শঙ্খচূড় - প্রথম পর্ব "ক"

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১০:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পূর্বকথা
সোঁনাহার গ্রামটা মোটামুটি বিশাল। তহমিনা বেগমের জন্ম এখানেই। বিরাট ধনী পরিবারে জন্ম। বাড়ির প্রধান মতিয়ার রহমান। মতিয়ার রহমানের প্রথম পক্ষের ঘরে জন্ম তহমিনা বেগমের। সাত বোন আর দুই ভাই। যদিও তিনি মানুষ হয়েছিলেন মতিয়ার রহমানের ছোট ভাই এনায়েত রহমানের ঘরে। নিঃসন্তান এনায়েত রহমান বড় ভাইয়ের কাছে একটা সন্তানের জন্য হাত পেতেছিলেন। ফেরাতে পারেননি তিনি। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর ভবিষ্যত সন্তান ছেলে হোক কি মেয়ে হোক- ছোট ভাইকে দেবেন কথা দিয়েছিলেন। কথা রেখেছিলেন তিনি।
তহমিনা বেগম ছোটবেলা থেকেই জানতেন বড় চাচাই তাঁর প্রকৃত বাবা, কিন্তু এনায়েত সাহেবের পিতৃস্নেহ তাঁকে সারাক্ষণ মুগ্ধ করে রাখতো। পাশাপাশি ঘরের এক ছাদের নিচে সব ভাই বোন গুলো মানুষ হয়েছিল। এনায়েত সাহেব তহমিনা বেগমকে অনেক পড়িয়েছিলেন। ঘরে রেখে মাওলানা, পন্ডিত দিয়ে পড়াশোনা করাতেন। মাদ্রাসাতেও ভর্তি করে দিয়েছিলেন। দেখতে দেখতে তেরোটি বছর পার করার পর তহমিনা বেগমের বিয়ের প্রস্তাব আসে উররতের বহুদূর এক গ্রাম থেকে। খোলাপাড়া নামের এক গ্রামের হাজী পরিবারের বড় ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক হয়। ছেলের নাম ডি.এম. খায়রুল আনাম।
“শঙ্খচূড়” উপন্যাসের মূল গল্প এখান থেকেই শুরু হয়।


আজ সোমবার। সোঁনাহার গঞ্জে হাটবার। দূর দূরান্ত থেকে লোকজন জিনিষপত্র নিয়ে এসেছে ভাল দামে বিক্রি করার জন্য। দেবীগঞ্জের নদীপথে অনেক বজরায় করে বাহিরের বণিকরা নানা রকমের পণ্য এনেছে কেনা বেচা করতে। সোঁনাহার আর দেবীগঞ্জ পাশাপাশি গ্রাম। হাটটা হয় ঠিক মাঝামাঝি করতোয়া নদীর পাড়ের বিশাল বাজারটায়। হাট বারের একদিন আগে থেকেই নানান সার্কাস দল, লেটো গানের দল, যাত্রাদল এসে ভিড় করে নদীর পাশের ময়দানে। জাদুঘড়ি নামের এ ময়দানে একদিনের জন্য রীতিমত মেলা বসে সপ্তাহে। বায়োস্কোপের দলও আসে। সোমবার দিন-রাত লোকজনে পুরো করতোয়া নদীর ঘাটে রমরমা অবস্থা। মতিয়ার রহমানের দু-চারটা বজারা এখানে প্রত্যেক হাটেই হাজির থাকে মালপত্র নিয়ে। বিরাট বিছানো ব্যাবসা তাঁর এবং তাঁর ছোট ভাই এনায়েত রহমানের। দেবীগঞ্জে বিসাল কারবার তাঁদের। দূর দূর দেশ থেকে নানা রকম মাল পত্র কম দামে কিনে এনে চড়া দামে বিক্রি করেন এখানে। অন্যান্য জায়গাতেও মালপত্র পাঠান।
আজকের হাটেও অন্যান্য দিনের মত এসেছেন মতিয়ার রহমান। সঙ্গে ছোট ভাই এনায়েত রহমান এবং হিসাব রক্ষক ফযর আলী। নদীর পাড়ে বজরার মালপত্রের হিসাব দেখে সবে বাজারের দিকে পা বাড়াবেন মতিয়ার রহমান, হঠাৎ থমকে গেলেন। একটু অবাক হয়ে তীরে দাঁড়ানো আরেকটা বজরার দিকে তাকালেন। নদীর ঘাটের আর সব বজরা গুলোর থেকেও প্রায় দ্বিগুণ বড় একটা বজরার ডেকে দাঁড়িয়ে আছেন সাদা পাঞ্জাবী আর পাগড়ি পরা এক ভদ্রলোক। পঞ্চাশের ওপর বয়স হবে আনুমানিক। হাতে খুব দামী কাঠের কারুকাজ খোদাই করা একটা কালো ছড়ি। ভদ্রলোককে খুব চেনা চেনা লাগছে মতিয়ার রহমানের। চোখ পিটপিট করে বার কয়েক তাকালেন দূরে দাঁড়ানো সেই ভদ্রলোকের দিকে। আস্তে আস্তে হাসি ফুটে উঠল মতিয়ার রহমানের মুখে, “তোরা এখানে দাঁড়া। আমি একটু আসতেছি।” বলে হন হন করে হাটা ধরলেন সেই বজরার দিকে।
নদীর ঘাটে প্রচুর কাঁদা, হাটতে গেলেই খরম দেবে যায়। টেনে তোলাই যায় না, মাঝে মাঝে খরম বিসর্জন দিতে হয় নদীর ঘাটের কাঁদার পেটে। মতিয়ার রহমানের হাটতে সামান্য কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু পাত্তা দিলেন না। সেই বজরাটার কাছে পৌছেই হাক দিলেন, “আসসালামুয়ালাইকুম হাজী সাহেব! আছেন কেমন?”
ডেকে দাঁড়িয়ে থাকা ভদ্রলোক মতিয়ার রহমানকে দেখে ভীষণ অবাক হলেন, “আরে কি কান্ড! মতিয়ার সাহেব আপনে এখানে! ওয়ালাইকুম সালাম! আসেন আসেন, ওপরে উঠে আসেন। ঐ কে আছিস? মই নামায় দে।”
সাথে সাথে হন্ত দন্ত হয়ে দুজন লোক ছুটে এল। কাঠের বিশাল খাঁজ কাটা লম্বা মইয়ের মত তক্তা নামিয়ে দিল। মতিয়ার রহমান উঠে এলেন। হাজী সাহেব তাঁকে দু হাতে জড়িয়ে ধরলেন, “আল্লাহ পাকের অশেষ মেহেরবাণী! এখানে এসে যে আপনাকে পায়ে যাবো- ভাবতেই পারি নাই!”
মতিয়ার রহমান আলিঙ্গন মুক্ত হয়ে বললেন, “আমিও তো! আপনি যে এখানে আসবেন আগে জানলে কখন আসে হাঁড়ায় থাকতাম! হঠাৎ দেবীগঞ্জে যে আপনি? কেনা বেচা নাকি? আপনেও শেষ পর্যন্ত বনেদী ব্যবসা ধরলেন নাকি হাজী সাহেব?” মুখে হাসি।
“আরে না ভাই। আসছিলাম ছেলের জন্য সাইকেল কিনতে। ছেলে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়েছে। বড় ভাল ফল করেছে। তাই ভাবলাম একটা সাইকেল কিনে দেই। এমনে তো কিছুই চায় না..... আসেন ভেতরে একটু বসি।” মতিয়ার রহমানের কাঁধের হাত দিয়ে হাসলেন হাজী সাহেব।
“না ভাই। আজকে আর হবে না। অনেক কাজ পড়ে আছে। তারওপর বাহিরে ছোট ভাই আর ক্যাশিয়ার সাহেবও আছে। অপেক্ষা করতেছে আমার জন্য। আজকে আর বসা হবে না। তাঁর আগে বলেন সাইকেল কিনা হইছে আপনার?”
“নাহ, পছন্দই তো করতে পারলাম না।” হতাশ গলায় বললেন হাজী সাহেব, “আওনে আপনার ভাই আর ক্যাশিয়ার সাহেবকে ডাকেন তো, আমার বজরায় আসে খালি মুখে যাওয়া- তা হবে না। ডাকেন ডাকেন।”
মতিয়ার রহমান খানিক হা-না করে পরে ডাকলেন ওদের। ওপরে এনে পরিচয় করিয়ে দিলেন, “এনায়েত, ইনি হলেন আমার খুব ভাল বন্ধু মানুষ, হাজী খামিরুদ্দিন। বিশাল জমিদার বলতে পারো। উত্তরের প্রেসিডেন্ট তো ইনিই। পঞ্চগড়ে এক নামে সবাই চিনে......। হাজী সাহেব, এ হল আমার ছোট ভাই এনায়েত রহমান। আর উনি হলেন আমাদের হিসাব রক্ষক ফযর আলী।”
সালাম আর কুশলাদি বিনিময়ের পর্ব শেষে হাজী সাহেব ভেতরের একটা কামড়ায় এনে বসালেন সবাইকে। রীতিমত রাজকীয় বেশে ভেতরটা সাজানো। দামী দামী জিনিষপত্রে ভরিয়ে ফেলেছেন ভেতরটা তিনি। এনায়েত রহমান একটু অবাক হয়ে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলেন।
এর মধ্যে হাজী সাহেব ডাক দিয়ে এক কর্মচারীকে বললেন, “মেহমানদের জন্য ভাল নাস্তা পানির এনতেজাম করো সুলেমান।” গলায় কর্তৃত্বের অটুট আস্থাভরা স্বর। মাথা ঝাঁকিয়ে নিঃশব্দে চলে গেল ভৃত্যটি।
“তারপর বলেন ভাই, আপনাদের ব্যবসা বাণিজ্য কেমন চলতেছে? সব ঠিক মত চলতেছে তো?” হাজী সাহেব তাঁর আসনে হেলান দিয়ে বসলেন। বেলা পরে এসেছে বলে ভেতরে দামী হ্যাজাক জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে আগে ভাগেই। সেটার শোঁ শোঁ এক ঘেয়ে শব্দ কানে হাল্কা ভাবে আসছে বাহিরের হাটের শব্দ ছাপিয়ে।
“জী। আল্লাহ পাকের দয়ায় ভালই চলতেছে। আপনার দিনকাল কেমন যায় হাজী সাহেব?” মতিয়ার রহমান জিজ্ঞেস করলেন।
“আমার আর দিনকাল। কাজকর্ম একটু বেশী এই আর কি। আল্লাহর রহমতে খারাপ না। দায়িত্বটা একটু চাপে বসছে ঘাড়ের ওপর। কঠিন কাজ। দোয়া রাখবেন।”
সুলেমান মিয়া একটা একয়াট বড় ট্রে’তে করে অনেক পদের মিষ্ট আর ফল নিয়ে ঢুকল। সামনের একটা টেবিলে সব একে একে সাজিয়ে দিয়ে হাজী সাহেবের কলকেটা জ্বালিয়ে দিল। পাইপটা তাঁর হাতে ধরিয়ে দিয়ে আগের মত নিঃশব্দে বেরিয়ে গেল যেভাবে এসেছিল।
“নেন ভাই, আমি গরীর মানুষ। যা পারছি তাই দিয়ে আপনাদের আপ্যায়ন করার চেষ্টা করলাম।” হাজী সাহেব বললেন।
মতিয়ার রহমান হা হা করে উঠলেন, “আরে কি বলেন আপনে! এইটা কোনো কথা বললেন? আমাদের সৌভাগ্য আপনার সাথে দেখা হইলো।”
এনায়েত রহমান কম কথা বলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “ভাই সাহেবের কি একটাই ছেলে?”
“নাহ। আরো আছে। আমার তো ভাই তিন বিবির সংসার। বড় ঘরে এই একটাই ছেলে, আর এক মেয়ে। মেজো ঘরে দুই মেয়ে। ছোটটার ঘরে একটা ছেলে শুধু। মেয়েগুলার বিয়ে হয়ে গেছে।” হুকোয় টান দিতে দিতে বললেন।
“ছেলের জন্য সাইকেল নিতে আসছেন? ছেলে আসে নাই?”
“নাহ। ছেলে তো জানেও না তারে সাইকেল কিনে দিবো। একটু চমক দিতে চাই ছেলেরে।” স্মিত হাসি হাসলেন হাজী সাহেব।
“ছেলের নাম কি আপনার?”
“ডি.এম. খায়রুল আনাম। দোস্ত মোহাব্বত খায়রুল আনাম।” ভেঙ্গে বললেন, “বড় মেধাবী ছাত্র। প্রথম বিভাগে পাস দিয়েছে ম্যাট্রিক পরীক্ষায়।” গর্ব করে বললেন তিনি।
“মাশাল্লাহ! এটা তো বড় খুশির খবর।” খেজুরের রসের পিঠায় কামড় দিয়ে বলে উঠলেন ফযর আলী, “পড়াশোনা করাটাও আল্লাহর একটা অশেষ নেয়ামত। সবাইকে দেন না। খাস বান্দাদের জন্য দেন কেবল।”
তাঁর কথায় বাকিরাও মাথা ঝাঁকিয়ে সায় দিল।
“হাজী সাহবে কি সাইকেল কিনেই চলে যাবেন?” মতিয়ার রহমান ইতস্তত কন্ঠে জিজ্ঞেস করলেন।
“হ্যা ভাই। কাল সকালেই ইনশাল্লাহ রওয়ানা দিবো।”
“যদি কিছু মনে না করতেন সাহস করে একটা অনুরোধ করতাম হাজী সাহেব।” মতিয়ার রহমান বললেন।
“অবশ্যই, আপনি আমার বন্ধু মানুষ, বলে ফেলেন।” হা হা করে হেসে ফেললেন হাজী সাহেব। চেহারার ভারী গাম্ভীর্য খনিকের জন্য যেন সরল একটা মানুষের হাসিতে ঢাকা পড়ল। এনায়েত রহমান আর ফযর আলী সামান্য নড়ে চড়ে বসলেন। কাঁচা পাঁকা দাঁড়ির এই হাজী সাহেব ভদ্রলোক এতই রাশভারী ব্যক্তিত্বের মানুষ, এত বড় হাসিটাও তাদের জড়তা কাটাতে পারল না। বরং অজানা একয়াট সমীহে ভেতরটা আরো ভারী হল।
“আজকের রাতটা আমাদের বাড়ির মেহমানখানায় থাকলে বড় ভাগ্যবান মনে করতাম নিজেদের।” মতিয়ার রহমান সংকোচ ভরা গলায় বললেন।
হাজী সাহবের কাঁচা পাঁকা ভ্রুঁ যুগল একটু কুঞ্চিত হয়েই ঠিক হয়ে গেল, “এই তো চিন্তায় ফালায় দিলেন ভাই। আমি গিয়ে নানান ঝামেলায় ফেলে দিবো ভাবী সাহেবা আর আপনাদের। তারওপর জায়গাটাও তেমন চিনি না, বজরাটা রাখে গেলে কি না কি ঘটে.....”
“ওসব শুনবো না ভাই। একয়াট অনুরোধ করছি, রাখতেই হবে। আপনাকে আবার কখন পাই না পাই! বজরা নিয়া একদম ভাববেন না। আমার লোকজন আমাদের গুলার সাথে সাথে এটাকেও পাহারা দিবে। আপনে শুধু একবার হা বলেন ভাই।”
আবারও হেসে ফেললেন হাজী সাহেব, “আচ্ছা ঠিক আছে। যাবো।”
“তাহলে এখনি চলেন।” মতিয়ার রহমানের মুখে হাসি ফুটল।
“না- না! এখন না। এশারের নামঅ্যায়াট পড়ে তারপর যাওয়া যাবে।”
“ঠিক আছে। আমার ছোট ভাই আসে আপনাকে নিয়ে যাবে। এখন উঠি ভাই?” উঠে দাঁড়ালেন সবাই। হাত মেলালেন সবাই হাজী সাহেবের সাথে। আন্তরিক ভাবে হাজী সাহবে তাঁদের ডেক পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন।
“আল্লাহ হাফেয। সাবধানে যাবেন।”
“আমার ভাই আসে আপনাকে নিয়া যাবে। আপনি একটুও ভাববেন না হাজী সাহবে।” সালাম দিয়ে চলে গেলেন মতিয়ার সাহবে। বাকি দুজন তাঁর পেছন অএছন হারিয়ে গেল হাটের বিপুল আলোক সমুদ্রের মাঝে। সন্ধ্যা নেমে গেছে। চারপাশে এখানে অন্দকার আর ঠান্ডা বাতাস।
হাজী সাহেব ফোঁস করে একয়াট নিঃশ্বাস ফেললেন, “সুলেমান?”
নিঃশব্দে তাঁর পেছনে এসে দাঁড়াল অনুগত ভৃত্যের মত সে।
“রাতে মেহমান হবো মতিয়ার সাহেবের বাড়িতে। খালি হাতে তো আর যাওয়া যায় না। হাটে গিয়া ভাল দেখে পাঁচ-ছয়টা বড় রুই মাছ আর মুরগী নিয়া আসো। লাউ পাইলে সেটাও আনবা। মিষ্টি দু... নাহ, চাইর কেজি আনবা। মতিয়ার সাহেবের বাচ্চাদের জন্য বাতাসাও নিয়া আসবা, পারবা না?”
মাথা কাঁত করল সুলেমান মিয়া। পারবে সে।
হাজী সাহেব টাকা বের করে দিল সুলেমান মিয়াকে। যাওয়ার সময় সুলেমানকে বললেন, “আসার বেলা ভাল দেখে একটা লুঙ্গি আর জামা কিনবা তোমার জন্য। তোমার জামাটা যে ছিঁড়ে গেছে- বলো না তো কিছুই। যাও এখন।” ভেতরের কামড়ায় চলে গেলেন তিনি।
বাহিরে সুলেমান মিয়া টাকা হাতে কয়েক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে রইল। অনেক বাতাস এখানে, ঠান্ডা বাতাস। হাঁড় কাঁপিয়ে দিচ্ছে তার। ঘুরে হাটা লাগালো। দেরি করা যাবে না। হাজী সাহেবের হুকুম পালন করতে হবে আগে।


মতিয়ার রহমান সাহেবের বড় বাড়ি। একতলা আধপাকা বাড়ি, ওপরে টিন শেড। সামনে একটা উঠান। বাড়ির একপাশ আবার দুইতলা করেছেন গেল বছর। কাঠের দুইতলা। ওখানে অবশ্য দুই রূম। মতিয়ার সাহেব মাঝে মাঝে ওখানে থাকেন। দ্বিতীয় বিবাহ করায় ছোট বৌইয়ের ঘরটা এখানেই। ছোট বৌয়ের এখনো বাচ্চা হয়নি। বড় বৌ থাকে নিচের তলায়। বাকি ছেলে মেয়েরাও ওখানেই থাকে। এনায়েত রহমান উঠানের অন্যপাশের তিন ঘরের বাড়িটায় থাকেন স্ত্রী এবং কন্যা তহমিনাকে নিয়ে। বাড়িটা উঠান ঘিরে প্রায় লাগোয়া একটা অন্যটার সাথে, বিচ্ছিন্ন নয়। রান্না এক চুলাতেই হয়। আলাদা নয়। বাড়ির অন্য অংশে থাকেন হিসাব রক্ষক ফযর আলী, মাওলানা নিয়াজ শেখ এবং বাড়ির যাবতীয় কাজ দেখা শোনা করা জয়নাল ব্যাপারী। মাওলানা সাহেব বিয়ে করেননি। বাকিরা বিয়ে করেছে, তবে এখানে থাকে না পরিবার। গ্রামে থাকে। বেশি দূরে না। বীরগঞ্জেই। সপ্তাহে প্রায় গিয়ে থেকে আসেন পরিবারের সাথে। মতিয়ার সাহেবের মায়ের বাড়ি বীরগঞ্জে, যার কারণে তাঁর ঘরে অন্যান্য কাজে মায়ের বাড়ির দিকের লোকেরাই বেশি। বাড়ির কামলা কাজেম আলীও বীরগঞ্জের মানুষ। বীরগঞ্জের দিকে প্রায়ই খরা দেখা দেয়, তাই লোকজন চলে আসে এদিকে।
মতিয়ার রহমান আজ এশারের আগেই অনেক বাজার সদাই করে ফিরে আসলেন। বাড়িতে ঢুকেই গলা উঁচিয়ে সবাইকে ডাকা শুরু করলেন, “ফাতেমা, জয়নাব? কাজেম আলী? রোকেয়া? কই সব? তাড়াতাড়ি আসো!”
তাঁর বড় স্ত্রীর নাম ফাতেমা। জয়নাব হল ছোট স্ত্রী। রোকেয়া হলেন এনায়েত রহমানের স্ত্রী। মতিয়ার সাহেবের ডাকে সবাই হন্ত দন্ত হয়ে ছুটে এলেন।
মাথায় কাপড় দিয়ে তাঁর সামনে এসে দাঁড়ালেন ফাতেমা, “কি হইছে? এত ডাকাডাকি করতেছেন যে আজ?”
“আজকে রাতে বাড়িতে মেহমান আসবে। উত্তরের প্রেসিডেন্ট, হাজী খামিরুদ্দিন। বিরাট নামী লোক। বাজার করে আনছি। খুব ভাল করে পাকশাক করবা। উনার যত্ন-আত্তির কুনো কমতি হয়েছে- আমি যেন না শুনি। মেহমান খান ভাল মত ঝাড়পোছ করে ঠিক করে রাখবা। এশারের পরেই এনায়েত যায়া তাঁরে নিয়ে আসবে। কাজেম আলী, হুকাতে নতুন করে গরম পানি লাগাও, সাথে দামী তামাক দিবা, জাফরানও। দাঁড়ায়া থাইকো না, যাও যাও- কাজে লাগে পড়ো!”
সাথে সাথে সারা বাড়িতে হূলস্থূল পড়ে গেল। বাড়ির ভেতরের মেয়েদের কানেও গেল খবটা। জানালার পর্দার ফাঁক দিয়ে মাঝে মাঝে উঁকি ঝুঁকি মারতে লাগল- সবাই কি করছে দেখছে উৎসুক ভাবে। মতিয়ার সাহেবের সাত মেয়ে, দুই ছেলে। ছেলে দুটো ছোট। মেয়েদের প্রায় সবারই বিয়ে হয়ে গেছে। বাকি আছে তিন জন। সেই তিন জনের একজন হল তহমিনা বেগম, বর্তমানে এনায়েত রহমানের মেয়ে হিসেবে যে বড় হচ্ছে। বাকি দু মেয়ের থেকে বড় তহমিনা। ফাতেমা বেগম পাকের ঘর থেকে একটু পরেই তহমিনাকে ডাক দিলেন, “তহমিনা মা? একটু পাঁকের ঘরে আসো তো। রওশান আরা আর পেয়ারারেও ডাক দেও।”
সাথে সাথে মাথায় ওড়না চাপিয়ে খালি পায়ে উঠান পেড়িয়ে দৌড়ে চলে এল তিন মেয়ে রান্না ঘরে। রান্না ঘরটা মূল বাড়ি থেকে বিচ্ছিন্ন। উঠানের একপাশে খড়ের ছাউনি দিয়ে মাটির অর্ধেক দেয়াল উঠিয়ে তৈরি করা। পেছনেই বিরাট একয়াট পুকুর। শান বাঁধানো ঘাট। অবশ্য রান্নাঘরের পাশেই টিউবওয়েল আছে। পুকুরটা কেবল গোসলের জন্য। মেয়েদের জন্য আলাদা ভাবে ঘাটে ঘাউনি আর বেড়া দিয়ে ঘাট করে দেয়া আছে পুকুরে।
ফাতেমা বেগম মাছ কোঁটায় ব্যস্ত। জয়নাব চুলা ধরাচ্ছেন। রোকেয়া মুরগী কাটছেন। ফাতেমা বেগম তহমিনাকে বললেন, “তুমি আমার সাথে একটু হাত লাগাও মা। মাছগুলা কাটে শাষ করি দুইজনে। রওশানারা তুমি পেয়ারাকে নিয়া সবজিগুলা কাটে ফেলো তো।”
তহমিনা ওড়ানাটা কোমরে প্যাঁচিয়ে বড় চাচীর পাশে বসে পড়ল নতুন একটা বটি নিয়ে। বড় বড় কাতল মাছ। দ্রুত আঁশ ছাড়িয়ে কেটে ফেলতে লাগল। বাকি দুজনও কাজে লেগে গেল। তহমিনা মাছ কুটতে কুটতে কুপির আলোয় বাকিদের দিকে তাকালো। সবাই ব্যস্ত। চুলা ধরিয়ে তাতে লাকড়ি ঠেসে দিচ্ছেন জয়নাব। তহমিনা ফাতেমা বেগমকে জিজ্ঞেস করল, “বড় মা, বাড়িতে কে আসবেন আজকে?”
মতিয়ার রহমানের এ স্ত্রীই তার গর্ভধারিণী মা, বড় চাচী না ডেকে তাই বড় মা ডাকে তহমিনা।
“তোমার বড় আব্বা তো বললেন উত্তরের প্রেসিডেন্ট আসবেন বাড়িতে। হাজী খামিরুদ্দিন সাহেব। বিরাট নামী মানুষ।”
“প্রেসিডেন্ট! তাইলে তো অনেক বড়লোক।” অবাক হল রওশান আরা।
“হু।” মাথা ঝাঁকালো পেয়ারা বেগম।
“তাড়াতাড়ি হাত চালাও তোমরা। এশারের ওয়াক্ত প্রায় হয়ে গেল। শেষে মেহমান চলে আসলে কেলেংকারী! রান্না আগে আগে শেষ করতে হবে।” তাগদা দিলেন ফাতেমা বেগম।
তহমিনা হেসে গুণগুণ করে হাল্কা গলায় গান গাইতে গাইতে মাছ কুটতে লাগল।
“মাঝি ফের আইলো না আর নৌকাডুবি যায়,
একলা নাওয়ের মাঝে বধু থাকল নিরুপায়.......”
ফাতেমা বেগম কিংবা অন্যরা বাধা দিল না তাকে। আহা, কত সুন্দর গানের গলাটা!
মতিয়ার সাহেব অবশ্য তেমন গান শোনা মানুষ না। রান্না ঘরের দিকে তাঁকে আসতে দেখেই তহমিনা গান থামিয়ে ফেলল। “কিরে বেটি, সবগুলা দেখি কাজে লাগে পড়ছো! ভাল, খুব ভাল। যেই ঘরে যাবা, ঘর আলো করে রাখবা আল্লায় দিলে।” উদার মুখে হাসলেন মতিয়ার সাহেব। ঘুরে চলে গেলেন টিউবওয়েলের দিকে। ওযু করতে লাগলেন। মাওলানা নিয়াজ শেখের কন্ঠে আযানের ধ্বনি পাওয়া যাচ্ছে। বাড়ির উত্তর দিকে মসজিদটা। মতিয়ার সাহেবের দেয়া মসজিদ। এশারের আযানটা রাতের নিস্তব্ধতার মাঝে বড় করুণ সুরে ছড়িয়ে পড়তে লাগল। হাজী সাহেবের আসার সময় হয়ে গেছে।


নতুন একটা পাঞ্জাবী গায়ে দিয়ে কাশ্মিরী শালটা কাঁধের এপাশে ফেললেন হাজী খামিরুদ্দিন। এশারের নামায বাজারের মসজিদে পড়েছেন একটু আগে। এখন বজরায় ফিরে নতুন ভাবে তৈরি হয়ে নিলেন মতিয়ার রহমানের বাড়িতে যাবার জন্য। পায়ে মোজা পরে চামড়ার কালো জুতা পরলেন। একয়াট চিরুনী নিয়ে দাঁড়ি আঁচড়াতে আঁচড়াতে ডাক দিলেন, “সুলেমান?”
দরজার পাশে নিঃশব্দে হাজির হল সুলেমান। গায়ে নতুন ফতুয়া আর লুঙ্গি, গলায় গামছা। চুলগুলো তেল দিয়ে আঁচড়ানো।
“সব বাজার করা হইছে ঠিক মত? বড় বাঁশের টুকরি কিনছো? জিনিস নিবা কীভাবে?” আয়নায় তাকিয়ে দাড়িতে চিরুনী চালাচ্ছেন হাজী সাহেব।
সুলেমান ঘাড় কাত করে চলে গেল। খানিক বাদে দেখা গেল বিশাল একটা নতুন বাঁশের টুকরিতে মাছ, মিষ্টির হাড়ি, বাতাসার হাড়ি সাজিয়ে নিয়েছে, ওপরে একটা গামছা দিয়ে ঢাকা। হাতে দুটো মুরগী ঝুলছে উল্টো ভাবে। কঁক কঁক করে যাচ্ছে।
“হুম। খুব ভাল কাজ করেছো। সাবাস বেটা।” সন্তুষ্টির ভঙ্গিতে মাথা ঝাঁকালেন হাজী সাহেব। গলা উঁচিয়ে ডাকলেন, “মানিক মিয়া, জহর আলী?”
সঙ্গে সঙ্গে এসে হাজির হল ওরা দুজন।
“আমার অবর্তমানে বজরার প্রতি খেয়াল রাখবা। প্রয়োজনে ঘুমাবা না। নিজের জিনিস, হেফাজতে রাখবা- বুঝলা? কোনো দরকার পরলে আমাকে খবর পাঠাবা। খালি রাখে যাবা না কোথাও।” গম্ভীর গলায় বললেন।
মাথা কাত করল, “জী আচ্ছা হুজুর।”
“তোমরা আমার বিশ্বস্ত লোক। তাই অন্যের হাতে ছাড়ে যাইতে ভরসা পাইনা। তোমরা থাকো এখানে। আল্লাহ তাআলা মালিক, আসল হেফাযতকারী তো তিনিই।” কাঠের ছড়িটা হাতে নিয়ে মেঝেতে বার দুয়েক ঠুকলেন। সুলেমানের দিকে তাকালেন, “চল সুলেমান, এনায়েত রহমানের আসার সময় হয়ে গেল....”
কথাটা শেষ হবার আগেই বাহির থেকে এনায়েত রহমানের ডাক শোনা গেল, “আসসালামুয়ালাইকুম, হাজী সাহেব আছেন নাকি?”
হাজী সাহেব দ্রুত পায়ে বেরিয়ে এলেন অন্ধকার খোলা আকাশের নিচে ডেকে, ভীষণ ঠান্ডা বাতাস, “ওয়ালাইকুম আসসালাম। এনায়েত সাহেব। পথে আসতে কোনো তকলিফ হয় নাই তো?...... সুলেমান, মই নামাও।”
নিচে হারিকেন হাতে দাঁড়িয়ে আছেন এনায়েত রহমান। মই নামানো হল ঘাটে। “বিসমিল্লাহ্‌” বলে পা বাড়ালেন হাজী সাহেব। তাঁর পেছন পেছন সেই টুকরি হাতে নামতে লাগল সুলেমান।
ঘাটে নেমে এনায়েত রহমানের দিকে এগিয়ে এলেন, “ভাই সাহেবকে বড় যন্ত্রণায় ফেলে দিলাম মনে হয়।” হাসলেন।
এনায়েত সাহেবও প্রত্যুত্তরে হাসলেন, “আরে কি বলেন ভাই। এসব কিছু না। চলেন। বেশি দূরে না, বাজার থেকে যাবার পথে একটা গরু গাড়িতে উঠে যেতে হয় মাইল খানেক। চলেন, আল্লাহ পাকের নামে রওয়ানা দেই।” সুলেমানের হাতের বিশাল টুকরি আর মুরগী আগে খেয়াল করেননি। দেখা মাত্র জিভ কাটলেন, “আপনি এত সব কি করছেন ভাই! এত কষ্ট করতে গেলেন কেন? ভাইজান দেখলে রাগ করবেন অনেক!”
হা হা করে হাসলেন হাজী সাহেব, “মেহমান হতে যাইতেছি, খালি হাতে গেলে নিজের কাছেও খারাপ লাগে। এ তেমন কিছু না। চলেন, যাওয়া যাক।” বিড়বিড় করে দোয়া পড়লেন, “বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আ’লাল্লাহি লা হাওলা ওয়ালা ক্যুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ।”


মতিয়ার রহমান মেহমানদের জন্য ঘরের জিনিস পত্রের তদারকি করছিলেন। এমন সময় হাজী সাহেবরা এলেন। মতিয়ার রহমান ছোট ভাইয়ের গলার আওয়াজ পেয়েই বেরিয়ে এলেন ঘর থেকে হারিকেন হাতে। তাড়াতাড়ি এগিয়ে গেলেন বাড়ির গেটের দিকে। মাওলানা নিয়াজ শেখও তাঁর সঙ্গে এলেন। গেট খুলে দিতেই সালাম দিলেন, “আসসালামুয়ালাইকুম হাজী সাহেব, পথে আসতে কোনো অসুবিধা হয় নাই তো?”
“নাহ। একদম না। বরং গরুর গাড়িতে করে চড়ে আসতে খুব ভাল লাগছে। চারপাশে দেখি কুশারের বিছানো ক্ষেত। এত বড় কুশারের ক্ষেত তো খোলাপাড়াতেও করে না। সব আপনাদের নাকি ভাই?”
“এই আর কি, আল্লাহর রহমত।....... আসেন, ভেতরে আসেন ভাই।” হারিকেনের আলোয় পথ দেখালেন।


বাড়ির মেয়েরা রান্না শেষে ঘরে চলে গিয়েছিল। জানালার পর্দা সামান্য ফাঁক করে মেহমানদের দেখতে লাগল উঁকি ঝুঁকি মেরে। রান্নাঘরে তিন বৌ মাথায় ঘোমটা চাপিয়ে দ্রুত হাতে বাকি কাজগুলো শেষ করতে লাগলেন। মেহমানরা চলে এসেছে। এখন দেরি করলে মতিয়ার সাহেবের ধমক খেতে হবে।
মেহমানদের মেহমানখানায় বসানো হচ্ছে।
জানালা দিয়ে এক নজর তাকিয়ে রওশান আরা চাপা গলায় বলল, “বুবু দেখছো হাজী সাহেবরে? আজরাইল মার্কা চেহারা না? দেখলেই ভয় লাগে।”
তহমিনা মুখ টিপে হাসল, রওশান আরার মাথায় আলতো চাটি মেরে বলল, “চুপ থাক। বড় মা শুনলে মাইর খাবি।”
পেয়ারা পাকঘরের সামান্য কাজ করেই হয়রান হয়ে গেছে, বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে পরেছে বাকি দুই ভাইয়ের সাথে। ঘরে একটা হারিকেন কম আলোতে জ্বলছে।
“ওমা! এরা দেখি নাখায়ে ঘুমায় পরছে বুবু! পেয়ারাটা ইকটু কাজ করলেই খালি ঘুমায়। বুড়ির বিয়ে যে ঘরে হবে ওই ঘরের তো কপাল খারাপ।”
“এতো কথা বলিস ক্যান? চুপ থাক!” ধমক দিল মৃদু স্বরে তহমিনা। পর্দার ফাঁক দিয়ে মেহমানদের দেখছে ও। এখন অবশ্য দেখা যাচ্ছে না। ভেতরে সবাই। কাজেম আলীকে দেখা যাচ্ছে খাবারের গামলা, প্লেট, জগ হাতে দৌড়া দৌড়ি করছে। বড় আব্বা এবং তার বাবাও এদিক ওদিক ছোটা ছুটি করছেন ব্যস্ত ভাবে।
আপন মনেই বিড়বিড় করল তহমিনা, “কি এমন মেহমান! এত দৌড়ায় ক্যান সবাই?”
সারা জীবন অন্যদের ওপর হুকুম জারি করতে থাকা নিজের বড় আব্বা ও বাবাকে এভাবে ছোটাছুটি করতে দেখে অবাক হয় তহমিনা। হাজী খামিরুদ্দিন নামের কাঁচা-পাঁকা দাঁড়ির গুরু-গম্ভীর ঐ মানুষটাকে সে ঠিক বুঝতে পারেছে না। প্রেসিডেন্ট হলে হবে- তাতে এমন কি? নিজেকেই যেন প্রশ্ন করল তহমিনা বেগম।
প্রশ্নটার জবাব পেতে তহমিনা বেগমের অনেক বছর সময় লেগে গিয়েছিল।

(পর্বটির দৈর্ঘ্য জনিত সমস্যার কারণে দুই খন্ডে দেয়া হচ্ছে)
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঘরে ফেরার টান

লিখেছেন স্প্যানকড, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ ভোর ৬:৩১

ছবি নেট।

তুমি মানে
সমস্ত দিনের ক্লান্তি শেষে
নতুন করে বেঁচে থাকার নাম।

তুমি মানে
আড্ডা,কবিতা,গান
তুমি মানে দুঃখ মুছে
হেসে ওঠে প্রাণ।

তুমি মানে
বুক ভরা ভালোবাসা
পূর্ণ সমস্ত শূন্যস্থান।

তুমি মানে ভেঙ্গে ফেলা
রাতের নিস্তব্ধতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বজলুল হুদাকে জবাই করে হাসিনা : কর্নেল (অব.) এম এ হক

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১১:৫৯

মেজর বজলুল হুদাকে শেখ হাসিনা জবাই করেছিলেন।

(ছবি ডিলিট করা হলো)

শেখ মুজিবকে হত্যার অপরাধে ২৮শে জানুয়ারী ২০১০ এ মেজর (অব.) বজলুল হুদা সহ মোট ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। রাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মি. চুপ্পুর পক্ষ নিয়েছে বিএনপি-জামাত; কারণ কী?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬


বিএনপি গত ১৬ বছর আম্লিগের এগুচ্ছ কেশও ছিড়তে পারেনি অথচ যখন ছাত্ররা গণহত্যাকারীদের হটিয়েছে তখন কেন বিএনপি চু্প্পুর পক্ষ নিচ্ছে? অনেকেই বলছে সাংবিধানিক শুন্যতা সৃষ্টি হবে তার সংগে বিএনপিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগারেরা প্রেসিডেন্ট চুপ্পুমিয়াকে চান না, কিন্তু বিএনপি কেন চায়?

লিখেছেন সোনাগাজী, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৪



**** এখন থেকে ১৯ মিনিট পরে (বৃহ: রাত ১২'টায় ) আমার সেমিব্যান তুলে নেয়া হবে; সামুটিককে ধন্যবাদ। ****

***** আমাকে সেমিব্যান থেকে "জেনারেল" করা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিকাহের পরিবর্তে আল্লাহর হাদিসও মানা যায় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩১ শে অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪




সূরা: ৪ নিসা, ৮৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮৭। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নাই। তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্র করবেন, তাতে কোন সন্দেহ নাই। হাদিসে কে আল্লাহ থেকে বেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×