১।
আজ রাতে আমি একটি আক্রমনাত্মক স্লোগান লিখতে পারি সকালের সমাবেশের,
লিখতে পারি একটি বারুদ মিশ্রিত বক্তৃতা,
আমি হতে পারি দরজায় দাঁড়ানো মেয়েটির ঈর্ষাপরায়ণ ক্ষুব্ধ প্রেমিক,
হিংসার ফুটন্ত লাভা ছুঁড়ে দিতে পারি তার ও তার বন্ধুটির উদ্দেশ্যে,
অপদস্তের চূড়ান্ত করতে পারি তাকে,
ছিনিয়ে নিতে পারি মানি ব্যাগ খুলে শাহবাগের সব ক'টি রজনীগন্ধা আর গোলাপের তোড়া
ব্যর্থ করে দিতে পারি কালকের সব প্রেমিকাদের বার্থ ডে সেলিব্রেইশন
অথচ ঈর্ষা ক্রোধ প্রেম অপ্রেম ফেলে শেষ পঙতির শেষ শব্দ টি লিখছি বিষণ্ণতা!
২।
যেখানে আমার শৈশব কৈশোর দাঁড়িয়ে সেটা নিয়ে গেছে সময়ের ঢেউ
আঁতুর ঘরের স্মৃতি আমার মনে নেই
ধাত্রী সেবিকাদের এমন কি মায়ের মুখ টাও অস্পষ্ট এখন
যে শহর আমার যৌবন দেখেছে তার জৌলুস চলে গেছে অনেক আগেই
যেখানে আমার প্রেম প্রথম রচনা
সেইসব যাবতীয় অক্ষর
ব্রীজের তলে পড়ে থাকা মৃত কুলীন তুরাগ।
৩।
আমাকে মুছে যেতে হবে
অবলীলায় মুছে যেতে হবে
আশ্বিনের বৃষ্টির মত
কার্তিকের নীলাভ শূন্য আকাশের মত
বসন্তের কুয়াশার মত
ফাল্গুনের ভোরে চাদর গায়ে বাড়ি ছাড়া লোকটার মত
ঘুলঘুলির চড়ুই টার মত..
আমাকে মুছে যেতে হবে শহরের জলাশয়ের মত
নগরমানচিত্র থেকে সুউচ্চ বিল্ডিং এ।
লিফটে উঠতে উঠতে মুছে যাব
সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে মুছে যাব
গাবতলী থেকে গুলিস্থান যেতে যেতে মুছে যাব,
আমাকে মুছে যেতে হবে,
সাড়ে তিন হাতের চিহ্ন নিয়েও মুছে যেতে হয় ভিন্ন নাম ফলকে।
৪।
আমরা প্রেমের কথা বললাম
আর আমারই বন্ধুটি মানুষের,
আমরা ছুটে গেলাম নীল সাগরের শেষ টানা তীরের কাছে
আমার ই বন্ধুটি ছুটে গেল নীল পলিথিনের বস্তি থেকে যুদ্ধরত ভাঙন উপকূলে;
আমাদের উৎসব ছিল আলোকজ্জ্বল
ও অন্ধকারে নিয়েগেল লাইটার ব্যাটারি চালিত টর্চ,
আমরা ফুলের দোকানে ছুঁটলাম
ও পথ্যের দোকানে,
যখন আমরা একটা আগুন জ্বাললাম
ও নেভালো হাজার টা;
আমরা যখন প্রায় সফল প্রেমিক
ও তখন দুপায়ে দাঁড়ানো মানুষ,
যখন আমরা কবিতা লিখলাম
ও তখন কবিতা হয়ে গেল।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মে, ২০১৬ রাত ১১:৫৯