
আমজনতাকে ১০টাকায় চাল খাওয়ানো,বিনামুল্যে সার বিতরন,বছর তিনেকের মধ্যে ঘর থেকে শুরু করে গরুর ঘর পর্যন্ত বিদুৎতের আলোয় আলোকিত করে দেওয়া ,চরম গরমে পানি দিয়ে আমজনতাকে ভাসিয়ে দেওয়া,শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ঘরে ঘরে গ্যাস পৌছে দেওয়া,আগামী দিনের নাগরিকদের বিশ্বের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে জ্ঞান আহরনের জন্য গ্রাম পর্যন্ত ইন্টারনেট পৌছে দেওয়া সহ হরেক রকম সুযোগ সুবিধা দিয়ে দিন বদলের ডিজিটাল বাংলাদেশের মুলা ঝুলিয়ে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলা অভিধানের যে শব্দটি প্রতিদিনকার সংবাদপত্র,ইলেকট্রনিক মিডিয়া আর বাংলা অনলাইন ব্লগ গুলোতে রাজত্ব করে যাচ্ছে সে শব্দটি হচ্ছে দখল । দিন বদলের মুলা ঝুলিয়ে জয়লাভের কয়েক সেকেন্ড পর থেকেই 'দিন বদলের সোনার ছেলেদের' হল দখল দিয়ে শুরু হওয়া দখলের উন্মাদনা চলছে ননস্টপ গতিতে।হল দখল,হলের ডায়নিং দখল,ক্যাম্পাস দখল,টেন্ডারবাক্স দখল,চাদাবাজিঁর জন্য এলাকা দখলের জন্য চলছে নিজেদের মধ্যে কামড়া-কামড়ি।বিগত গনতান্ত্রিক সরকারগুলোর সময়ে দেখা যেত ক্ষমতা হারানো দল এবং ক্ষমতায় আসা ছাত্রদের মধ্যে কামড়া-কামড়ি হত।কিন্তু এবার হচ্ছে উল্টো!দিন বদলের ছাত্ররাই নিজেদের মধ্যেই কামড়া-কামড়ি করে দিন বদল করছে।দখলের নেশায় মাতাল হওয়া ছাত্ররা(?) ভাদ্র মাসের বিশেষ প্রানীটির চাইতেও ভয়ংকর রুপ ধারন করেছে।হল,ক্যাম্পাস,টেন্ডার বাক্স,চাঁদাবাজির জন্য এলাকা দখল করেই ক্লান্ত হচ্ছেনা সাধরন ছাত্রীদের নারীত্ব দখলের প্রতিযোগিতাও শুরু করে দিয়েছে।সাধরন ছাত্রীদের কখনো র্যাগিংয়ের নামে কখোনো 'দুষ্ট ছেলের'(?) মত ইভটিজিংয়ের নামে শারিরীক মানসিক নির্যাতন করছে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানগুলোতে ।একজন কে সেদিন রসিয়ে রসিয়ে(?) বলতে শুনলাম এখনতো গায়ে ওড়না কেড়ে নিয়ে গায়ে হাত দেওয়া শুরু হয়েছে কয়েক বছর পর কলেজ-ভার্সিটিগুলোতে কয়েক'শ মানিক দেখবা যারা সেন্সুরী করার আনন্দে ক্যাম্পাসে মিষ্টি বিতরন করছে।
দখলের নেশায় মাতাল হওয়া ছাত্রদের সাথে সুর মিলিয়ে তাদের মুরব্বীরাও দখল কে হ্যাঁ বলল।ছাত্র সংগঠনটি আর তাদের মুরব্বীদের ব্যবধান হচ্ছে মুরব্বীদের পালিত ছাত্ররা হরেক রকম দখলের জন্য নিজেরাই নিজেদের মধ্যে ব্যস্ত আর মুরব্বীরা ব্যস্ত বিরোধী দলের এমপি ও নেতাদের পেছনে। যে সংসদে মিথ্যা না বলার প্রতিশ্র“তি দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল সে সংসদে দাঁড়িয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দখল করে নিল বিরোধী দলের সামনের সারির সিট।সংসদের সিট দখলের পর থেকে শুরু হল বিরোধী দলের প্রধানের বাড়ি দখলের নানা নাটক এবং সরকারী অফিস আদালতে গুরুত্বপূর্ন পদগুলোর চেয়ার দখল।ছাত্র ও তাদের সংসদের মুরব্বীদের সাথে সুর মিলিয়ে থানা,ওয়ার্ড,ইউনিয়ন পর্যায়ের পাতি নেতারা ব্যস্ত বিরোধী দলের জমি দখল,ব্যবসা প্রতিষ্টান দখল, পার্ক দখল এবং আগের নদীর পাড় দখলদারদের উচ্ছেদ করে নিজেদের দখলে নিতে।অবৈধ নদী দখলদারদের কারনে বুডিগঙ্গা,শীতলক্ষ্যা,তুরাগনদী,টঙ্গী খালের চরম দশা।একদিকে নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন অপর দিকে আশুলিয়া,সাভার,টঙ্গী ও গাজীপুরের শিল্প-কারখানাগুলোর হাজার হাজার টন টন বিষাক্ত বজ্য কারণে নদীগুলোর বেহাল দশা। হারিয়ে যাচ্ছে জীব বৈচিত্র।ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ।
একদিকে চলছে দিনবদলের দখলায়নের নামে ক্ষমতায়নের দখলায়ন অপরদিকে এক শ্রেনীর সুশীল সমাজ এবং এলিট শ্রেনীর বুদ্ধিজীবিদের একদল টিভি চ্যানেলগুলোর টকশোতে ব্যস্ত সরকারের গুনগান গাইতে আর একদল ব্যস্ত জনগনকে বদলে দেওয়ার জন্য হরেক রকম শপথ নিতে।এলিট শ্রেনীর সুশীল প্রতিনিধিদের একটি দল দিন কয়েক আগে নদী দখলদার এবং নদী দুষনকারীদের বিরুদ্ধে লাইভ অনুষ্টান করে মন্ত্রী-এমপিদের উপস্থিতিতে সে অনুষ্টানে কিছু নরম গরম বক্তৃতা দিয়ে পকেটে নিল পরিবেশ রক্ষার সম্মাননা পদক। আর মন্ত্রী-এমপিরা লাইভ অনুষ্টানে বলার সুযোগ পেয়ে বিরোধী দল ক্ষমতায় থাকতে হেন করেছে তেন করেছে টাইপের সস্তা বুলি কিছুক্ষণ আওডিয়ে তারপর নেত্রীর গুনগান গেয়ে দলীয় স্লোগান দিয়ে বক্তৃতা শেষ করে এসি গাড়িতে করে ফিরে গেছে।পাঠক আপনাদের হয়ত প্রশ্ন জাগতে পারে যারা নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে এত সোচ্চার তারা তো ভালই করছে;তাদের ভালোত্বের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলছি কেন?প্রিয় পাঠক,লাইভ পরবর্তী অনুষ্টান এবং পদক বিতরনের পর নামকাওয়াস্তে কিছু দখলদারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে কিন্তু রাঘব-বোয়ালরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে গেছে। বিনয়ের সাথে আরো জানাচ্ছি ,অতীত ক্যাচাঁল আর নেত্রীর গুনগান গেয়ে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দেওয়া নেতারা আর পদক পাওয়া ওয়ালা যে সুশীল এবং তাদের সুশীল মিডিয়াগুলো অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে এত সোচ্চার(?) তারা কিন্তু ফারাক্কার চাইতেও ভয়াবহ টিপাইমুখ বাধেঁর বিরুদ্ধে একেবারে নির্বিকার।উচ্চতায় ১৬১ মিটার এবং দৈঘ্যে ৩৯০মিটার টিফাইমুখ ড্যাম নির্মান হলে মরে যাবে সুরমা,কুশিয়ারা,মেঘনা নদী।এবং আরো কয়েকটি নদীর উপর টিফাইমুখ ড্যামের সরাসরি প্রভাব পড়বে ।এক ফারাক্কার কারণে অনেকগুলো নদীর বেহাল দশায় বিপর্যস্ত পরিবেশ,ক্ষতিগ্রগস্থ কৃষক। তার উপর ফারাক্কার চাইতেও ভয়াবহ টিফাইমুখী ড্যাম হলে যে কত ক্ষতি তা জেনেও চুপ করে থাকার জন্য দাদাপ্রেমী নেতা এবং তাদের সুশীলদের এমন নদী বাচাঁও প্রেম কি টিফাইমুখী বাঁধ থেকে আমজনতার দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরানোর জন্য?
১০টাকার চাল,সার ইত্যাদি নিয়ে কারো দ্বিমত থাকলে নির্বাচনের আগের প্রথম আলো জনকন্ট পত্রিকা দেখার অনুরুধ রইল।
(আজকের ভিমরুলের লিড ফিচার হিসেবে প্রকাশতি ।ফিচারটি লিখেছেন ভিমরুলের নিয়মিত লেখক ডিজিটাল দুষ্ট ছেলে Click This Link
)
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ১০:৫৭