১)
মেয়েটির সাথে তার বান্ধবীর কথোপকথনঃ
-হ্যালো, রুমা
-হ্যাঁ, সেতু বল
-কি রে, তোর কণ্ঠ এমন শুনাচ্ছে কেন?
-দোস্ত, মন খারাপ
-কেন, কি হইছে?
-অমিত আমাকে ধোঁকা দিয়েছে
-কেন কি হয়েছে রে?
-ও আর আগের মত আমার সাথে কথা বলে না, আগে আমার সাথে দেখা করার জন্য অস্থির হয়ে থাকত, কোথাও দেখা করার কথা বললে আমার আগেই গিয়ে বসে থাকত, রাতের পর কথা হত, আমাকে গান গেয়ে শুনাত, আমার ভার্সিটির সামনে ছুটি না হওয়া পর্যন্ত বসে থাকত, তোর মনে আছে গত বছর আমার জন্মদিনে ও কি করল?
-হ্যাঁ, মনে আছে।
-অথচ, সেই অমিত এখন কেমন জানি হয়ে গেছে, মোবাইল করলে সবসময় ধরে না, ধরলেও ঠিক মত কথা বলে না। আগের মত দেখা তো করেই না, ওর সাথে আমার শেষ বার দেখা হয়েছিল এক সপ্তাহ আগে। সবসময় কেমন জানি অন্যমনস্ক হয়ে থাকে। আমার কি মনে হয় জানিস?
-কি?
-ও অন্য কোন মেয়ের প্রেমে পড়েছে। আমিও কম ঘাগু না, আমার সাথে তেড়িবেড়ি করলে মেসেজের সবগুলা স্ক্রিনশট নিয়ে দিব ফেসবুকে ছেড়ে, তখন বাছাধন বুঝবে কত ধানে কত চাল।
ছেলেটির সাথে তার বন্ধুর কথোপকথনঃ
-হ্যাল,অমিত
-দীপ্ত, কি অবস্থা
-এইত ভালো, তোর কি অবস্থা?
-ভালো নাই রে, মনটা খুব খারাপ
-কেন?
-পড়ালেখা তো শেষ করলাম, চাকরি খুজছি, কিন্তু পাচ্ছি না। বাবা মা আশা করে আছেন এখন আমি সংসারের হাল ধরব, ছোট বোনটাকে বিয়ে দিব। ওই দিকে সেতু কয়েক দিন আগে বলল, ওর বিয়ের জন্য নাকি বাসা থেকে চাপ দিচ্ছেন। এসব নিয়ে এত চিন্তায় আছি যে সেতুকে সময় দেয়াই হয় না। গত মাসে ওর জন্মদিন ছিল, আমি ভুলেই গেছিলাম, বেচারি খুব রাগ করেছে মনে হয়। ওর সাথে আগের মত কথা কোথাও বলতে পারি না, দেখা করতেও লজ্জা লাগে। কবে যে একটা চাকরি পাব। আর ভালো লাগে না রে।
২)
মেয়েটি ছেলেটির বুকে মাথা গুজে, হাতদিয়ে জড়িয়ে ধরে আছেঃ
মেয়েটি চিন্তা করছে, এত দিন পরে একটা স্বস্তির জায়গা খুঁজে পেল। বাসার এত অশান্তি, ভার্সিটির পড়ালেখার চাপ সব কিছু পেছনে ফেলে এই ছেলেটির হাত যখন ধরে তখন আরও অনেকদিন বাঁচতে ইচ্ছে করে, পৃথিবীটাকে অনেক অর্থপূর্ণ, মধুর মনে হয়।
ছেলেটি চিন্তা করছে, যাক এত দিনে মেয়েটাকে বাগে পাওয়া গেল। বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে যে খেলায় সে মেতেছিল তাতে সে হারছে না। এখন জাস্ট সুযোগ বুঝে অন্তুর ফ্ল্যাটে নিয়ে যেতে পারলেই হল।
৩)
বৃষ্টি হচ্ছে, বর্ষার প্রথম বৃষ্টিঃ
শহরের কালো পিচের রাস্তায় বৃষ্টির পানি জমে এক অন্য রকম সৌন্দর্য তৈরি করেছে। এরই মাঝে ছেলেটি খালি পায়ে হেঁটে যাচ্ছে। আশেপাশের মানুষজন অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। কিন্তু এসব কিছুই তাকে স্পর্শ করতে না। মনটা বড় উতলা হয়ে আছে। মেয়েটা মেধাবী, অনেক ভালো ছাত্রী। ছেলেটির সাথে একই মেডিক্যাল কলেজে পড়ে। ছেলেটি অনেকভাবে মেয়েটিকে তার মনের কথা বলতে চেয়েছে, কিন্তু মেয়েটির এতে কোন ভ্রুক্ষেপই নেই। বর্ষার প্রথম বৃষ্টিতে ভিজে কোন কিছু চাইলে নাকি তা পুরন হয়।
‘হে, পরম করুণাময়, আমার মনের আশা পুরন করে দাও, মেয়েটিকে আমার করে দাও। আমি আর কিছুই চাই না।‘
বর্ষার প্রথম বৃষ্টিতে মেয়েটিও ভিজছে। মেয়েটিরও মন খারাপ। অনেক দিনের সুপ্ত ইচ্ছেটা তারও যে পূর্ণ হচ্ছে না। বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে সেও প্রার্থনা করছে-
‘হে সৃষ্টিকর্তা, আমি তোমার কাছে কখনো কিছু চাই না। আজ চাইছি, এইবার আমার মনের আশাটা মিটিয়ে দাও। ফাইনাল প্রফে আমাকে ফাস্ট করে দাও’ :p :p
****************************
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১২:১৯