somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি কি সত্যিই ভারতের দালাল? -- দেব দুলাল গুহ

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শেখ হাসিনার আমলে ৪ বছরে ভারতে ইলিশ গেছে ৫৫৪১ টন। আর ড. ইউনূস সরকার এই এক মাসেই পাঠাচ্ছেন ৩ হাজার টন ইলিশ! তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে, ভারত বয়কটের সুফল তাহলে কে বা কারা ভোগ করছে? ভারতের প্রকৃত দালাল কে বা কারা? র এজেন্ট কে? আমি, পিনাকী ভট্টাচার্য নাকি...??

উল্লেখ্য, এই বছরের শুরুর দিকে পিনাকী ভট্টাচার্য্য "মোদির আগা কাইট্টা আইসেন" শিরোনামের ভিডিওতে আমাকে র এজেন্ট বলেছিলেন, আমার নাকি কোটি টাকার সম্পদ আছে ঐদেশে! তারপর প্রাণনাশের হুমকি পাই, যা প্রশাসনকে জানালে আমার ৫০০ কিমি দূরে বদলি হয়। তার ঐ মন্তব্যকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সেই সম্পদের প্রমাণ দেখাতে বললে তিনি কোনো প্রমাণ দিতে না পেরে আমার ভাইরাল ও জনপ্রিয় ফেসবুক আইডি খেয়ে দিছে তার চ্যালারা।

জীবনে মাত্র ৩ বার ভারত গেছি অল্প দিনের জন্য, মায়ের উন্নত চিকিৎসার্থে ও তীর্থস্থান ভ্রমণের জন্য, প্রতিবারই সরকারি নেভি ব্লু পাসপোর্ট নিয়ে। তার মধ্যে দুবার ট্রেনে আমাদের উপর প্রাণনাশের চেষ্টায় হামলা হয়েছে এবং লিখিত FIR করে এসেছি। আমি যদি এজেন্ট হতাম, আমাকে তো তারা জেড লেভেলের নিরাপত্তা দিতো! তাই না?

আমি জন্মগতভাবে হিন্দু, কিন্তু আমার বাবা কবি বাবু ফরিদীর ২০০৮ সালে রহস্যজনক মৃত্যুর পর আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় আসে বাবার লাশ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ায় সবাই অবাক হয়েছিলো, যারা ৪০ বছর ধরে তাঁর বন্ধু ছিলেন, তাঁরাও। এতটাই উদারমনা, প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ছিলেন আমার বাবা। গত ১৫ বছর খন্দকার মোশাররফ হোসেন (শেখ হাসিনার বেয়াই) ও তাঁর সমর্থকরা আমাদের উপর কয়েক দফা হামলা চালায়, মন্দির-ঘর ভাঙে, আমাদেরকে এখনও তার অনুসারীরা একঘরে করে রেখেছে। আমি বারবার তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেয়ায় তাকে নির্বাসনে পাঠান খোদ শেখ হাসিনা। অগাস্টে যদি দেশ দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়ে থাকে, তবে ফরিদপুর স্বাধীন হয়েছে আরও ২+ বছর আগেই, আমার হাত দিয়ে। এজন্য আমার চাকরি ও জীবনের অনেক ক্ষতি হয়েছে ও হচ্ছে। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, কবি, সংগঠক, সাহিত্যিক, সাবেক সরকারি চাকুরে ও আইনজীবীর ছেলে হয়ে প্রগতিশীল লেখা লিখলেই কি ভারতের দালাল হয়ে গেলাম? চাকরি পেয়েছি নিজের মেধায়, কোটা দিয়ে নয়। ২০১৯ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম, ঐ আইডিতে অনেক লেখা ছিলো এ নিয়ে। চাকরি জীবনে সবচেয়ে বড় বৈষম্যের ও নিপীড়নের শিকার এই দেশে আমিই হয়েছি।

যদি আমি দালাল হয়ে থাকি এরপরেও, তাহলে এই দেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সবাই ভারতের দালাল। যারা ভারতকে এটা-ওটা পাঠায়, সুসম্পর্ক রাখে, তারাও। আসলে বৃহত্তম শক্তিশালী প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক রেখে আম্রিকা-কানাডার মতো একসাথে এগিয়ে যাওয়াতে উভয়েরই লাভ। প্রতিবেশীর সাথে সারাক্ষণ যুদ্ধ করতে থাকলে আগাবেন কীভাবে? নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বুঝি!

এখনও যারা হুমকি দিচ্ছেন, তাদেরকে বলি, আমি লীগের কোনো পদে কোনোদিন ছিলাম না। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল কাউকেই নকল করতে দেইনি, নকল পেলে বহিষ্কার করেছি। বিশ্বাস না হলে ফরিদপুরে খোঁজ নেন। স্কুলফ্রেন্ড ফরিদপুর ছাত্রদলের কায়েসকেই জিজ্ঞেস করতে পারেন! দুর্নীতি করিনি, করতেও দেইনি। তাই আমাকে বারবার বদলি করে দেওয়া হয়। একরকম ওএসডি করেই রেখেছিলো ৬ বছর। তিরস্কার দণ্ডও ফিয়েছে অন্যায়ভাবে। আমার এ দিন পরিবর্তন হবে না। কারণ এখন যারা ক্ষমতায়, তাঁরা আমাকে চিনেন, প্রায় অনেকেই প্রথম আলোতে লেখেন ও অবশ্যই পড়েন। যোগ্য মূল্যায়ন না পেলেও আমি প্রথম আলোতে দীর্ঘদিন লিখেছি। কিন্তু তাই বলে আমি অন্যায়-দুর্নীতির বিরুদ্ধে ও দেশের পক্ষে লেখা বন্ধ করিনি, করবও না। তাই আমার এ জীবনে আর ভালো থাকাও হবে না। এখনও অসুস্থ মাকে ফরিদপুরে একা রেখে সীমান্তে দেশসেবা (চাকরি) করছি।

বাবার আদর্শে চলি, চলেছি এবং চলবো। তাতে আপনি আমাকে যার দালালই বলেন না কেন! আমি আসলে মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল চেতনার, দুর্নীতি-অন্যায়-জুলুমমুক্ত বাংলাদেশের দালাল। জয় বাংলা।

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫৪
১৪১ বার পঠিত
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

১. ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ২:০২

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলমানেরা ভাগ্যন্নোয়নের জন্য পশ্চিমে গিয়ে, পশ্চিমের সংস্কৃতিকে হেয় করে ধর্মের নামে।

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২০



এখন পশ্চিম চাহে যে, মুসলমানেরা যেন "ভাগ্যান্নষন"এর জন্য তাদের দেশে আর না যায়; কারণ, মুসলমানেরা পশ্চিমের সংস্কৃতিকে হেয় করার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে। একই আব্রাহামিক ধর্মের লোকজন হলেও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অতঃপর সচিবালয়ের সেই পুড়ে যাওয়া কুকুর

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:০০




সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের পর ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আর পাল্টাপাল্টি দোষারোপের কারণে তদন্ত রিপোর্টে কী উঠে আসে সেটি নিয়ে বিশেষ আগ্রহ ছিল অনেকের। দুই দিকের আলাদা কক্ষে আগুন লাগা, কুকুরের মৃতদেহ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭২-এর স্বাধীনতার ঘোষণা পত্র ২০২৪-এর অর্জন না

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৫:৩৯


৭২-এর রক্তস্নাত সংবিধান বাতিল করে । নিজেদের আদর্শের সংবিধান রচনা করতে চায় এরা‼️বাংলাদেশের পতাকা বদলে দিতে চায়! বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ভালো লাগেনা এদের!জাতিয় শ্লোগানে গায়ে ফোস্কা পরা প্রজন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আয়নাঘর শুধু ক্যান্টনমেন্টেই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়েও ছিল

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, আয়নাঘর শুধু ক্যান্টনমেন্টেই ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়, হোটেল এমনকি ব্যক্তিগত বাড়িতেও ছিল। আপনারা শুধু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:০০

প্রতিযোগিতার এই দুনিয়ায় এখন আর কেউ নিজের মতো হতে চাই না, হতে চাই বিশ্ববরেণ্যদের মতো। শিশুকাল থেকেই শুরু হয় প্রতিযোগিতা। সব ছাত্রদের মাথায় জিপিএ ৫, গোল্ডেন পেতে হবে! সবাইকেই ডাক্তার,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×