somewhere in... blog

বিতর্কিত 'ঘাতক' ভণ্ড সাধু কান্তিবন্ধুকে সর্বোতভাবে সবকিছু থেকে বিতাড়িত ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা করুন।

২৭ শে জুন, ২০২৪ রাত ৯:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিতর্কিত 'ঘাতক' ভণ্ড সাধু কান্তিবন্ধুকে বাদ না দিলে রামকৃষ্ণ মিশনের শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানে যাব না। তাকে রেখে পূণ্যধামকে বিতর্কিত করবেন না। তাকে দেশে-বিদেশে সর্বত্র প্রতিরোধ করুন।

রামকৃষ্ণ মিশন, ফরিদপুরে আজ থেকে শুরু হয়েছে ৩ দিনব্যাপী শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠান। সেখানে আগামীকাল শুক্রবার দ্বিতীয় পর্বে সম্মানিত অতিথি করা হয়েছে মহানাম সম্প্রদায় বাংলাদেশের সভাপতি কান্তিবন্ধু ব্রহ্মচারীকে। ২০১৯ সালে শ্রী অঙ্গনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বন্ধুসেবক ব্রহ্মচারী ব্রহ্মচারী হত্যাকণ্ডের প্রধান কুশীলব তাঁরই দীক্ষাগুরু এই কান্তিবন্ধু। এ ছাড়াও ২০০৮ সালে কান্তিবন্ধুর আরেক শিষ্যর বাসায় আমার বাবা প্রয়াত সরকারি কর্মকর্তা অ্যাড কমল কৃষ্ণ গুহ ওরফে কবি বাবু ফরিদী এর রহস্যজনক অকালমৃত্যুর পিছে অনেকে তাকে দায়ী করেন। শ্রী অঙ্গনের কমিটির ৩০+ বছর আগের সদস্য আমার বাবা অন্যায়-দুর্নীতির প্রতিবাদে কলম ধরেছিলেন। শ্রী অঙ্গনে ভক্তদের দেওয়া অর্থের নয়ছয় করে তিনি তার দেশেবিদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বিত্তবান ও প্রভাবশালী ভক্ত-শিষ্যদের মাধ্যমে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়ে সাড়া বাংলাদেশে জগদ্বন্ধু আশ্রমগুলিতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আছেন। তার নানা দুর্নীতি-অনিয়মসহ অসাধু কর্মকাণ্ডের জন্য ভারতের মহানাম সম্প্রদায় আলাদা হয়ে যায়, তার আগে একীভূত ছিলো। বন্ধুসেবক ব্রহ্মচারীর হত্যাকণ্ডের বিচার তিনি হতে দেননি, যদিও এরপর শ্রী অঙ্গনের কমিটি ভেঙে দেয় জেলা প্রশাসন এবং তিনি সভাপতির পদ হারান। কিন্তু তৎকালীন ডিসি অতুল সরকার হিন্দু হওয়ায় হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সাহায্য করেন মন্দিরকে রক্ষা করার অজুহাতে। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাড সুবল চন্দ্র সাহাকেও কমিটি থেকে একই অভিযোগে বাদ দেওয়া হয়। এরপর গৃহীদের বাদ দিয়ে সাধুদের সমন্বয়ে কমিটি হলেও শ্রী অঙ্গনে শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন হচ্ছে, আত্মিক উন্নয়ন হচ্ছে না। নতুন গঠন সংবিধানও মানা হচ্ছে না। আমার বাবার করে দেওয়া অমরবন্ধু ব্রহ্মচারীর আমলের সংবিধানও মানা হয় না।

আমার বাবার মৃত্যুরহস্য উন্মোচনে তিনি বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। আমার চাকরির নানা ভোগান্তি, বারবার দূরে বিনা শোকজে বদলি, তরস্কার, স্থায়ীকরণে ৫ বছর বিলম্বের পিছে তিনি ও তার শিষ্যরা জড়িত। সাংবাদিক রাহুল রাহা তো সরাসরি আমাকে ফোন করে ফোনে হুমকি দিয়েছিলেন বন্ধুসেবকের লাশ নিয়ে মিছিল ও প্রতিবাদে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে এবং কমিটি ভাঙার কারণে। তিনি আমাকে সরাসরি বলেন, 'দাদা আপনি কমিটি থেকে গৃহীদের বাদ দেওয়ালেন কেন? সব মধু কি সাধুরাই খাবে?' আমি কমিটির ব্যাপারে কিছু করিনি, এটা জেলা প্রশাসকের এখতিয়ার ইত্যাদি জানালেও তিনি আমার কথা বিশ্বাস করেননি। কান্তিবন্ধু আমার মাকে তার থেকে মালা নিতে বাধ্য করেন এবং আমিষ বাদ দিতে বলেন। সেই থেকে আমার মা অসুস্থ। শ্রী অঙ্গনের দাতব্য চিকিৎসালয়ে আমার মা মাত্র ৫০০ টাকা মাসিক বেতনে ১৯ বছর ডাক্তারি করার পর কোনো নোটিশ না দিয়ে চেম্বার ভেঙে দেয়, পেনশন দেয়নি। মালা নিয়ে মাকে চুপ থাকতে চাপ দেন তিনি, যেন বাবার মৃত্যু নিয়ে কাউকে কিছু না বলে। আমার মা এতদিন আমার কাছে এসব চেপে রেখেছিলেন। এরপর শ্রী অঙ্গন দক্ষিণ পল্লীর মন্দির স্কুলে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রাক-প্রাথমিকের পড়ানো থেকেও আমার মাকে অন্যায়ভাবে সরানো হয় ও কেন্দ্র তুলে দেওয়া হয়। আমার মা ঐ চেম্বারের বাইরে আর কোথাও রোগী দেখেনি, এখনও দেখে না। অথচ তিনি ২০০১ সাল থেকেই ডি,এইচ,এম,এস পাশ করা ডাক্তার।

রামকৃষ্ণ মিশনের সাথে আমার সম্পর্ক ২০০৫ সাল থেকে। ঢাকা আশ্রমের বিবেকানন্দ বিদ্যার্থী ভবনে আমি ২ বছর থেকে নটরডেম কলেজে বিজ্ঞান শাখায় এইচ,এস,সি পড়েছি। এরপর ২০১৭ সালে সরকারি চাকুরী নিয়ে ফরিদপুরে আসার পর ফরিদপুর আশ্রমে অনেকবার গিয়েছি। কিন্তু কান্তিবন্ধু গং এর ইন্ধনে বারবার অপমানিত হয়েছি। আমাকে পূজার অঞ্জলি দিতে দেওয়া হয়নি। শ্রী অঙ্গন দক্ষিণ পল্লীতে আমাদেরকে একঘরে করে অনেক বছর ধরে যে নির্যাতন চালানো হচ্ছ আমাদেরকে বসতভিটা থেকে উচ্ছেদের প্রচেষ্টায়, তার পিছে তার সরাসরি হাত রয়েছে। সর্বশেষ রামকৃষ্ণ মিশন ফরিদপুরের গত অনুষ্ঠানেও প্রসাদ না দিয়ে আমাদেরকে মা-ছেলেকে অপমান করা হয়। সেই থেকে আর যাব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু গত সপ্তাহে দুজন মহারাজ রামকৃষ্ণ মিশন থেকে আমার বাড়িতে এলে তাঁদের সাথে খারাপ আচরণ করতে পারিনি। তাঁদেরকে যথাসাধ্য আপ্যায়ন করে চাঁদা বাবদ আমার সীমিত আয় থেকে ৫০০ টাকা দিয়েছি। তাঁরা জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও শ্রী অঙ্গন চায় না আমাদের বাড়িতে তাঁরা আসেন। তবু এসেছেন বলে আমি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছি। কিন্তু বিতর্কিত কান্তিবন্ধুকে কেন অতিথি করলেন, তা জানতে চাইলে তাঁরা সাধুদের মাঝে সম্প্রীতি রক্ষার কারণে করেছেন বলে জানান।

আমি এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তাকে যেন রামকৃষ্ণ মিশনসহ ফরিদপুর তথা সারাদেশের সকল ধর্মীয় ও প্ন্যান্য প্রতিষ্ঠানের আগামীকালের ও আগামীর সকল অনুষ্ঠানে না দেখি।

কান্তি বন্ধুকে ঈশ্বর/প্রভু শাস্তি দিয়েছেন। তিনি স্ট্রোক করেছেন, কথা বলতে গেলে কথা তোতলায়ে যায়। পাঠ করলে তার কথা বুঝা যায় না। তবুও তার মনে এত হিংসা যে তিনি আমাকে কোনো অনুষ্ঠানের দর্শোক সারিতে পেলেই বিওসিএস ক্যাডার, ঢাবির গ্রাজুয়েট, উচ্চশিক্ষিতদের নিয়ে কটূক্তি করেন, নানাভাবে অপমানিত করেন। রামকৃষ্ণ মিশনের গত বড় অনুষ্ঠানে (ঠাকুরের জন্মতিথি) ডিসি কামরুল আহসান তালুকদার স্যার ও অতি পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা স্যার নিজেই যা দেখেছেন। শ্রী অঙ্গনেরই সাধু পরাশর বন্ধু ব্রহ্মচারী জানিয়েছেন কান্তিবন্ধু শ্রী অঙ্গনের নামে দেওয়া অনুদান আত্মসাৎ করে কীভাবে মানিকগঞ্জে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন যাতে মৃত্যুর পর তার মঠটা শ্রী অঙ্গনে সবচেয়ে বড় হয়! অথচ শ্রী অঙ্গনের জন্য সবচেয়ে বেশী করেছেন যে সাধুরা, তাঁদের অন্যতম শ্রীমৎ অমরবন্ধু ব্রহ্মচারীর কোনো মঠই নাই। এই বিতর্কিত সাধুকে শ্রী অঙ্গন থেকে বিতাড়িত করতে হবে এবং কোথাও কোনো পাঠ বা অনুষ্ঠানে তাকে ডাকা যাবে না। ডাকলে সেই প্রতিষ্ঠান ও তাদেরকে ফরিদপুরের সচেতন সমাজ এড়িয়ে চলবে এবং সরিসটা উপযুক্ত শাস্তি দিবেন।
জয় জগদ্বন্ধু।

বন্ধু সেবকের লাশ উদ্ধার, আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া ও প্রতিবাদের ফেসবুক লাইভ ভিডিওগুলো এবং শ্রী অঙ্গন ও কান্তিবন্ধুর দুর্নীতি নিয়ে সাধুদের বক্তব্য আছে এই লিংকে
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০২৪ রাত ১১:৩১
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ফুলকপি পাকোড়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:২০



ফুলকপি নিয়ে চারিদিক বেশ হৈচৈ চলছে । ক্রেতা হিসাবে আমাদের কিছুই করার নেই দুঃখ প্রকাশ ছাড়া । তো ফুলকপির পাকোড়া খুব স্বাদের জিনিস । ঝটপট বানিয়ে ফেলুন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাইরে নাইরে না!!!!!!!!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:২২



বেশ কিছুদিন আগে দ্য সানডে টাইমসে একটা আর্টিকেল পড়ছিলাম। লেখক হিপোক্রেসির ধরন বোঝাতে গিয়ে একটা কৌতুকের অবতারনা করেছিল। কৌতুকটা এমন..........ছয় বছরের ছোট্ট জো তার বাবাকে গিয়ে বললো, ড্যাড, আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঈশ্বর!

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৯







নিটশের ঈশ্বর মৃত হয়েছে বহুদিন আগে, জড়াথস্ট্রুবাদের ঈশ্বর বদলে যায়নি, একটাই থেকেছে ; আব্রাহামিক ঈশ্বর অনেক ভাষায় কথা বলা শিখিয়েছে মানুষকে ;বুদ্ধের ঈশ্বর অভিমান করে কথাই বলতে চায়নি ; মিথলজীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানেরা ভাগ্যন্নোয়নের জন্য পশ্চিমে গিয়ে, পশ্চিমের সংস্কৃতিকে হেয় করে ধর্মের নামে।

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ০৩ রা জানুয়ারি, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:২০



এখন পশ্চিম চাহে যে, মুসলমানেরা যেন "ভাগ্যান্নষন"এর জন্য তাদের দেশে আর না যায়; কারণ, মুসলমানেরা পশ্চিমের সংস্কৃতিকে হেয় করার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করে। একই আব্রাহামিক ধর্মের লোকজন হলেও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:০০

প্রতিযোগিতার এই দুনিয়ায় এখন আর কেউ নিজের মতো হতে চাই না, হতে চাই বিশ্ববরেণ্যদের মতো। শিশুকাল থেকেই শুরু হয় প্রতিযোগিতা। সব ছাত্রদের মাথায় জিপিএ ৫, গোল্ডেন পেতে হবে! সবাইকেই ডাক্তার,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×