ভিজুয়াল মিডিয়ার নন্দিত ব্যক্তিত্ব ড. আব্দুন নূর তুষার http://www.mediafire.com/?icnunjymd2q' target='_blank' >বিজয়ের একতরফা সাফাই গেয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। আমি তার প্রতিটি পয়েন্টেরই উত্তর দিলাম সাপ্তাহিকের অনলাইন সংস্করণে আর সেগুলোই এখন পোস্ট করছি।
[বিশেষভাবে সতর্ক করছি: সাপ্তাহিক.কম এর সাইটটি ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত থাকায় লিংক ভিজিট করতে সতর্ক থাকতে হবে]
ডক্টর তুষার আপনি তুখোড় একজন উপস্থাপক, সফল বিতার্কিক, জনপ্রিয় মিডিযা় ব্যক্তিত্ব এবং একজন চিকিৎসকও। আপনার এই প্রতিক্রিযা়য় যেভাবে ফ্যাক্টস না জেনে বিজযে়র প্রতি বাযা়সড প্রতিক্রিযা় ব্যক্ত করেছেন তা সতি্যই দু:খজনক। আমি একে একে আপনার সবগুলো যুক্তিখণ্ডনের চেষ্টা করবো। আমি বিশেষভাবে অনুরোধ করবো এই বিষযে় একটি বিস্তারিত আলোচনা করার আগে আপনার অনেক তথ্য এবং পরিসংখ্যান আপনার জেনে নেযা় প্রযো়জন।
১. কযে়ক মিনিটেই বাংলা লেখার জন্য যে টুল তা অভ্রের ফোনেটিক লেআউট। আরো অনেক ফোনেটিক ছিলো এবং আছে কিন্তু এটি সবচেযে় বেশি রিচ ফিচার দিযে় সবচেযে় বেশি ছডি়যে়ছে। পেশাদার মুদ্রাক্ষরিক ছাডা় সাধারণ ব্যবহারকারি বিজযে়র মতো ফিক্সড লেআউট ব্যবহার করেন না। আপনার চেনা কয়জন অপেশাদার মানুষ আছেন যাদের জীবিকার জন্য বাংলা লিখতে হয়না অথচ বিজযে়ই লিখেন? তাহলে স্ট্যাটিস্টিকসে আপনার অনুমান সতি্য ভাবার একটু কারণ পেতাম।
২. 'ভাষা হোক উন্মুক্ত' শ্লোগানটি অভ্র টিম যুক্ত করেছে স্বেচ্ছাসেবি একটি দলের ভাষার প্রতি অবদান রাখার জন্য একটি সবার জন্য ব্যবহার্য সফটওয়্যার বানানোর জন্য। অনুমান করে "অভ্র তৈরি কারিদের কৌশল" বলার চেযে় একটু জেনে নিলে কী ক্ষতি ডাক্তার সাহেব? অভ্র টীমের কেউ পেটের দাযে় এই সফটওয়্যার তৈরি করেনি। আর অভ্রের প্রধান কোডার মেহদী হাসান খান আপনার মতোই ডাক্তার(সদ্য পাশ করেছে)। ওরা বলা যায় এখনো কচিকাচার বয়সের। ওদের উদ্দেশ্য এবং কৌশল ব্যক্তিগতভাবেও জেনে নিতে পারতেন। অভ্রের ফোনেটিকের কোডিং এখন সবার জন্য উন্মুক্ত। এটির পুরো সফটওয়্যারের কোড সবার জন্য উন্মুক্ত করার ব্যাপারেও পদক্ষেপ চলছে বলেই জানা গেছে।
৩. "অন্য কারো বুদ্ধি ধার করে সেটা বিনামূল্যে দিযে় দিলে তাতে বাধা দেযা় যেতে পারে।"
আপনাকে প্রমাণের আহ্বান জানাচ্ছি কার বুদ্ধি ধার করে বিনামূলে্য দিযে় দেযা় হযে়ছে?
৪. "কারো যদি নতুন বাংলা ফন্ট বা ওযা়র্ড প্রসেসর তৈরি করতে ইচ্ছা করে তবে তিনি সেটি মৌলিকভাবে করলেই পারেন। মোস্তাফা জব্বার সবাইকে চা বানানো এবং খাওযা় শেখালেন নিজের অর্থ, শ্রম ও বিনিযো়গের ঝুঁকি নিযে়, তাতে দু চামচ চিনি বেশি দিযে় সেটা ফ্রি করে দিলাম। কারণ নতুনভাবে এটা তৈরি করলে নতুনভাবে শূন্য থেকে শুরু করতে হবে। এতে অভ্র তৈরি যারা করেছেন তাদের কৌশলটা টের পাওযা় যায়, বিজযে়র লে আউটের ঘাডে় চডে় নিজেদের জনপ্রিয় করার চেষ্টা।"
আপনার এই মন্তবে্যর প্রেক্ষিতে আমাকে ভেবে নিতে হচ্ছে এই লেখাটি আপনি নিজে লিখেন নি। কারণ এখানে আপনার অজ্ঞতা প্রকট হযে়ছে বিশালভাবে। ফন্ট বা সফটওয়্যার কোনোটিই অমৌলিক ব্যবহার করা হয়নি অভ্রতে। ফন্টের কথা আনলেনই বা কী কারণে তাই বরং বোধগম্য নয়। অভ্রের জনপ্রিয়তা প্রধানতম কারণই হলো এর ফোনেটিক লেআউট। বিজযে়র অনুকরণে তৈরি ইউনিজয় অভ্রের মৌলিক নয় বরং তা একুশে.অর্গ এর ইউনিজযে়র অনুকরণে তৈরি। এমনকি সরকার অনুমোদিত ন্যাশনাল কীবোর্ড লেআউটটি আরো বেশি বিজযে়র লেআউটের মতো। তথ্যটি কি আপনার জানা ছিল?
৫. "কোনো পণ্য দীর্ঘদিন বাজারে থাকলে এবং তার পাইরেটেড কপি বাজারে থাকলে তার ওপর মানুষের অধিকার জন্মায় এটা কি যুক্তিসঙ্গত কথা? জনস্বার্থে কেউ তার ব্যবসাযি়ক পণ্যের লে আউট উন্মুক্ত করে দেবে এটা তো মামার বাডি়র আবদার হযে় গেল।"
পাইরেটেড কথাটি বলার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার ঘাডে় তা প্রমাণের দায় চেপে যায়। স্বযং় মোস্তফা জব্বারও পাইরেটেড অথবা হ্যাকড ইত্যাদি মিথ্যা অভিযোগ থেকে সরে এসেছেন। কারণ তিনি অন্তত জানেন তার কথাগুলো কেবলই আপনার মতো করে বাযা়সড করার জন্যই ব্যবহৃত। অভ্র কোনোভাবেই পাইরেটেড নয় এবং এটি পাইরেটেডভাবে তৈরি করার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণও পর্যন্ত নেই। মামার বাডি়র আবদারের ব্যাপারে বরং সরকারকেই জিজ্ঞেস করতে পারেন বিজযে়র মতো করে ন্যাশনাল লেআউট তৈরি হলো কেনো? একুশে.অর্গ কে জিজ্ঞেস করতে পারেন ইউনিজয় কেনো বিজযে়র মতো? আপনার সফটওয়্যার এবং কীবোর্ড লেআউট সংক্রান্ত অজ্ঞতা সতি্যই হতাশাব্যঞ্জক।
৬. 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' বর্তমান সরকারের একটি দেখানো স্বপ্ন যার কোনো গন্তব্য নেই। কোনো মাইলস্টোন নেই। সরকারের পদলেহী মোস্তফা জব্বার সাহেব এই ধূযা় তুলে সরকারের আরো অনুকম্পা এবং প্রশ্রয় আদাযে়র চেষ্টা করায় তাকে লেখক হয়তো কটাক্ষই করে থাকবেন।
৭. "মোস্তফা জব্বারের আক্ষেপ বা স্মৃতিচারণের বর্ণনা না দিযে় প্রতিবেদকের উচিত ছিল তার সরাসরি মতামত নেযা়। বার বার লেখাটিতে মেহেদি হাসান খানকে অভ্রের জনক বলার মানেটা কি? তিনি কি নিজে একলা এটি ডেভেলপ করেছেন? আর তিনি যদি ওমিক্রনল্যাবের মালিক হযে় থাকেন তাহলে এটা কি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নাকি কোনো চ্যারিটি? এই অভ্র সফ্টওযা়রটির কোথাও লেখা নেই যে এটি চিরকালের জন্য ফ্রি। লেখা আছে এটা ফ্রি ডাউনলোড করা যায়। কালকে এটা যে পণ্যে পরিণত হবে না এ ব্যাপারে কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা কোথাও নেই।" ---
মোস্তফা জব্বারের মতামত নেওযা় যেমন জরুরি ছিল তেমনি জরুরি ছিল আপনার পক্ষে মেহদী হাসান খানের মতামত নেবার। তাই নয় কি? কেন এই পক্ষপাত? মেহদী হাসান খান অভ্রের জনক এই কারণেই যে তার টীমে তিনি একাই এটির সম্পূর্ণ কোডিং করেছেন। অবিসংবাদিতভাবেই তার টিমের সদস্যরাই এই আখ্যা তাকে দিযে়ছে। আপনার কি সন্দেহ জাগে একজনের পক্ষে এমন একটি সফটওয়্যার তৈরি সম্ভব নয়? ওমিক্রনল্যাব এখনো পর্যন্ত একটি চ্যারিটি এর সংগঠক সবাই বয়সে তরুণ। আর এর সোর্সকোড একে একে উন্মুক্ত হচ্ছে সবগুলো প্ল্যাটফর্মের জন্যই।
৮. অভ্রে রোমান হরফে এ এম আই টাইপ করলে সেটা আমি হিসেবে দেখানোর সুযোগ আছে। বিষয়টি ভযা়বহ। তরুণ সমাজ আর বানান শিখবে না। ভবিষ্যতে পেপারলেস সমাজে তাকে আর বাংলা বানান লেখা বা শেখার দরকার অনুভব করতে হবে না। আমাদের বর্ণমালা টিকে আছে তার ব্যবহারে, সেটা ভুলে গিযে় তরুণ সমাজ বানান করবে টি ইউ এম আই, তুমি। এভাবে যদি বাংলা লেখা ঠিক হয় তাহলে একসময় বাংলা ভাষার বিরোধিতাকারীরা আমাদের উর্দু হরফে বাংলা লিখতে বলেছিল আবার ইংরেজি হরফেও বাংলা লিখতে বলেছিল। তাদের ভূত দেখতে পাই আমি। কম্পিউটারে বাংলা বানান রীতি মনে রেখে কাউকে বানান করতে হবে না। ২৫ বছর পরে এর কি প্রভাব হবে সেটা কেউ ভেবেছেন? ----
ফোনেটিক পদ্ধতিতে চায়নিজরাও টাইপ করে থাকে। আমি নিজে ফোনেটিকের ব্যবহারকারি বা ভক্ত কোনোটাই নই। আপনার মতো আমারও মনে হয় বাংলা বানান এবং অক্ষরের সাথে সংযোগ থাকে ফিক্সড লেআউটে। কিন্তু টাইপিং শেখাবে কে? কোন লেআউটে তা শিখবে? ফোনেটিকে কোনোকিছু না শিখেই কযে়ক মিনিটে অনাযা়সে বাংলা লেখা যায় জেনেও কয়জন ফিক্সড লেআউটের কমপক্ষে ৩০টি পজিশন মুখস্ত করবে? নন্দ ঘোষ অভ্র বা অভ্র টিমের হতে হবে কেনো? ফোনেটিক লেআউটের মৃত্যু চান আপনি? নাকি যারা ফোনেটিকে অভ্যস্ত তাদের বাংলা লেখা রহিত করতে চান?
১০. "তবে লে আউট এর মিল দেখে মনে হয় এখানে খানিকটা হলেও একই কোডিং থাকতেই হবে।"
আপনার পরিচিত সফটওয়্যার ডেভেলপারদের সাথে কথা বলে দযা় করে জেনে নিন ব্যাপারটি। অনলাইনে অভ্র ছাডা়ও বাংলা লেখা যায়। আর তা যায় উন্মুক্ত সোর্সকোড জাভাস্ক্রীপ্ট দিযে়। আমি এখানে টাইপ করছি তেমনি ইউনিজয় লেআউট দিযে়। অর্থাৎ সাপ্তাহিক.কম নিজেরাও মোস্তফা জব্বারের সোর্সকোড চুরি করেছে বা পাইরেট করেছে। যেহেতু লেআউট মিলে যায় সুতরাং আপনার সুবর্ণ সূত্রে মিলে গেল খাপে খাপ। কিন্তু আমি একজন প্রোগ্রামার বলেই জানি তেমন কিছুই ঘটেনি। দযা় করে এভাবে পক্ষপাতমূলক প্রতিক্রিযা়র পূর্বে যথেষ্ট তত্ত্ব ও তথ্য সংগ্রহ করে নেবেন।
১১. "ইউনিকোড পুরনো বিজযে়র ভার্সনে থাকবে না এটাও তো স্বাভাবিক। পুরনো টযো়টা গাডি়তে কি এখনকার মতো টিভি, ন্যাভিগেটর এসব ছিল?"
---
কিন্তু আপনার কি তাতে?
১২. অভ্র ফন্ট পাইরেসি করে নাই এটা বলা যাবে যদি অভ্রের ফন্টগুলোর চেহারা বিজযে়র ফন্টগুলোর চাইতে একদম আলাদা হয়। যারা অভ্র ব্যবহার করেন তারা এটা ভালো বলবেন। ফন্ট কেবল কোডিং না, এটার চেহারাটাই আসল। ব্যবহারকারী ফন্টের কোডিং দেখেন না এর চেহারা দেখেন। ভিন্ন কোডিংএ একই চেহারার ফন্ট তৈরি করা সম্ভব। সেটাও কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন কারণ সেখানে ডিজাইন নকল করা হযে়ছে।
এই গুরুতর অভিযোগটি আপনি কার প্ররোচনায় করলেন? স্বযং় মোস্তফা জব্বারও তো এমন অভিযোগ তোলেননি। নামকরা প্রথম সারির দৈনিক গুলোও সোলায়মানলিপি ফন্টে অনলাইনে প্রকাশ করে থাকে। ফন্টটির ডেভেলপার অভ্র টিমেরই নয় বরং একুশে.অর্গ এর। এই অভিযোগের সাথে কোন কোন ফন্ট নকল হযে়ছে বলে ধারণা করা হযে়ছে তার তালিকা দিন।
১৩. আগে এ কার, পরে একার, দুবার চাপ, একবার চাপ এগুলো মৌলিক পার্থক্য না। মৌলিক পার্থক্য বুঝতে হলে দেখতে হবে, জে চাপলে ক হয় কিনা? কিংবা জি চাপ দিযে় দিযে়ই যুক্তাক্ষর বানাতে হয় কিনা?
ঠিক আছে। ন্যাশনাল কীবোর্ড আর ইউনিজয়ও দেখুন। বাজারে বহুলভাবে প্রচলিত অন্য সফটওয়্যারে(লেখনি, প্রশিকাশব্দ, প্রবর্তন এবং আরো অগুণতি) দেযা় সরাসরি বিজয় নামের লেআউটগুলোও দেখুন। তারপর আসুন কেনো নন্দঘোষ অভ্রেই দোষ? ৫কোটি টাকা নির্বাচন কমিশন থেকে মোস্তফা জব্বার পেলেন না বলে?
১৪. অভ্রে ভুল তাডা়তাডি় সংশোধন করা যায় এটা অবশ্যই একটি সুবিধা। কিন্তু এটা তো লে আউটের সঙ্গে সম্পর্কিত না।
লেআউটের সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এটা বুঝলে আপনার এটাও বোঝার কথা যে লেআউটটি একা অভ্রই ব্যবহার করেনা। বাজারে আরো অনেকেই করে থাকে। সুতরাং একা অভ্র এর উত্তর দিতে বাধ্য থাকবে কেনো? সবার আগে কেনো ন্যাশনাল কীবোর্ডের বৈধতা নিয়েই চ্যালেঞ্জ করবেন না?
১৫. "এক বাটনে চাপ দিযে় ফন্ট বদলানো এটা অনেক অনেক পেছনে পডে় থাকার বিষয় না। যারা একসময় ওযা়র্ড স্টার আর ওযা়র্ড পারফেক্ট ব্যবহার করতেন তারা জানেন যে সেগুলো অনেক ক্ষেত্রে এমএস ওযা়র্ডের চেযে় এগিযে় ছিল।
এটা ব্যবহারকারীর অভ্যাসের বিষয়। বিজযে়র ব্যবহারকারীরা অভ্যস্ত বলেই বিজয় তার ফন্ট সিলেকশন ও স্টার্টিংযে়র ব্যাপারটি একই রেখে দিযে়ছে।"
আমি ওয়ার্ডস্টার এবং ওয়ার্ডপারফেক্ট দুটোরই ব্যবহারকারি ছিলাম(২৮৬ প্রসেসর আমলের)। ওগুলোর সাথে এমএসওয়ার্ডের তুলনা করলে যান্ত্রিক টাইপরাইটার বনাম টাইপরাইটার তুলনার মতো হয়ে যায়।
১৬. অভ্রের লিনাক্স ভার্সন আছে কারণ এটি ফ্রি। বিজয় যেহেতু ব্যবসাযি়ক পণ্য তাই এটার লিনাক্স ভার্সন না থাকাটাই স্বাভাবিক।
লিনাক্সে কি ফ্রি ছাড়া অন্য সফটওয়্যার থাকেনা? আপনার জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি কয়েকশো বা কয়েক হাজার ডলার দিয়ে কিনতে হয় এমন সফটওয়্যারও লিনাক্সে আছে। বিজয় বা অভ্রের মতো মামুলি কীবোর্ড ইন্টারফেস নয় সেগুলো। উদাহরণ জেন্ড স্টুডিও (৪০০ ডলার)
১৭. "অভ্র বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায় আর বিজয় টাকা দিযে় কিনতে হয়। এটা অবশ্যই পার্থক্য। যেমন সাপ্তাহিকে নেট ভার্সন ফ্রি কিন্তু আমি ছাপানো পত্রিকা টাকা দিযে় কিনি।
আামি কি এখন বলতে পারি যে ছাপানো সাপ্তাহিক বের করা যাবে না অথবা এটা ফ্রি করে দেযা় উচিত? প্রতিবেদক চাকরি না করে শুধু নেটে লেখালেখি করে ফ্রি সংবাদ দিলে মানুষের অনেক উপকার হতো এতে?
কিন্তু একদিন তিনি নিজেই সাংবাদিকতা ছেডে় দিতেন পেট চালাতে গিযে়। এ কারণেই সফ্টওয়্যারও বিক্রি করতে হয় কাউকে কাউকে।"
উদাহরণটি পুরোপুরি এক হলো না। অভ্র স্বেচ্ছায় তাদের সার্ভিস ফ্রিতে দিচ্ছে। টেড.কম এর ইদানিংকার আবিস্কৃত অনেক টেকনোলজি দেখলে হয়তো আপনার এমনও ধারণা হবে যে প্রিন্টেড পত্রিকার দিন শেষ হলো বলে। বিশ্বের অনেক পত্রিকাই আস্তে আস্তে কেবল অনলাইন সংস্করণে চলে যাচ্ছে।
১৮. অভ্রতে নিজের কী-বোর্ড নিজে তৈরি করে নেযা় যায়। এটা যেমন সুবিধা তেমন অসুবিধাও। মনে করেন আপনি কারো বাংলা টাইপিং স্পীড পরীক্ষা করবেন। অথবা কাউকে টাইপ করার জন্য বা কম্পোজ করার জন্য চাকরি দেবেন। সবাই সঙ্গে যার যার একটা কী-বোর্ড লে আউট নিযে় এলো। এটা পার্সোনাল ব্লগ লেখার জন্য ঠিক হতে পারে, কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য ঠিক না। কেননা এরপর সেই ডকুমেন্টটি এডিট করতে হলে সেই লোকটাকেই লাগবে আপনার। আপনার প্রতিষ্ঠানের একেকটি কম্পিউটারে থাকবে একেক লে আউটের কী-বোর্ড। সাপ্তাহিক-এর কর্তৃপক্ষ নিজে এটি তার অফিসে করতে রাজি হবেন?
আপনার লেআউট আর সফটওয়্যার সংক্রান্ত অজ্ঞতাই কেবল এই মন্তব্যে প্রকাশ পাচ্ছে। মজার ব্যাপার হলো, ইউনিকোডে লিখিত সেই ধরণের একটি ডকুমেন্ট যেকোনো সফটওয়্যার দিয়েই এডিট করা যাবে টাইপিস্ট যদি তা অভ্র ফোনেটিকেও করে থাকে তবুও তা জাতীয় বা ইউনিবিজয় ব্যবহার করেই তা এডিট করা যাবে। লেআউটের সাথে এর বিন্দুমাত্র কোনো সম্পর্ক নেই।
১৯. অটো কারেক্ট ফিচারের সমস্যাটিও কিন্তু কোনো মৌলিক পার্থক্য না। অটো কারেক্ট অফ করে দিলে বিজযে়র অক্ষর বা শব্দ পাল্টে যাওযা়ও বন্ধ হযে় যায়।
এর কারণ বিজয় ইংরেজীর আদলে আসকিতে করা। আর অভ্র ইউনিকোডে করা যা বাংলাকে সরাসরি সাপোর্ট করে।
২০. মোস্তফা জব্বারকে কাবুলিওযা়লার সঙ্গে তুলনা করাটা অন্যায়। একজন মানুষ ৩০ বছর একটি খাতে শ্রম দিলেন, দেশের কম্পিউটার ব্যবসাযী়দের বার বার নেতৃত্ব দিলেন, বাংলা ভাষাকে কম্পিউটারে কার্যকরভাবে ব্যবহার করার জন্য প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দিলেন।
এর সঙ্গে সুদে ধার দেযা় কাবুলিওযা়লার মিল কোথায়? তার নিজের ধারণাপ্রসূত সফ্টওয়্যারটির স্বত্ব নিজের কাছে থাকবে না এটা কি দাবি করা উচিত? তার মানে বিল গেটস, স্টিভ জবস কিংবা ফেসবুকের জুকারবার্গ সবাই তো কাবুলিওযা়লা।
ফেসবুকের ভেতরে বিজ্ঞাপনের টাকা তো তাহলে জুকারবার্গের উচিত আমাদের সঙ্গে শেযা়র করা।
তার সফটওয়্যারের সত্ত্ব নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলছেন না। প্রশ্ন হচ্ছে কীবোর্ড লেআউট নিয়ে। তিনি অতীতে মাইক্রোসফটকেও ফিরিয়ে দিয়েছেন বাংলার জন্য একটি ফ্রি লেআউট উপহার দেয়া থেকে। আর নিজের বিজয় কীবোর্ড প্যাটেন্ট করে নিয়েছেন তা থেকে পয়সা আদায় করার জন্য।
আমি যে বাংলা লিখছি আমি তো বিজয় বা অভ্র কোনো সফটওয়্যারই ব্যবহার করছিনা। লিনাক্সে অপারেটিং সিস্টেমেই কীবোর্ড লেআউট দেয়া থাকে। সেরকম উইন্ডোজেও থাকতো যদি মোস্তফা জব্বার বাধা না দিতেন। জাতীয় কীবোর্ড লেআউট তৈরি করার পর দেখা গেলো তা বিজয়ের সাথে প্রায় হুবহু মিলে যায়। কেনো? জব্বার সাহেবের কথা মতো এটিই সবচেয়ে অপটিমাইজড লেআউট বলে? আপনার মতে বাংলা লেখার একমাত্র লেআউট হওয়া উচিৎ বিজয়। তো এই মনোপলি করে দিলে আপনার কোনো লাভ-ক্ষতি জড়িত থাকবে কি?
২১. ২০০৩ সালে ইউনিবিজয় তৈরি করেছেন যারা, তার অনেক আগে থেকেই মোস্তফা জব্বারের বিজয় লে আউট বাজারে ছিল। তাই মাত্র ৮টা কি অদল বদল করে ১০৫ টা কী-বোর্ডের একটি লে আউটের সঙ্গে কোনো মিল নেই বলাটা কতটুকু যৌক্তিক দাবি।
পুরোপুরি বিজয় লেআউট ব্যবহার করে লেখনি সফটওয়্যারটি, প্রশিকাশব্দ, প্রবর্তনও এমন কমপক্ষে আরো ৫/৬টিতেও তাই। ন্যাশনাল কীবোর্ডে মাত্র ৩টি কী এর পার্থক্য। একুশে.অর্গ এর তৈরি ইউনিজয়(যার অনুকরণে ইউনিবিজয় প্রণীত)ও বিজয়ের সাথে প্রায় হুবহু মিলে যায়। নন্দঘোষ অভ্র তাহলে দোষটা এই করলো যে তার জনপ্রিয় সফটওয়্যারে কেনো ইউনিজয় লেআউট যুক্ত করলো? কিন্তু অভিযোগের আঙ্গুল কেবল অভ্রের প্রতি কেনো? কারণ, ৫কোটি টাকা নির্বাচন কমিশন থেকে হারানো। দেশের হাজার কোটি টাকা লুটে নিতে পারে রাজনীতিবিদগণ আর মোস্তফা জব্বার পারবেন না? যিনি বছরের পর বছর বিটিভির বস্তাপচা 'কম্পিউটার' নামক অনুষ্ঠান করে যাচ্ছেন নিজের পরিবার আর প্রতিষ্ঠানের প্রচারের স্বার্থে। যিনি কপিপেস্ট করে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যবই লিখেছেন। যদিও দেশে অনেক অনেক উচ্চশিক্ষিত কম্পিউটার বিজ্ঞানি আছেন তবুও তিনি কী করে সেই কাজ পান? তিনি কী ভারতীয় ফন্ট থেকে কপি করে নিজের করে ফেলেন নি?
২২. একজন ব্যবসাযী় যদি মনে করেন কেউ তার স্বত্ব লঙ্ঘন করেছে তিনি তো তার প্রতিকার চাইতেই পারেন। এটা নিযে় আইনসঙ্গত লডা়ই না করে, পত্রপত্রিকা, নেট কিংবা ব্লগে মোস্তাফা জব্বারকে কাবুলিওযা়লা, লোভী, কার্টুন ক্যারেকটার
কিংবা তাকে নিযে় অসম্মানজনক ছডা় কবিতা লেখা প্রকৃতপক্ষে অভদ্রতা ছাডা় আর কিছু না।
একাজটি অভ্র টিমের কেউই করছেন না। বরং করছেন স্বতস্ফুর্ত দেশি প্রবাসিগণ।
উইন্ডোজের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পূর্বে অনেক কঠিন ও দুসাধ্য বলে পরিচিত লিনাক্স এখন জায়গা করে নিচ্ছে। এক সময় আপনি যেমন কষ্ট করে ওয়ার্ডস্টার, ওয়ার্ডপারফেক্ট ব্যবহার করেছেন তেমন কঠিন তো নয়ই বরং লিনাক্সের উবুন্তু অপারেটিং সিস্টেম অনেকটাই ভিসতার মতোই সহজ। গালি দেয়া অবশ্যই মন্দ কাজ। তবে বিলগেটস কোথাও অভিযোগ করছেন না সেসব নিয়ে।
২৩. "সবাই তাদের সব সফ্টওয়্যার জনপ্রিয় হযে় গেলেই যদি ফ্রি করে দিতে বাধ্য হন সেটা কি এই শিল্পের অভ্যন্তরীণ বিকাশের জন্য সহায়ক হবে।"
তার সফটওয়্যার ফ্রি করে দিতে কেউ বলছে না। বরং লেআউট প্যাটেন্ট করাটাই তার অন্যায়। যা আগেই ব্যাখ্যা করেছি কেনো।
২৪. প্রতিবেদকের ব্যাপারে মন্তব্য করার প্রযো়জনবোধ করছিনা।
২৫. সফটওয়্যার ফ্রি করে দিতে কেউ দাবি করছেন না, সেটি বোধহয় আপনি খেযা়ল করেননি। বরং একটি লেআউট দরকার যেটিতে ফিক্সড লেআউটে লিখবে সবাই কোনো রয়্যালটি প্রদান ছাডা়ই। যেমন ন্যাশনাল লেআউটে হতে পারতো। কিন্তু সেটিই বিজয় লেআউটের কপিমাত্র। সেটিও কিন্তু ফ্রি এবং কোনো সফটওয়্যার নয়।
সাপ্তাহিক.কম এ তার প্রতিক্রিয়া এখানেই আমি মন্তব্যগুলো করেছি কিন্তু সাইটটি ম্যালওয়্যারে আক্রান্ত তাই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:১৫