somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"চা"

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


"চা" ছোট্ট এক অক্ষরের এ শব্দটিতে মিশে আছে ভোরের আয়েসী আমেজ, সাথে রোজকার পত্রিকা পড়ার সময়টুকুর মধুর সঙ্গ কিংবা বিকেলের অবষন্নতার নিমিষে চনমনে হয়ে ওঠা ভাবটিও। আর তাছাড়া অফিসের কাজের ব্যাস্ততায়, যে কোনো ভ্রমনের ফাঁকে কিংবা বন্ধু বান্ধবের আড্ডায় চা ছাড়া ভাবাই যায় না। এ ছাড়া অতিথি আপ্যায়নে দেশ বিদেশ, জাতি- ধর্ম- বর্ন নির্বিশেষে চা এক অপরিহার্য্য অনুষঙ্গ। কাজেই সোজা কথায় বলা যায় এই চা আজ পুরো বিশ্বের মানবজাতির কাছে অতি পরিচিত এবং সমাদৃত পানীয়।
যদিও চায়ের নানা ধরণ আছে। রয়েছে স্বাদ ও গন্ধের ভিন্নতা এমনকি চা বানানোরও আছে ভিন্ন ভিন্ন স্বকীয়তা। দেশ অথবা জাতি ভেদে চায়ের পরিবেশনাতেও রয়েছে বিভিন্নতা। কিন্তু আজকের এই বহুল পরিচিত বিশ্ব জন নন্দিত ও সমাদৃত এই পানীয়টির জন্ম ইতিহাস কি? কোথা থেকেই বা আবিষ্কৃত হয়েছিলো এই চা, তা কি সকলের জানা আছে?

চা আবিষ্কারের সেই গল্পটি-
খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৩৭ সালের কথা, চীনা সম্রাট শেন নাং তাঁর ভৃত্য পরিবেষ্টিত হয়ে জঙ্গলে গিয়েছিলেন এক আনন্দ ভ্রমণে জুন্নান প্রদেশে ।খোলা প্রান্তরে গাছের ছায়ায় বসে থাকবার প্রাক্কালে সম্রাটের জলপাত্রের ফুটন্ত পানিতে হঠাৎ বাতাসের ঝাঁপটায় পাশের ঝোপ থেকে কিছু পাতা উড়ে এসে পড়লো। পাতাটি তুলে ফেলার আগেই সেটা জলের রং বদলে ফেললো। সম্রাট শেন কৌতূহলী হয়ে জলের ঘ্রাণ শুঁকে দেখলেন এতে রয়েছে যেন অন্যরকম এক মাদকতা। সম্রাট তার স্বাদ নিলেন ও আনন্দিত হয়ে উঠলেন। পৃথিবীতে আবিষ্কৃত হলো এক নতুন পানীয়।
খুব অল্প সময়ের মধ্যেই চা এর ঔষধী গুণাবলীর স্বীকৃতি পেলো যা পরবর্তীতে চীনা পন্ডিত কর্তৃক অমরত্বের স্পর্শমনি হিসাবে বর্ণিত হয়েছে। খ্রিষ্টাব্দ ৪০০ শতকে চীনা অভিধানে চা স্থান পায় `কুয়াং ইয়া’ নামে। সেইসাথে বর্ণনা দেওয়া হয় চা তৈরীর পদ্ধতি। ৭২৫ খ্রিস্টাব্দে চীন সম্রাট সরকারী ভাবে এই পানয়ীর নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম করেন `চা’ যা আজকে পৃথিবীর অনেক দেশে একই বা কাছাকাছি নামে পরিচিত। কাজেই দেখা যায় চা এবং চা শব্দটির জন্মস্থান চীনেই এবং চৈনিক শাসক শেন নাং প্রথম চা আবিষ্কারক।

১৬০০ শতকে যে চা পা রাখে পশ্চিমাদের উঠোনে তা কেবল সুগন্ধীযুক্ত সবুজ চাই ছিলো। এখনকার মতো মোটা দানার কালো চা বা ব্ল্যাক টি তখনও আবিষ্কার হয়নি। সময়ের সাথে সাথে চা আরও মিহি হতে থাকলো এবং ব্রিটিশ রাজের প্রথম চা লন্ডনে বিক্রি হলো ১৮৩৯ সালে। দিনে দিনে ভারতের চা আরও উন্নত হতে থাকলো এবং ১৮৮৬ সাল নাগাদ ব্ল্যাক টি’র বাজার দখল করে নিলো।

১৬১০ সালের দিকে ইউরোপে চায়ের প্রবেশ ঘটে পর্তুগীজদের হাত ধরে। ১৭০০ সালের দিকে ব্রিটেনে চা জনপ্রিয় হয়।আর এই ইংরেজরাই প্রথম ভারতবর্ষের লোকদের চা খাওয়ানো শেখায়। ভারতের আসাম রাজ্যে প্রথম চায়ের চাষ শুরু হয়। তারপর আসাম থেকে ছড়িয়ে পড়ে দার্জিলিং, কেরালা এবং বাংলায়।


নানা রকম চা ও তার উপকারিতাগুলো-

কালো চা (ব্ল্যাক টি) - বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় এই কালো চা। কালো চা আমরা সাধারণত লিকার হিসেবে অথবা দুধ-চিনি মিশিয়ে পান করে থাকি। গবেষণায় দেখা গেছে, কালো চা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। তা ছাড়া এই চা নিয়মিত পান করলে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে, তবে তা হতে হবে দুধ ছাড়া চা।

সবুজ চা (গ্রিন টি) - চা-গাছের সবুজ পাতা রোদে শুকিয়ে তাওয়ায় সেঁকে এই চা প্রস্তুত করা হয়। সবুজ চায়ের গুণাবিল বলে শেষ করা যাবে না। এতে উচ্চহারে ক্যাফেইন থাকে, যা আপনার স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। নিয়মিত এই চা পান করলে ত্বক থাকে টান টান সতেজ।সবুজ চায়ের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্ষতিকর উপাদান রোধ করে ত্বককে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। সবুজ চা ত্বকের রোদ-পোড়া ভাব দূর করে।সবুজ চায়ের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ত্বকের ক্যানসারের সঙ্গে লড়াইয়েও রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। দাঁতের ক্ষয় রোধ, মাড়ি মজবুত করা তো এর নিয়মিত কাজেরই একটি। শুধু তা-ই নয়, এই চা নিয়মিত পান করলে শরীরের মেদ কোষে গ্লুকোজ ঢুকতে পারে না। কাজেই এই সবুজ চা ওজন কমানোর অন্যান্য যে কোনো ওষুধের চাইতে নিরাপদ যার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।সবুজ চা হাড়ের ক্ষয় রোধে বেশ কার্যকরি। সুতরাং লৌহ সবল হাড় পেতে পান করুন সবুজ চা। সোজাকথায় বলা যায় সবুজ চায়ের গুনাবলী বলে শেষ করা যাবেনা। সবুজ সজীবতায় চির সজীব থাকতে এই চায়ের জুড়ি নেই।

ওলং চা - এই চা অর্ধেক গাঁজন করেই প্রস্তুত করা হয়। অর্থাৎ প্রস্তুত প্রণালির ভিত্তিতে কালো চা আর সবুজ চায়ের মাঝখানে এর অবস্থান। সবুজ চায়ের মতো এর আছে বহুমুখী গুণ। বিশেষ করে চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার পর ওলং চায়ের লিকার পান করলে কোলেস্টেরল বাড়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে। ওলং চা বাংলাদেশে পাওয়া যায়, তবে এটা বহুল পরিচিত নয় এবং দামও কিছুটা বেশি।


নানান রঙ্গে ও ঢঙ্গে চা পরিবেশনা, রেসিপি এবং উপকারিতা -
রাস্তার টং ঘরের বিশাল টগবগে কেটলি হতে ছোট্ট ছোট্ট কাপে ঢেলে র" চা পরিবেশনা হতে শুরু করে রাজকীয় সোনার পেয়ালাতে দুধ, চিনি বা মধু মিশিয়েও চা পরিবেশনার নজির রয়েছে।

জনপ্রিয় টি- ব্যাগ পরিবেশনা-
এক পেয়ালা গরম পানিতে এই টি-ব্যাগের সুতোটি ধরে চুবিয়ে দিলেই হয়ে যায় মন মাতানো রং এর সুগন্ধী চা যা খুবই সুবিধাজনক পদ্ধতি। এই টি ব্যাগের আগের চেহারাটি মোটেও আজকের দিনের চৌকোনো টি ব্যাগের মতন ছিলোনা। বরং পোটলা করে যেন এক গোছা চাপাতাই বাঁধা থাকতো সেখানে।



এই টি ব্যাগের জন্ম নিয়েও রয়েছে একটি মজার ঘটনা। ১৯০৮ সালে নিউ ইয়র্কের চা ব্যবসায়ী থমাস সুলিভ্যান ছোট ছোট সিল্কের কাপড়ে তৈরী পুঁটুলিতে করে চায়ের নমুনা তাঁর কোনো এক ক্রেতার কাছে পাঠান। সেই ক্রেতা ভদ্র চা সমেত ওই সিল্কের পুঁটুলি গরম পানিতে দিয়ে চা বানানোর চেষ্টা করেন। এই শুনে সুলিভ্যানের মাথায় আসে টি ব্যাগের ধারণাটি। এরপরই তিনি টি ব্যাগের প্রচলন শুরু করেন।

নানা রকম চা রেসিপি ও তার গুনাবলী-

১) আদা চা এবং উপকারীতা- মনকে শান্ত করে এবং মানসিক চাপ কমিয়ে আদা চায়ের ভুমিকা অতুলনীয়। আর আদা চা যে খুশখুশে কাঁশি, গলাব্যাথা এই সব রোধে অপরিহার্য্য ভূমিকা পালন করে তা বোধ হয় আর কাউকে নতুন করে বলে দিতে হবে না। হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুকি কমিয়ে দিতেও আদা চা অনেক কার্যকরী। কারণ আদায় রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যামিনো এসিড যা শরীরে রক্তচলাচল বাড়ায় এবং হৃদপিন্ডকে সচল রাখে। আদা দা ধমনী থেকে অতিরিক্ত চর্বি সরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে।মাংস পেশীর ব্যথা কিংবা অস্থি সন্ধির ব্যাথাতে আদা চা খাওয়া উপকারী কারণ আদায় রয়েছে এমন কিছু বিশেষ উপাদান আছে যেগুলো প্রদাহ কমিয়ে দেয়।

আদা চা বানাতে পানি গরম করার সময় আদা টুকরা করে দিয়ে বেশ কিছুক্ষন জ্বাল দিতে হয়। এরপর চা পাতা ও চিনি দিয়ে নামিয়ে নিতে হয়। এছাড়া চা বানিয়ে তাতেও আদার কিছুটা রস মিশিয়ে চা পান করা যায়।


২) তুলসী চা - অসাধারণ উপকারী এই তুলসি চা সর্দিজনিত মাথা ব্যাথা, কাশি, সর্দি জ্বর ও ঠান্ডা লাগা দূর করে।এটি দুশ্চিন্তা থেকে রক্ষা পেতেও সাহায্য করে। তুলসী চা বানাতে ২ থেকে ৩ কাপ পানিতে ৫/৬ টি তুলসি পাতা ফুটাতে হবে। পানি ফুটে ১ কাপ পরিমাণ হয়ে এলে তাতে চা দিয়ে নামিয়ে গরম গরম পান করলে কাঁশী, সর্দি, মাথাব্যাথার উপশম হয়। এটি অ্যাসিডিটি নিরাময়ে অনেক জনপ্রিয়।

৩) লেবু চা- লেবু চা ওজন কমাতে অসাধারণ কার্যকরী। কালো চা বা লিকার চায়ের তুলনায় পুষ্টিগুণে এটি বেশি উপকারী। লেবু চা বানাতে লিকার চা তৈরি করে পরিবেশনের সময় পরিমাণমত লেবুর রস মিলিয়ে সাথে অল্প পরিমান চিনি বা মধু মিশিয়ে পান করা যায়।

৪)পুদিনা চা- পুদিনা চা বা মিন্ট টি পেটের বাড়তি মেদ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও গলা বসা, গলা ব্যাথা, সর্দি কাঁশি জ্বর নিরাময়ে সাহায্য করে।

পুদিনা চা বানাতে তাজা অথবা শুকনো দু’রকম পাতাই ব্যবহার করা যায়। ২ কাপ পানি, দেড় কাপ তাজা পাতা অথবা ১ চা চামচ শুকনো পাতা, স্বাদের জন্য চিনি, মধু ও লেবু দেয়া যেতে পারে। পানি ফুটিয়ে পান করার ২-৩ মিনিট আগে গরম পানিতে পাতা দিয়ে রেখে দিতে হবে নির্যাস বের হবার জন্য।

৫) মধু চা- মধু চা এটিও সর্দিজনিত মাথা ব্যাথা, কাশি, সর্দি জ্বর ও ঠান্ডা লাগা দূর করেতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। হালকা লিকারে মধু মিশিয়ে এই চা বানানো হয় তবে সাথে লেবু চিপে দিলেও শরীরের জন্য যেমনই উপকারী তেমনি সুস্বাদু হয়।

৬) জেসমিন টি- জেসমিন ফ্লাওয়ারের সুবাসযুক্ত এই চা দারুন জনপ্রিয়। সাধারণ সবুজ চা বা গ্রীনটিকে জেসমিন টি বানানো যেতে পারে। শুকনা চায়ের সাথে সন্ধার পরপর জেসমিন ফুলের পাপড়ি তুলে মিশিয়ে রাখতে হবে ও সকালেই সেসব বেঁছে ফেলতে হবে। এভাবে ৭ দিন পর ফ্লেভার ট্রান্সফার হয়ে যাবে।
এর পর ঠিক ৮০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডে তাপের পানিতে এক কাপে এক চামচা চা দিয়ে রাখবো ৪ মিনিট। এর সাথে চিনি বা মধু মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। এই চা টগবগে গরম কেউ খায়না। চাইলে ফ্রিজেও রাখা যেতে পারে। মানে আইস টি করে।

৭) গরম চায়ের বদলে ঠান্ডা ঠান্ডা হিম শীতল আইস টি -
আমরা সাধারনত গরম চা খেয়েই অভ্যস্থ। হিম হিম স্বাদের ঠান্ডা বরফযুক্ত চায়ের সাথে অনেকেই পরিচিত নন কিন্তু গরমে এক গ্লাস ঠান্ডা শীতল আইস টি বা বরফ চাও যে ক্লান্তিহরনকারী সে কথা অনস্বীকার্য্য।২ কাপ পানি, ১ চা চামচ চা পাতা, ৩ চা চামচ চিনি, ১ টেবিল চামচ লেবু রস, পুদিনা পাতা কুচি ২ চা চামচ, বরফের কিউব কয়েক টুকরা। চা পাতা ও চিনি দিয়ে ২ মিনিট জ্বাল দিয়ে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে এতে পুদিনা কুচি মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে দিতে হবে।২ ঘন্টা পর চা নামিয়ে খুব দ্রুত এতে লেবুর রস ও এসেন্স মিশিয়ে ছাকনী দিয়ে ছেঁকে নিতে হবে ও পেয়ালায় বরফ কিউব দিয়ে পরিবেশন করতে হবে।

৮) জাফরান টি- এক কাপ চায়ে বা হালকা লিকারে মাত্র ১ চিমটে জাফরানের মিশ্রনে নানা রকম উপকার পাওয়া যেতে পারে। জাফরানে রয়েছে পটাশিয়াম যা উচ্চ রক্ত চাপ ও হৃদপিণ্ডের সমস্যা জনিত রোগ দূর করে। হজমে সমস্যা এবং হজম সংক্রান্ত যে কোনও ধরনের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে জাফরান। জাফরানের পটাশিয়াম আমাদের দেহে নতুন কোষ গঠন এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষ সারিয়ে তুলতে
নিয়মিত জাফরান সেবনে শ্বাস প্রশ্বাসের নানা ধরণের সমস্যা যেমন অ্যাজমা, পারটুসিস, কাশি এবং বসে যাওয়া কফ দূর করতে সহায়তা করে। জাফরানের রয়েছে অনিদ্রা সমস্যা দূর করার জাদুকরী ক্ষমতা। ঘুমোতে যাওয়ার আগে গরম দুধে সামান্য জাফরান মিশিয়ে পান করলে অনিদ্রা সমস্যা দূর হবে। জাফরানের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান বাতের ব্যথা, জয়েন্টে ব্যথা, মাংসপেশির ব্যথা এবং দুর্বলতা দূর করতে অব্যর্থ ঔষুধ৷অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে রেহাই দিতে পারে সামান্য একটু খানি জাফরান৷ জাফরান দেহের কলেস্টোরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। ত্বকে ঔজ্বল্য বাড়ায় এবং বলিরেখা দূর করতে সহায়তা করে৷

৯) দারুচিনি চা -দারুচিনিতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফাইবার, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ এবং কয়েক ধরনের এসেনশিয়াল অয়েল। চায়ের সঙ্গে মধু, লেবুর রস এবং দারুচিনি সেদ্ধ পানি একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা হয় সুগন্ধযুক্ত চমৎকার পানীয়।পেটের যে কোন সমস্যা দূর করে, দারুচিনির নানাবিধ উপাদান আমাদের দেহের গ্যাস্ট্রিক, ক্যানসার, টিউমার এবং মেলানমাস রোগ প্রতিরোধ করে। দারুচিনিতে আছে ম্যাঙ্গানীজ যা আমাদের দেহের মজবুত হাড়, রক্ত ও দেহের অন্যান্য টিস্যু গঠনে সাহায্য করে থাকে। যে সকল মানুষের বাতে ব্যথার সমস্যা আছে তারা যদি দারুচিনির তেল বা চা পান করে তাহলে বাতের ব্যথার সমস্যা দূর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বেশ কিছু গবেষণায় এসেছে যে দারুচিনি আমাদের দেহের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রনে রাখে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য দারুচিনি খুব উপকারী।

১০) মাসালা চা- নানা প্রকার মশলায় রয়েছে নানা ঔষদী গুনাবলী কাজেই কয়েক প্রকার মশলার মিশ্রনে চা আমাদের নানাভাবেই উপকার করে থাক মাসালা চা বানানোর একটি মজাদার রেসিপি নীচে দেওয়া হলো।
পানি ২ কাপ, গুঁড়া দুধ – ৬ চা চামচ, চা পাতা –২ চা চামচ, চিনি -১ চা চামচ, লেবু পাতা ২ টা, আদাকুঁচি -১ চা চামচ, এলাচের দানা –২ টা, দারুচিনি- ১/২ টুকরা, মধু ১ চা চামচ।
চায়ের ডেকচিতে পানি,দুধ, চিনি,এলাচের খোসা, লেবু পাতা,আদা, দারচিনি মিশিয়ে ভাল করে জ্বাল দিতে হবে। জ্বাল হলে চাপাতা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ জ্বাল দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে। কিছুক্ষণ ঢেকে রেখে ছেঁকে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে এই মজাদার মশলা চা।

তবে মনে রাখিবেন, কোনো কিছুই অতিরিক্ত ভালো নয়, চায়ের এত এত উপকারীতার কথা ভেবে বা এমনিতেই কেউ কেউ ভালোবেসেই চা নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। নেশার বসে ঘন্টায় ঘন্টায় চা পান করে থাকেন। সেটি মোটেও কাম্য নয়। তবে দিনে চার-পাঁচ কাপ চা নির্দ্বিধায় খেতে পারেন, অবশ্যই তা যদি হয় সবুজ চা কিংবা রং চা! দিনে পাঁচ কাপের বেশি সবুজ চা পান করলে, যাঁরা চা পান করেন না, তাঁদের তুলনায় শতকরা ২৬ ভাগের হৃদ্রোগ কিংবা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুঝুঁকি কমে। পরিমিত পরিমাণ চা পান দেহের জন্য উপকারী কিন্তু অতিরিক্ত চা পানের অভ্যাস থাকলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে।

কাজেই পরিমিত চা পান করুন। সুস্থ্য, সবল ও চনমনে থাকুন সকাল সন্ধ্যা ও রাত।


উৎসর্গ- কালীদাস, ভূয়া মফিজ, শাহরিয়ার কবির ও মোঃ মঈনুদ্দিন ভাইদেরকে এবং আমি মুরগিভাইরে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৬
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানালেন ড. ইউনূস

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:১০





যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।শুভেচ্ছা বার্তায় ড. ইউনূস বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আপনাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×