চার-পাঁচ দিন আগে যে ভূয়া ডাক্তারের কথা বলে ছিলাম- ইচ্ছা করেই তার নাম পরিচয় বলিনি । আশা ছিল জাতীয় কোন মিডিয়ায় সে নিউজ হবে । হাতে হাতকড়া, বুকে 'আমি ভূয়া ডাক্তার' প্ল্যাকার্ড নিয়া টিভি পত্রিকায় ছবি আসবে । সেরকম কিছু চেষ্টাও করেছিলাম । পরে প্রতীয়মান হলো টাকার ডাইনোসর ঐ সব কর্পোরেট ক্লিনিকগুলি থানা পুলিশ মিডিয়া বশে না রেখে ব্যাবসা করেনা । সুতরাং মোল্লার দৌড় ফেসবুক পর্যন্ত । এ ফেসবুকেই তার পরিচয় দিচ্ছি । যদিও এমন মহা জালিয়াতির বিরুদ্ধে দেড়দিন স্হায়ী সামান্য একটা ফেসবুক ষ্ট্যাটাস কোন শাস্তির পর্যায়েই পড়েনা। না তার, না তাকে পালনকারী ক্লিনিক/ডায়াগনষ্টিক সেন্টারগুলির । বড়জোড় সে স্হানত্যাগ করে অন্যত্র প্রেকটিস শুরু করবে । চট্রগ্রাম পপুলারের সেই খোরশেদ যে কাজটা করে যাচ্ছে । কিন্তু শুধু এটুকু শাস্তিই কি তাদের প্রাপ্য?
যাক তিনি S.M.K Hassan (Mahmud।) ঢাকা মেডিকেলের ডাক্তারদের কাছে পরিচয় দেন রাজশাহী মেডিকেল থেকে পাস করা । আজ রাজশাহী মেডিকেলের ডাক্তারদের কাছে তিনি ঢাকা মেডিকেল থেকে পাস করা । অন্যদের কাছে ঢাকা বা রাজশাহী কিছু একটা বলে দেন । মজার ব্যাপার কোন মেডিকেলের কোন ডাক্তারই তাকে চিনেনা ।
তিনি ধানমন্ডি -৮ এর আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল ও কলেজগেটস্হ কেয়ার হাসপাতালে প্রেকটিস করেন । মোবাইল নাম্বার ও কথিত ডিগ্রীসমূহ তার ভিজিটিং কার্ডে দেয়া আছে। এটা কেয়ার হাসপাতালের কার্ড । কেয়ার এ সে মরনাপন্ন আইসিইউ এর রোগী দেখে । তার চিকিৎসাপদ্ধতি দেখে ডিউটি ডাক্তাররা মুচকি হাসে ।
তিনি কুমিল্লাতে এক ক্লিনিকে প্রতি সপ্তাহে একদিন করে প্রাকটিস করতে যেতেন। এভাবে প্রায় বছর দুয়েক হবে। কিন্তু উনার চিকিত্সা নিয়ে সবসময় একটা কানাঘুষা ছিল।একসময় সিভিল সার্জন অফিস এটা জেনে যায়। অফিস থেকে তার সমস্ত কাগজপত্র চাওয়া হলে তিনি বললেন পরের সপ্তাহে ঢাকা থেকে আনবেন। তারপর থেকে উনার আর কুমিল্লা যাওয়া হয়না। প্রশাসন তার আর কোনো ফলোআপ করেনি ।
সেদিন মডার্ন হাসপাতালের ম্যনেজার পর্যায়ের একজনের কাছে জানতে চাই, এ ডাক্তার যে ভূয়া তা তিনি জানেন কিনা? উনি ঘূরিয়ে উত্তর দেন, ভূয়া ডাক্তার সব সেন্টারেই আছে। আমি বলি, আপনাদের সেন্টারে আর কয়জন আছে এমন? তিনি ব্যাস্ততা আর অন্যমনস্কতার ভান ধরেন ।
পুলিশ প্রশাসন মিডিয়া সব এ প্রভাবশালীদের হাত করা । অপরাধীদের হাতে তবে হাত কড়া পরাবে কে? অনেক ভেবে দেখলাম, আসলে কারোই কোন দোষ নেই । দোষ শুধু এদেশের পোড়া কপালে রোগীদের কপালের ।
{লেখক ঃ ডা. আমিনুল ইসলাম ( FCPS; Medicine. MD;Chest deseases at BSMMU}