কৃতজ্ঞতাঃ শ্রদ্ধেয় ব্লগার এবং ব্লগে আমার গুরুজন আহমেদ জী এস ভাই। এই ছবিটা উনি উনার মন্তব্যে দিয়েছিলেন। দেখে আমার এতই পছন্দ হলো যে অরিজিনাল ছবিই পরিবর্তন করে দিলাম।
১।
থানায় ফোন:
অমুক থানায় হুট করে ফোন এলো-
- হ্যালো, এটা কি থানা?
- হ্যাঁ, এটাই থানা।
- আপনি কে বলছেন?
- আমি থানার ওসি বলছি।
- আপনার হাতে কি কোন ডান্ডা আছে?
- হ্যাঁ, আছে।
- তাহলে ওটা নিজের পেছনে ঢুকিয়ে দিন।
ফোন সাথে সাথেই কেটে গেল। ওসি সাহেব কিছুক্ষন চুপ করে রইলেন। এই কথা কি কারো সাথে শেয়ার করা যায়? কত বড় বেইজ্জতের ব্যাপার!
কিছুক্ষন পরে আবার ফোন এলো। ফোন তুলতেই-
- হ্যালো, এটা কি থানা?
- হ্যাঁ, এটাই থানা।
- আপনি কে বলছেন?
ওসি সাহেব বুঝলেন সেই বিচ্ছুটাই আবার ফোন করেছে। ওসিসাহেব এবার খুব সাবধানে জবাব দিলেন-
- ওসি বলছি।
- আপনার হাতে কি কোন ডান্ডা আছে?
- না, নেই।
- বাঃ!একবার বলতেই পিছনে ঢুকিয়ে নিয়েছেন?সাব্বাশ!
ওসিসাহেব কিছু বলার আগেই ফোন আবার কেটে গেল।
থানার ওসি সাহেব এবার মহা ক্ষিপ্ত হয়ে গেলেন। বজ্জাত ছেলে! পরপর দুই দুই বার যা তা ভাবে অপমান করেছে, এত বড় সাহস!দাড়া, আমি তোকে খুঁজে বের করে আনবোই!!!
ফোননাম্বার ট্রাক করে ঐ ফোন কার আর কোন বাসা থেকে এসেছে সেটা একদিন পরে ওসিসাহেব ঠিকই খুঁজে বের করলেন। পরের দিন ঐ বাসায় ফোন করতেই ধরলেন এক ভদ্রমহিলা।
ওসি সাহেব রাগত স্বরে বললেন-
- অমুক থানা থেকে ওসি বলছি। এই নাম্বার থেকে একটি বাচ্চাছেলে আমাকে ফোন করেছিল। ফোন করে আমাকে আজে বাজে কথা বলেছে!
- কি সর্বনাশ? কি বলেছে আপনাকে?
- বলেছে, আপনার হাতের কোন ডান্ডা থাকলে সেটা নিজের পেছনে ঢুকিয়ে নিন।
- এমা! কবে?
- গতকালকে সকাল বেলা।
- হায় হায়! আজকে দুপুর বেলা জানাচ্ছেন সেটা আমাকে? পাক্কা দেড় দিন ধরে ডান্ডাটা ঢুকিয়ে রেখেছেন? ছিঃ ছিঃ, একক্ষন বের করে ফেলুন। ছোট বাচ্চাদের কথা কেউ এত সিরিয়াসলি নেয়? শুধু শুধুই দেড় দিন কষ্ট পেলেন! বাড়িতে গিয়ে একটু মলম লাগিয়ে নেবেন!
২।
অত্যাচারিত, নিপীড়িত এক পুরুষের অশ্রুসজল কাহিনী:
এক মহিলা মারুতি গাড়ি চালিয়ে বাজারে যাচ্ছিলেন। রাস্তায় অন্যমনস্ক অবস্থায় ধাক্কা মেরে দিলেন এক বিএমডব্লু গাড়ি কে। বিএমডব্লু থেকে বেরিয়ে এলেন আরেক মহিলা। চিৎকার দিয়ে বলেন-
-তুই অন্ধ নাকি শালী? দেখতে পাসনি আমার এত বড় গাড়ি? আমার গাড়ি ঠিক করিয়ে দে, না হলে পুলিশ ডেকে কেস ধরিয়ে দিব!
মারুতি গাড়িতে বসা প্রথম মহিলাটিও সমান চিৎকার করতে করতে বল্লেন-
-ইশ, সুন্দরী গাড়ি নিয়ে বেরিয়েছেন কিন্তু চালাতে জানে না? কোন ঠিক ফিক করিয়ে দেব না! যা পারলে কিছু কর দেখি?
তারপর তিনি তার স্বামীকে ফোনে সবকিছু জানালে তার স্বামী বল্লেন-
-আমি এখন কিছুই করতে পারব না। অফিসের কাজে খুব বিজি। তুমি যা পারবে করে নাও। আমাকে এই নিয়ে আর কোন বিরক্তই করবে না।
বিএমডব্লু চালানো মহিলাটিও তার বয়ফ্রেন্ডকে ফোন করে বলল-
-এই শোন! তুমি আমাকে জন্মদিনে যে গাড়িটা গিফট করেছিলে, সেইটায় একটা এক্সিডেন্ট হয়ে গেছে। আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। একক্ষন চলে এসো না গো, প্লিইইজ।
বয়ফ্রেন্ড ফোন পাওয়ার পর পাগলের মতো ছুটতে ছুটতে অকুস্থলে পৌঁছে দেখেন ওনার গার্লফ্রেন্ডের গাড়িকে ওনার স্ত্রীর মারুতি গাড়িই ধাক্কা মেরেছে। কিছু বলার আগেই ওনার স্ত্রী উনার দিকে যেই দৃস্টিতে তাকালো, সেটা দেখার সাথে সাথেই উনি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে ভূলুন্ঠিত।
বয়ফ্রেন্ড ভদ্রলোক এখন হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি হয়েছেন। ডাক্তার সবকিছু চেক করে দেখেন কোথাও কোন সমস্যাই নাই! কিন্তু ভদ্রলোককে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেবার কথা বললেই আতঙ্কে আঁতকে উঠছেন। কিছুতেই হাসপাতাল ছাড়তে রাজী হচ্ছেন না উনি……
৩।
ফেসবুকে আজকালের স্ট্যাটাসঃ
গিন্নির স্ট্যাটাস – আজ করল্লা আর লইট্যা শুটকি দিয়ে গরুর মাংসের দো-পেয়াজি কর্ছি।
কর্তা অফিসে বসেই লাইক, আর কমেন্টে - ওয়াও!লাবু জানু,আই উইল বি হোম সুন খ্যান্ট উয়েঠ!
বাসার পিচ্চি - ডিসলাইক, আমি বার্গার খামু, এইটা খামু না!
ক্লোজ বান্ধবি – এই রেসিপিটা লিখে একক্ষন শেয়ার দে! আমিও আমার বয়ফ্রেন্ডের জন্য রাধঁবো!
পাশের বাসার ভাবি সাথে সাথেই লাইক,কমেন্টে – আমাকেও একবাটি দিয়েন তো আপা, টেস্টটা করে দেখি কেমন হয়েছে!
গিন্নির নিজের মা, কমেন্টে – আহারে! আমার মেয়েটা শ্বশুর বাড়ি গিয়ে কি কষ্টেই না আছে, এখনও চুলো গুতাচ্ছে,সবাই তোকে শুধু পোক করে নারে?
গিন্নির শাশুড়ি, কমেন্টে – কি যে রাধোঁ না তুমরা? আমারে এই আইটেম থেকে আনট্যাগ করো, আজ আমি সাগুদানা আর দুধ খাবো।
গিন্নির একমাত্র ননদ স্ট্যাটাসে লাইকও না ডিসলাইকও না। বয়ফ্রেন্ডের সাথে চ্যাটের কমেন্টে – জানু,আমাকে কিন্তু আজকে তুমি চাইনিজে নিয়ে যাবাই যাবা, ভাবি আজকেও ঘোড়ার ডিমের ছাইঁ পাশ রাধঁছে!
গিন্নির একমাত্র দেবর স্ট্যাটাসে লাইকও না ডিসলাইকও না। ফ্রেন্ডের সাথে চ্যাটের কমেন্টে – মামুরে, তোর মেসের বুয়ারে চাউল একপট বাড়ায়া দিতে ক! আমি আইতাছি, দুপুরে তোগ লগেই খামু।
বাসার দাড়োয়ান কমেন্টে – ম্যাডাম, দর্জা জানলা বন কৈরা রাইন্ধেন ফিলিজ, অলরেডি পাশের ফ্ল্যাটের লোকজন গন্ধের চোটে রিপোর্ট বাটনে কিলিক মারতাছে।
জরিনা খাতুন’স রেসিপি পেজ কমেন্টে – আপনি আমাদের রেসিপি নিজের নামে চলানোয় আপনাকে আনফ্রেন্ড কর্তে বাধ্য হলাম।
সবচেয়ে শেষে গিন্নির নিজের বুয়া কমেন্টে – ইসটেটাস পরে দিয়েন গো, খালাম্মা! আগে শপিং মল থাইকা আইসা রান্না বওয়ান খাওনের টাইম কিন্তু চইল্যা যাইতাছে….
সাথে সাথেই গিন্নির র্যাপিড এ্যাকশন – মানইজ্জত খাওনের দুষে একটু পরেই বুয়ারে ফেসবুকের ফ্রেন্ড লিস্টে ব্লক!
অতঃপর গিন্নির সেই সুপার ডুপার হিট পোষ্টের লাস্ট স্ট্যাটাস – ডিলিটেড!
৪।
রোমান্টিক পাত্রঃ
'সুপাত্র চাই' অ্যাডটা দৈনিক পত্রিকায় দেখে পাত্রের বাবা পাত্রীর বাসায় ফোন দিয়ে বিয়ের জন্য যোগাযোগ করলেন। বেশ কয়েকদিন কথাবার্তার পর ছেলেপক্ষ গেছে মেয়েপক্ষের বাড়িতে। অনেক আলোচনার পর পাত্রীকে দেখান হলো। পাত্রীকে দেখে পাত্র উদাস নয়নে জানালা দিয়ে বারবার আকাশের দিকে তাকাচ্ছে। যাই হোক, কথাবার্তার এক পর্যায়ে ছেলে এবং মেয়েকে একান্তে কথা বলার সুযোগ দেয়া হলো। আলাদা রুমে একত্রে বসার পর মেয়ের খুব করে জানতে ইচ্ছে করল ছেলের মনের কি অবস্থা! মেয়েঃ হুম, তা কি সিদ্ধান্ত নিলেন?
ছেলেঃ এখনো নেই নি। সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনার সাথে আমার একটা একান্ত ইচ্ছা আছে।
মেয়েঃ আমার সাথে একান্ত ইচ্ছা! বলেন কি? তা কি সেটা জানতে পারি?
ছেলেঃ আকাশ দেখলাম বেশ মেঘলা। কিছুক্ষনের মধ্যেই ঝুম বৃষ্টি হবে। আপনার সাথে এই ঝুম বৃষ্টিতে খুব করে ছাদে যেয়ে ভিজতে চাই!
মেয়েঃ উফফ! কি দারুন রোমান্টিক আপনি! আপনাকে আমার অসম্ভব পছন্দ হয়েছে। নিশ্চয়ই কবিতা লেখেন আপনি, তাইনা? আমাকে নিয়ে আজকেই একটা বৃষ্টিভেজা কবিতা লিখবেন! প্লীইইইইইজ!
ছেলেঃ ইয়ে, মানে! আসলে ব্যাপার তো সেটা না।
মেয়েঃ তাহলে আসল ব্যাপার কি?
ছেলেঃ আপনি যেই পরিমান সারা শরীরে আটা ময়দা মেখেছেন, বৃষ্টিতে ভালো করে না ভিজলে আপনার আসল চেহারা দেখা বা বুঝা যাবে না। বৃষ্টিতে ভালো মতো ভেজার পর আসল চেহারাটা দেখে আপনাকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব!
৫।
জ্বীনের আছরঃ
একটা মেয়ে গাইনকোলজিস্টের কাছে আলট্রাসনো করতে এসেছে। ডাক্তার সাহেব আলট্রাসোনোর প্রোবটি তার পেটে ধরে ডাটা নিয়ে দেখলেন প্রায় তিন মাসের একটি ফিটাস।
ডাক্তার সাহেব জিজ্ঞেস করলেনঃ “কার সাথে এসেছেন”?
মেয়েটি বললঃ “ননদের সাথে”
ডাক্তার সাহেব অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেনঃ “আপনার স্বামী আসেন নি?”
মেয়েটি বললঃ “উনি তো বিদেশে থাকেন”
ডাক্তার সাহেব জিজ্ঞেস করলেনঃ “কবে বিদেশ গেলেন?“
মেয়েটি বললঃ “প্রায় পাঁচ বছর আগে।“
মেয়ের মুখে এই কথা শুনে ডাক্তার সাহেবের প্রায় মাথা ঘুরে গেল! কি বলে এই মেয়ে? উনি আবার ভালো করে পরীক্ষা করলেন এবং দেখলেন যে, মেয়েটা সত্যিই সত্যিই তিন মাসের প্রেগন্যান্ট।
ডাক্তার সাহেব আবার বললেনঃ “আপনি কি জানেন যে, আপনি সন্তান সম্ভবা? তিন মাস চলছে আপনার!”
ডাক্তার সাহেব ভেবেছিল মেয়েটি কেঁদে কেটে একাকার হবে এবং সাহায্যের জন্য অনুরোধ করবে।
কিন্ত মেয়েটি বেশ নির্লিপ্ত ভাবে বললঃ “স্যার, আমার উপর একটা শয়তান জ্বীনের আছর আছে। এই শয়তান জ্বীনই এই কাজটা করছে। অসভ্যটা প্রায় রাতেই আমারে জ্বালাতন করে!“
ডাক্তার সাহেব মেয়ের এই কথা শুনে একেবারেই হতভম্ব! এই কথা বলার সময় মেয়েটির গলা বা চোখের পাতা পর্যন্ত কোন কিছুই কাঁপলো না।
কিছুক্ষন চুপ করে থেকে মেয়েটি খুব ঠান্ডা গলায় বললঃ “স্যার আমার এখন কি করা উচিৎ?”
জ্বীনের কথা শুনে আর মেয়েটির কথা বলার ধরন দেখে ডাক্তার সাহেবের ভীষণ রাগ হল, উনি রেগে গিয়ে বললেনঃ “কেন আপনার সেই শয়তান জ্বীনকেই জিজ্ঞেস করুন, এখন আপনার কি করা উচিৎ?”
ডাক্তার সাহেবের কথা শুনে মেয়েটা আর কোনই কথা না বলে চুপচাপ চেম্বার থেকে চলে গেল।।
বাসায় ফিরে ডাক্তার সাহেব রাতের বেলা খাবার সময় ঘটনাটা নিজের স্ত্রীর সাথে শেয়ার করে বড় আক্ষেপ করে বললেনঃ “প্রত্যেকটা মেয়ের যদি এরকম একটা করে জ্বীনের আছর থাকত,
তাহলে আমাদের মানে স্বামীদের যে কি অবস্থা হতো?”
৬।
নাস্তিকঃ
শোভা – বুঝলি সোমা, সিদ্ধান্ত নিয়েছি অয়নকে আমি কোনভাবেই বিয়ে করব না। অসম্ভব ব্যাপার! সারা জীবন এভাবে কাটানো সম্ভব না!
সোমা – সর্বনাশ, বলিস কি তুই? পাঁচ বছর ধরে টানা প্রেম করে এত ঝড় ঝাপটা সহ্য করে এখন বলছিস বিয়ে করবি না! কেন?
শোভা – অয়ন মাত্র সেদিন স্বীকার করলো আমার কাছে যে ও একেবারেই নাস্তিক! ঘোরতর নাস্তিক!
সোমা – ও নাস্তিক, তাতে তোর কি, তুই তো আর নাস্তিক না! তোর সমস্যা কোথায়?
শোভা – কি যা তা কথা বলিস? ও তো আল্লাহ, বেহেস্ত, দোযখ, তাকদীর কোন কিছুই বিশ্বাস করে না। কি ভয়ানক ব্যাপার চিন্তা করেছিস?
সোমা – দূর এত ঘাবড়াচ্ছিস কেন? তোকে আমি খুব ভাল করেই চিনি, সেই প্রাইমারী স্কুল থেকে! বিয়েটা আগে হতে দে! বিয়ের পর কয়েক দিনের মধ্যেই উনি নিজেই বুঝে যাবেন বেহেস্ত, দোযখ এইগুলি কি আর এদের মধ্যে পার্থক্য কি?
আর আল্লাহ, তাকদীর এইসব বিশ্বাস করে নাতো? মধুচন্দ্রীমার সময়টা কেটে যাবার পর, দিনরাত আল্লাহর কাছে নিজের তাকদীর নিয়ে অভিযোগ করতে করতেই সারাজীবন কাটিয়ে দেবে.....................
৭।
রং নাম্বারঃ
প্রতিদিনের মত বাসার ছাদে চারবন্ধুর চরম আড্ডা চলছে। হঠাৎ চোখ পড়ল পাশে বাসার পাশের বিল্ডিংয়ে। তিনতলার বারান্দায় নতুন পরীর আগমন। একসাথে চারবন্ধুই লাফ দিয়ে উঠল। পরীর রূপ দেখে একসাথে চারজনই দিওয়ানা। কেউ কাউকে ছাড় দিবে না। অনেক বাকবিতন্ডার পর টস হলো চারজনের মধ্যে। টসে জিতে সাকিব বিজয়ের আনন্দে তখন থেকেই মেয়ের সাথে ফিল্ডিং মারা শুরু করে দিল, আর বাকি তিনজনের মুড খারাপ!
তিনদিন পরে সাকিব এসে বন্ধুদের কাছে সাহায্য চাইল এই মেয়ে পটানো জন্য। নিজেরদের মধ্যে চুক্তি মোতাবেক বাকি বন্ধুরা সবাই একজনকে সাহায্য করতে বাধ্য। সাকিব আবার দেশের সদ্য ব্যান হওয়া একটা ব্লগে গল্প, কবিতা এইসব লেখালেখি করে। এইরকম সুযোগ হাতছাড়া না করে সাকিব অতি দ্রুততার সাথে পুরো ঘটনার উপর একটা পোস্ট লিখে ব্লগে ড্রাফট লিখে রেখে দিল। মেয়ের সাথে ফিট হলেই সুন্দরীর পরীর সাথে সেলফি তুলে সেই ছবি সহ উড়াধুরা একটা পোস্ট দিবে। সবার সাথে আলোচনা করে কালকে বিকাল বেলা প্রেম নিবেদন করার সময় ঠিক করে ফেলা হলো।
পরেরদিন বিকেল বেলা সুন্দরী পরী কেবল প্রতিদিনের মতো বাসার গেট খুলে বাইরে বের হয়ে আসছে। নীল জিন্স প্যান্ট আর সাদা ফতুয়ায় মেয়েটাকে হুর পরীর মতো লাগছে দেখতে! আগের প্ল্যান মোতাবেক প্রথম দুইবন্ধু লিটন আর রাকিব বাসা থেকে আনা আপেল কাটার ছুরি হাতে নিয়ে মেয়ের সামনে যেয়ে হাজির। ছুরিটা পরীর চোখের সামনে নাচাতে নাচাতে লিটন বলল-
-যা আছে বের করে দাও। না হলে কিন্তু এই ছুরি সোজা জায়গা মতো ঢুকিয়ে দেব।
পরীও ভয়তো পেলেই না বরং অবাক হয়ে দুইজন দেখল পরী হঠাৎ করে লাফ দিয়ে উঠে হাই-সাই-ফাই কি সব বলে উঠল আর মুহূর্তের মধ্যে দুইজনই বুকে জোড়া পায়ের কিক খেয়ে ভুপাতিত। ওদের দুজনের ভুপাতিত অবস্থাতেই পরী এসে আরো কয়েকবার বেশ জোরে জোরে ইচ্ছেমতো লাথি মারল! একটু দুরেই সাকিব গলির মুখে লুকিয়ে ছিল, পরীর উদ্ধার দৃশ্যের পরের পর্বের জন্য! হঠাৎ উঁকি দিয়ে দুই বন্ধুকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে কিছুই বুঝল না সাকিব! ঘটনা কি? এদিকে সময়ও হয়ে গেছে পরের দৃশ্যের।
ফুল স্লীভ শার্টের হাত গুটাতে গুটাতে হিরো বেশে সাকিব এসে ওর সুন্দরী পরীর সামনে উপস্থিত!
-কে আমার ডার্লিংরে ভয় দেখায়? এত্ত বড় সাহস কার?
কিন্তু ঘটনা ঘটল একদম উল্টো। দুই পায়ের মাঝে একটা জোরে কিক খেতে খেতে সাকিব শুনতে পেল-
-আমি তোর ডার্লিং! দাড়া, আজকে তোর ডার্লিংগিরি জন্মের মতো ছুটাইয়া দিব। আর কাউরে ডার্লিং বলিব না কোনদিনও............
পরের মুহূর্তগুলি সাকিব গুনেও শেষ করতে পারল না কতগুলি লাথি খেল ও। ওর হুর পরী যখন সন্তুস্ট চিত্তে ওকে আদর করে ছেড়ে দিল, সাকিবও তখন বিপুল বেগে মাটিতে ভুপাতিত। আশেপাশে লোকজন এইসব ধুন্দমার কান্ড দেখে ছুটে আসতেই এবার পরী চিৎকার করে বলে উঠল-
-ছিনতাইকারী, ছিনতাইকারী, আমাকে বাঁচান! ও মাগো, আমাকে মেরে ফেলল..................
আর তারপর ওদের সামনেই সেই হুরপরী হাউমাউ করে কেঁদে ফেলল! তিন বন্ধুই এই কান্ড দেখে সাথে সাথেই তাজ্জব বনে গেল!
লোকজন সামনে এসে ওদেরকে প্রশ্ন করার আগেই দেখে লিটনের হাতে এখনও সেই আপেল কাটার ছুরি ধরা। তারপর যা ঘটল সেটা সেদিনের নব্য ইতিহাস!
কমপক্ষে দশ বারজনের পাঁচ মিনিট গনধোলাই যখন ওদের উপর শেষ হলো, সাকিব কোন রকমে চোখ পিট পিট করে তাকিয়ে দেখলো চাইনিজদের মতো সাদা পোষাক পড়া পাঁচ বা ছয় জনের একটা দল ওর হুর পরীর সামনে এসে সবাই এক এক করে কিভাবে যেন মাথা নীচু করে কুর্নিশ করল। জ্ঞান হারানোর আগে ব্যাপারটা সাকিবের বড় মাথায় এই ছোট বিষয়টা ঢুকল না।
পরেরদিন হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে ওরা তিন জনই অবশেষে জানল যে সাকিবের সুন্দরী হুর পরী একজন কুংফুতে ব্ল্যাকবেল্ট পাওয়া প্রশিক্ষক। হঠাৎ লিটন কোন রকমে মাথা উঁচু করে সাকিবকে বললঃ
-হারামজাদা, তোর তো খাচ্চত খারাপ! তুই কি এই ঘটনা নিয়াও ব্লগে পোস্ট দিসছ?
-তাতে কি হইছে? সব ব্লগারদের দোষ, না? লোকজন যে দাদারে কবরে শোয়ানোর আগে দাদার লগে শেষ সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দেয়, সেইটার কোন দোষ নাই?
-কথা কম ক? পোস্ট দিসছ কিনা ক?
-হ, সকালেই দিছি। এখন তো দেখি এটা ব্লগের নির্বাচিত পোস্টেও চলে গেছে।
-কস কি? কি নামে পোস্ট দিসছ?
-আর কি দিমু? রং নাম্বার!
কিছু কথাঃ এই সিরিজের আগের পর্ব বেশ আগে লিখেছিলাম। এবার একটু অন্য ধরনের লেখা লিখলাম। ইন্টারনেটে প্রাপ্ত বেশ কিছু লেখা আবার নতুন করে ঘসেমেজে লিখেছি। উপরের লেখাগুলির কোন অংশই মৌলিক ভাবে আমার নয়। একজন গল্পকার হিসেবে নাপিতের মত ছুড়ির জায়গায় মাউস আর কিবোর্ড চালিয়েছি। নতুন এক ধরনের পরীক্ষাও বলা যায়! দেখি না ব্লগের সবাই কি বলে........................
এর আগের পর্ব পড়ুন: এক জীবনে বেশী কিছু আশা করা ভুল!
সবাইভ কামনা রইল।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, মে ২০১৯
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০৭