একদিন আকাশে ঝড় উঠবে অকস্মাৎ
বৃষ্টির বদলে ঝমঝম ঝরে পড়বে ফোটা ফোটা কবিতা।
কুণ্ডলী পাকানো ধোঁয়া উঠবে কবিতার শরীর থেকে এবং
সেই সাথে বারুদের কড়া গন্ধ।
একদিন আকাশ নদীর কাছে ধার চাইবে সুশীতল জলধারা,
নদী চাইবে বিলের কাছে, বিল মাটির কাছে।
মাটি বৃক্ষের কাছে চাইবে সারাজীবন উজার করে দেওয়া প্রানের
অনির্দিষ্ট কমিশন।
গাছ থেকে খট করে ঝরে পড়বে দুর্ভিক্ষপীড়িত একটা শুকনা পাতা।
খুনিরূপ ধারন করবে টকটকে লাল আকাশ,
সূর্যটা পুরনো জিনসের মতো রংচটা অ্যাশ।
সারা দুনিয়ার মাটির বিশ্বমোড়ল হবে বিরসা সাহারা।
চাইনিজ কুড়ালের উদ্যত তাড়া খেয়ের সুন্দরবন থেকে নির্বাসিত হবে “রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’।
জিম্নেসিয়ামের তৈরি অভিনেতারা ডিজিটাল ফরম্যাটে বন্দী করবে
পূর্ণিমা ভেদ করা চাঁদের কলংকের অসাধারণ গল্প!!
আর বিড়ালচখী নায়িকার ত্যাগের মহিমায় লজ্জিত হবে
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার।।
একদিন
মানুষের প্রয়োজনীয় অক্সিজেন নিলামে উঠবে মুক্তবাজারে
জীবনভর্তি ট্যাঙ্কের ঘর্ষণে আটলান্টিকে উঠবে বুদবুদ।
রক্তলাল হবে পদ্মা মেঘনা বুড়িগঙ্গার জল।
বিষাক্ত গ্যাসের চাপে লেলিনের মূর্তির মতো ভেঙ্গে পড়বে
তৃতীয় বিশ্বের গনতন্ত্র।
লাশের গন্ধে ভারী বাতাসে ছড়িয়ে পড়বে তৃতীয় শ্রেণীর অট্রহাসি।
মুখচোরা দেবীর (নেতা-নেত্রীর)অশ্লিল ঠোঁট থেকে অনর্গল নির্গত হবে
অসংখ্য অশুদ্ধ বঙ্গানুবাদ।
আমাদের নির্বোধ হাততালি তাকে আরও অশ্লিলভাবে আলিঙ্গন করবে।
একদিন পৃথিবীর প্রতিটি বসতি পরিপূর্ণ হবে পশুদের চিল-চিতকারে।
একদিন পশুরা মানুষের কাছে পশুত্বের ইজারা চাইবে।
একদিন মানুষেরা মানুষ হওয়ার জন্য সংগ্রাম করবে।।
তারপর একদিন... ... ...
নষ্ট বাতাসের আবরণ ভেদ করে পৃথিবীতে পৌঁছবে নতুন সূর্য।
পাখীদের কাকলিতে মুখরিত ভোর, দিনময় সমান বিশুদ্ধ থাকবে।
চিড়িয়াখানা আর খোলা আকাশের কাকদের মধ্যে থাকবেনা কোন স্বাস্থ্যগত পার্থক্য।
অনেকদিন পর আমরা সবাই মিলে দিঘীর জলে ভাসতে থাকব।
যেখানে থাকবেনা কোন রক্তচোষা জোঁক অথবা অকস্মাত আটকা পরবনা অদৃশ্য কোন চোরাই জালে,
যেখানে আড়াল থেকে শুধু শক্তিমান শিকারিরাই হাসে।
বাবা আকবর বাদশা আর পুত্র সেলিমের মধ্যে যুদ্ধ ও হবে ভয়াবহ।
সেই যুদ্ধে থাকবেনা তৃতীয় বিশ্বের নারী ও শিশুর রক্ত মেশানো বারুদের গন্ধ।
বড়জোর আনারকলির কোন সুগন্ধির খালি অথবা ভাঙা কাঁচের বোতল পাওয়া যেতে পারে।
বঙ্গোপসাগরের সুদৃশ্য ঢেউ আছড়ে পড়বে হাজারো মানুষের ভালবাসার তীরে।
ভালবাসায় থাকবেনা কোন প্রযুক্তির কারসাজি।
অনেকদিন পর বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যাবে প্রকৃতিতে।
নদীর জলে জোসনা পড়বে স্রোতের মত টলমল করে।
চাঁদের বুড়ি সুতোয় সুতোয় বুনতে থাকবে অমৃতদিনের স্বপ্ন।
কেলেন্ডারের নতুন পাতা নতুন দিনের রঙ লাগিয়ে যাবে।
শুরু হবে নতুন একটা বছর। সুচনা হবে নতুন একটা যুগের-প্রজন্মের।
জয়-তাদেরই হবে।।
আকাশের রোদ ডানায় নিয়ে নীচে নামবে ঝলমলে চিল।
জীবনের আয়োজনে ব্যস্ত হবে বৃক্ষ- নদী- ঝিল।
পাখীর ডানার রোদে নদী করবে টলমল।
যেন নবজাতকের বিছানা- চাঁদমাখা মখমল।
ধ্বংসের মুক্তিকাতারে দাঁড়িয়ে স্বপ্ন দেখে আজকের কিশোর,
শকুনের পৃথিবীতে সে একদিন---
ঝলমলে চিল হবে।।