আমাদের মসজিদে ইমাম নিয়োগ করা হবে, এই উদ্দেশ্যে আজকে একজন হুজুরের পরিক্ষামূলক নিয়োগ হল। যেহেতু এটা পরিক্ষা, উনি প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন ওয়াজের মাধ্যমে এলাকার মানুষের মন জয় করা যায়। তাই উনার ওয়াজ বা বক্তব্য ও ছিল ভিন্নধর্মী। উনি বিভিন্ন ঐতিহাসিক তথ্য আর ধর্মগ্রন্থের রেফারেন্স দিয়ে আমাদের নবী হযরত মোহাম্মদ (স) এর সত্যতা প্রামাণের চেষ্টা করলেন। নিঃসন্দেহে একটি ভাল কাজ। হাতে তালি হবে।
আমি জাকির নায়েকের অনেক লেকচার দেখেছি, সুতরাং আমি জানি বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে নবীজীর উল্লেখ আছে। আমার ঘরে বাইবেল আছে, তাই আমি জানি বাইবেলের চারটা গসপেলের মধ্যে একটা হল 'গসপেল অব জন'। তাছাড়া আমি ত্রিপিটকও পড়েছি, যেটা গৌতম বৌদ্ধের বানী।
সমস্যাটা হল, হুজুর গসপেল অব জন আর ত্রিপিটকের মধ্যে সর্ট সার্কিট ঘটিয়ে একটা বিতিকিচ্চি অবস্থা বানিয়ে ফেলেছেন। উনার ওয়াজ বা বক্তব্যে বেশ কয়েকবার উনি বলেছেন, গৌতম বৌদ্ধ নাকি গসপেল অব জনে বলেছেন হ্যান ত্যান। একবার বললে মেনে নিতাম ভূল হয়েছে, কিন্তু বেশ কয়েকবার!! তাও ইংলিশ রেফারেন্সের সহিত।
গামছা দিয়ে ঘষে ঘষে মাথার পানি তুলতেছি, আর মা জননীকে বললাম, " মোল্লা তো মাইকে উলটা পালটা ওয়াজ করে!!" মা জননী ধমক দিলেন, "চুপ, তুই চেংরা পোলা, তুই কি বুঝবি?"
ওয়াজের শেষের দিকে হুজুর আবার বলতেছেন, " একজন বিএ পাশ মানুষ যেমন ক্লাস টু এর বাচ্ছার সাথে কথা বলে মজা পায় না, তেমনি সাধারণ মানুষের সাথে ধর্মের এসব কথা বলেও মজা পাওয়া যায় না"
বাহ। একটা স্পট ইংগিত। আমি টুপি মাথায় দিতে দিতে মসজিদে রওনা হলাম, আর মনে মনে বললাম " ধরণী দ্বিধা হও"। আমি চেংরা পোলা, তাই ধরণীও দ্বিধা হয় না।
কোরআন বা হাদিসের কারনে কেউ ইসলামের সমালোচনা করার সুযোগ পায় না, সুযোগ পায় কিছু মুর্খ ধর্মীয় নেতার কারনে, যাদের কাছে আমরা ধর্মের দায়িত্ব তুলে দেই।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:০০