somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারায়নগঞ্জ ঘটনা, আমাদের রাজনীতি ও বিচার ব্যবস্থা

১৮ ই মে, ২০১৬ রাত ১১:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে বেশ বড়সড় অভিযোগ, উনি আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন। উনি হেডমাষ্টারকে কানে ধরে উঠবস করিয়েছেন।
কেন?
কারন হিসেবে হেডমাষ্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যায় তিনটি।
১। উনি বলেছেন, "তোদের আল্লাহ নাপাক, তোরাও নাপাক" মানে ধর্ম অবমাননা।
২। বাংলাদেশ সরকার (খুব সম্ভবত) ২০১০ সাল থেকে ছাত্রদের শারিরিক শাস্তি ব্যবস্থা রহিত করে এক আইন প্রনয়ন করে। উনি সেই আইন লংঘন করেছেন।
৩। মনে করলাম আপনি আইনের ধার ধারেন না। শিক্ষক হিসেবে ছাত্রকে শাস্তি দেয়াটা আপনার অধিকারে পড়ে। তারপড়েও একজন ছাত্রের সাথে আপনি রেসলিং লেগে যেতে পারেন না। নুন্যতম বিবেক থাকলেও আপনি ছাত্রকে ঘুষি মারতেন না।
.
এখন অভিযোগের শাস্তি বিষয়ে বলি,
যারা সেলিম ওসমানের বিচার নিয়ে চিল্লাপাল্লা করছেন তারা বাথরূমে গিয়ে হালকা হয়ে আসতে পারেন। কারন উনি এমন এক পরিবার থেকে আগত যারা
ত্বকি হত্যা ইস্যু,
এডভোকেট হত্যা ইস্যু,
সাত খুন ইস্যুর পরেও দিব্যি থাকতে পারে। (কারন হয়তো তারা নিয়িমিত তাহাজ্জুত পড়েন বলে)
.
আর হেডমাষ্টার সাহেবের তিনটি অভিযোগের মধ্যে শেষটি তেমন গুরুতর না। এমন ঘটনা আমাদের দেশে প্রায়ই হয়। (তাই বলে আমি বলছি না যে এটা কোন অপরাধ না)
তাই বলে একজন হেডমাষ্টার কে কানে ধরে উঠবস করানো যায় না।
.
দ্বিতীয় অভিযোগটা একটু গুরুতর। শিক্ষক হিসেবে দেশের আইনের প্রতি আপনার বাধ্যবাধকতা থাকা উচিৎ। কিন্তু আইন অমান্যকারীকে একজন সাংসদ শাস্তি দিতে পারেন না।
তাছাড়া কানে ধরে উঠবস করানো বাংলাদেশ আইন মোতাবেক কোন শাস্তি হতে পারে বলে আমার জানা নেই।
.
এবার প্রথম অভিযোগ। এটা মারাত্বক। বিশেষ করে বাংলাদেশের মত দেশে, এটা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশ, এখানের মানুষ হুজুগে চ্যাতে উঠে, তাছাড়া কিছু কিছু কট্টরপন্থি মৌলবাদি বেশ সক্রিয়। উনার এই অপরাধের শাস্তি হতে পারে-
১।ধর্মীয়ভাবে- যেহেতু এটা ধর্মীয় ইস্যু তাই শাস্তির বিধানটা ধর্মীয়ভাবে করার পক্ষে যুক্তি উত্থাপন করা যায়। তবে বাংলাদেশে যেহেতু শরিয়তী শাসন ব্যবস্থা চালু নয় তাই এটা বেশ অকার্যকর।
তাছাড়া শরিয়তের কোথাও কানে ধরে উঠবস করানো টাইপ শাস্তির বিধান আছে বলে মনে হয় না।
২। আদালতে- কানে ধরে উঠবস করানো বাংলাদেশ আইন মোতাবেক কোন শাস্তি হতে পারে বলে আমার জানা নেই।
.
দীর্ঘ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটা বলা যায় যে, সেলিম ওসমান সাহেব শাস্তির টাইপ বাছাই করতে বেশ গড়মিল করে ফেলেছেন। উল্টাপাল্টা শাস্তি দিতে গিয়ে নিজে খানিকটা বিপাকে পড়েছেন। (অবশ্য উনার কাছ থেকে এর চেয়ে ভাল কিছু আশা করা যায় না।)এটা নিয়ে অবশ্য উনি বিচলিত নন। বিচলিত নই আমরাও।
কারন এরকম উল্টাপাল্টা শাস্তির বিধান দেখতে দেখতে আমাদের চোখ ক্লান্ত, মস্তিষ্ক নিস্তেজ। জুনায়েদের কথা মনে আছে, যে তার বন্ধুকে চড় থাপ্পড় লাথি মেরে নিজেকে সমালোচিত করতে বেশ অবদান রেখেছিল। এজন্য তার কী শাস্তি হয়েছিল?
শুনেছি মাননীয় আদালত নাকি তাকে চৌদ্দ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন। সে নিজে আত্বসমর্পন করেছিল, তারপরেও। আদালতটা মাননীয় বটে।
.
এদিকে সাংসদ মশাই নাকি বলেছেন, ওনাকে জনগনের হাত থেকে বাঁচাতে নাকি এমন শাস্তি দিয়েছেন। এতে অবশ্য দু'দলই খুশি।
১। বামটাইপ লোক বলবে "সত্যিই তো, নইলে তো মৌলবাদিরা স্যারের 'মুন্ডু আলাগ' করে দিত।
২। মৌলবাদিরা ভাববে, "ব্যাটাকে উচিৎ শিক্ষা দিয়েছে। পরে মিডিয়ার হাত থেকে বাঁচতে এরকম কথা বলেছেন।"
এই বিষয়ে এক ভাই প্রশ্ন করেছেন, "রাজনীতির ভেতর পলিটিক্স, নাকি পলিটিক্সের ভেতর রাজনীতি?" জয় হোঁ
.
শেষমেশ একটা কৌতুক মনে পড়েছে,
এক বিমান দূর্ঘটনার পড়ে এলাকার লোকেরা বিমানের সব যাত্রীকে মৃত ভেবে কবর দিয়ে দেয়। তার মধ্যে এক রাজনীতিবিদও ছিলেন। পড়ে পুলিশ এসে জিজ্ঞেস করলে তারা বলে,
" সব লোক মৃতই ছিল। শুধু একজন উনার পরিচয় দিয়ে বললেন যে উনি নাকি বেঁচে আছেন। কিন্তু যেহেতু রাজনীতিবিদ, তাই আমরা উনার কথা বিশ্বাস করিনি"
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৬ রাত ১১:৫২
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানালেন ড. ইউনূস

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:১০





যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।শুভেচ্ছা বার্তায় ড. ইউনূস বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ের জন্য আপনাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাছে থেকে আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৪৬

আমির হোসেন আমুকে দেখা একদিন....

২০০১ সালের কথা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটা আন্তর্জাতিক দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে আমার কোম্পানি টেকনিক্যাল অফারে উত্তীর্ণ হয়ে কমার্শিয়াল অফারেও লোয়েস্ট হয়েছে। সেকেন্ড লোয়েস্টের সাথে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নারী বুকের খাতায় লিখে রাখে তার জয়ী হওয়ার গল্প (জীবন গদ্য)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩২



বুকে উচ্ছাস নিয়ে বাঁচতে গিয়ে দেখি! চারদিকে কাঁটায় ঘেরা পথ, হাঁটতে গেলেই বাঁধা, চলতে গেলেই হোঁচট, নারীদের ইচ্ছেগুলো ডিমের ভিতর কুসুম যেমন! কেউ ভেঙ্গে দিয়ে স্বপ্ন, মন ঢেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্রী ও কুশ্রী পদাবলির ব্লগারদের টার্গেট আমি

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৫



আমাকে জেনারেল করা হয়েছে ১টি কমেন্টের জন্য; আমার ষ্টেটাস অনুযায়ী, আমি কমেন্ট করতে পারার কথা; সেটাও বন্ধ করে রাখা হয়েছে; এখন বসে বসে ব্লগের গার্বেজ পড়ছি।

সম্প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×