এদেশে প্রায় নব্বই শতাংশ মানুষের ধর্ম ইসলাম, হজ্জ, ও রাসূল সা. কে নিয়ে ন্যক্কারজনক বক্তব্য দিয়ে বর্তমানে এদেশের প্রতিটি মুসলমানের অন্তরকে ক্ষত-বিক্ষত করেছে কুলাঙ্গার লতীফ সিদ্দিকী।
ঠিক একই সময়ে এদেশের আরেকটি ধর্মী গোষ্ঠীর সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎস পালিত হচ্চে।
একই দিকে খুশির জোয়ার অন্যদিকে মনবেদনা এর মর্মপীড়া। তবুও দুই মেরু একহয়েছে চলছে অবিরাম। মিশে আছে একে অপরের সাথে।
সাধারণ মানুষ যখন তাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার এই কাজটি এত দুঃখ-কষ্ট, আনন্দ আর বেদনার বিতর দিয়ে টিকিয়ে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ঠিক তখনই সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার দায়িত্ব নিয়েছে সরকার নিজেই। একদিকে সরকার তার আতুড় ঘরের লোকজন দিয়ে ধর্মীয় অবমাননা কর বক্তব্য দেওয়াচ্ছে অন্যদিকে তা নিয়ে জনগনের সাথে রাজনীতির নামে প্রতারণা করছে।
ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত দেওয়া, নবী সা. কে নিয়ে অববমাননা কর বক্তব্য দেওয়ার কারণে সাধারণ মানুষ যে কষ্ট পেয়েছে তার জন্য তারা প্রতিবাদ করবে, দাবি জানাবে, সভা-সমাবেশ করে বিচার দাবি করতেই পারে। এটি গণতান্ত্রিক এবং ধর্মীয় দুই দিক থেকেই এদেশের সাংবিধানিক অধিকার। তাছাড়াও মানবতাবাদি কোন ব্যক্তি সুস্থমস্তিক্য থাকা অবস্থায় এ পর্যায়ে নিরবে নিবৃত্তে বসে থাকতে পারে না। কিন্তু সরকার তাদের পেটুয়া বাহিনী দিয়ে সাধারণ মুসলামনের এই অধিকারটুকু কেড়ে নিচ্ছে।
একটি বিষয় অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি-
কুলাঙ্গার লতীফ সিদ্দিকীর অযাচিত বক্তব্যের জের ধরে বর্তমান সরকার তাকে মন্ত্রী পরিষদ থেকে বহিষ্কার করেছে। এটি তার উপযুক্ত শাস্তি নয়। লক্ষনীয় যে, তাকে মন্ত্রী পরিষদ থেকে বহিস্কারের বিষয়কে কেন্দ্র করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানিয়েছে খুলনা আওয়ামী লীগ। আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে আওয়ামী লীগের একজন মন্ত্রী ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত তাকে মন্ত্রী পরিষদ থেকে বহিস্কার করে আওয়ামী লীগ কি নিজের ভুলের পাশ্চিত্ব করেছে নাকি দেশের মানুষের ধর্মীয় আবেগ অনুভুতির প্রতি এক দারুন দৃষ্টিভঙ্গির বর্হিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে?
যদি তারা নিজেদের ভুলের মাশুল দিয়ে থাকে তাহলে সাধুবাদ , ফুলেল শুভেচ্চা জানানোর কোন প্রয়োজন ছিল না। কারণ চোর, ডাকাত আর কুলাঙ্গার লালন পালন কারীদের শাস্তির জন্য তাদের গডফাদারদের লজ্জিত হওয়াই শ্রেয়। মুখলুকানো ছাড়া আর কোনটা উচিত ছিল বলে মনে হয় না।
আর যদি ধর্মীয় দারুণ দৃষ্টিভঙ্গির বর্হিঃপ্রকাশ করে থাকে তাহলে বলব তা নিছক প্রতারণা আর মুসলমানদের চোখে ধুলো দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ-
একদিকে তারা এদেশের হিন্দু সমাজের পূজার নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য পুলিশ মোতায়েন করে নির্বেঘ্নে তাদেরকে আশা যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে যদিও অধিকাংশ পূজা মন্ডপগুলো রাস্তার উপর বাসানো। তারা তাদের ধর্মীয় অধিকার পাবে এটি যেমন সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত তেমনি সাধারণ মুসলমানগণ ও তাদের ধর্মকে অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ার কারণে প্রতিবাদ করার সুযোগ পাওয়ার কথা কিন্তু চিত্রটা সম্পূর্ণ বিপরীত লক্ষ্য করছি। প্রতিবাদী মুসলমানদের পুলিশ দিয়ে গুলি চালিয়ে রক্তাত্ব করা হচ্ছে। ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ এই ধরনের প্রতিবাদে বাঁধা দিয়ে সরকার আসলে কি বুঝাতে চাইছে?
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘ চার দশকে এদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য জনগণ যেভাবে উজ্জল দৃষ্টান্ত ও দৃষ্টি ভঙ্গির বর্হিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে তার বিপরীতে সরকার দায়িত্ব নিয়ে সে সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
তাই একটি গোষ্ঠীকে ধর্মীয় রীতি পালনে সরকারী বাহিনী দিয়ে সহযোগীতা করছে, অপরদিকে আরকটি গোষ্ঠীকে তাদের ধর্ম অবমাননার প্রতিবাদে সরকারী বাহিনী দিয়ে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। যা পক্ষান্তরে একটি গোষ্ঠীকে অপর আরেকটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে উসকে দেওয়ার একটি হীন সরকারী প্রচেষ্ঠা মাত্র।
সরকার যাই বলুক আর করুক না কেন বাংলাদেশের সকল মানুষ তাদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় যার যার অবস্থান থেকে প্রচেষ্ট চালাবে এবং একে অপরকে সহযোগিতা করবে এটি যথার্থ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে এদেশের সকল মানুষ তাদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার থাকবে এটি নিয়ম, এটি হয়ে আসছে, এটি হবে ইনশাআল্লাহ।
তাই আসুন সকল ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে সবাই হাতে হাত রেখে যার যার ন্যায় সঙ্ঘত অধিকার আদায়ে সোচ্চার হই। যেন আমরা একে অপরের, একটি গোষ্ঠী অপরর গোষ্ঠীর সহযোগী হয়ে নিজেদের মধ্যকার ভ্রাতৃত্ব সুদৃঢ় করতে পারি তার প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাই। তার সাথে সকল গর্হিত অন্যায় কাজকে একসাথে বলি মানি না , মানবো না। হতে পারে না হতে দেওয়া হবে না।