মাহাত্মা গান্ধী অর্থাৎ মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। পুরো পৃথিবীতে যিনি অহিংস আন্দোলনের জন্য বিখ্যাত বা পরিচিত। কিন্তু এই গান্ধীজির অসিংহ আন্দোলনের গুরু কে তা একবারও কেউ জানার চেষ্টা করেছেন?
গান্ধী সাহেব ১৮৯৩ সালে যখন অফ্রিকায় বসবাসরত ভারতীয়দের আমন্ত্রনে দক্ষিন আফ্রিকায় যান তখন সেখানে অবস্থান কালে বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে তার বিশ্ববীক্ষণ ও রাজনৈতিক চিন্তা বিকশিত হতে থাকে। দক্ষিন আফ্রিকায় পা দিয়ে তিনি বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন। এর মধ্যে একটি ছিল ১৯০৬ সালের আগষ্ট মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রান্সভাল কর্তৃপক্ষ একটি আইন জারি করে আট বছরের বেশি বয়সী ভরতীয় বংশোদ্ভূত সকল নারী পুরুষ শিশুর জন্য রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হয়। রাস্তাঘাটে যখন যেখানে খুশি রেজিস্ট্রেশন কাগজপত্র পরীক্ষা করার কর্তৃত্ব দেয়া হয় পুলিশকে। এর ফলে ভারতীয়রা একধরনের বৈষম্য ও সঙ্কটের মুখে পড়ে। ঐ বছর ১১ সেপ্টেম্বর জোহানেসবার্গের এম্পায়ার থিয়েটারে এই উপলক্ষে এক সভা আহবান করা হয়। জনাকীর্ণ সেই সভার এক পর্যায়ে ভারতীয় মুসলিম ব্যবসায়ী মুহাম্মদ কাচালিয়া উঠে দাাঁড়িয়ে বলেন যে, আমি আল্লাহর নামে শপথ নিচ্ছি এমন অন্যায় আইনের কাছে আমি কখনো নতি স্বীকার করবো না। তাঁর এই বক্তব্য চকিতে গান্ধী যেন দেখতে পান আলোর ইশারা। অন্যায় আইন প্রতিরোধে স্রষ্টার নামে শপথ নেয়ার মধ্যে গান্ধী যেন দেখতে পান আলোর ইশারা। এখান থেকেই বিকশিত হলো তাঁর অহিংস প্রতিরোধের চেতনার অপূর্ব বহির্প্রকাশ।
তথ্যসূত্র : দেশভাগ, সাম্প্রদায়িকতা এবং সম্প্রীতির সাধনা, মফিদুল হক।