স্কুল জীবনের কিছু ঘটনা মনে পড়লে এখনও নস্টালজিক হয়ে যাই । বিতর্কের স্ক্রিপ্ট তৈরীর নামে কত যে ক্লাস ফাঁকি দিসি, সেইটা আমি ছাড়া আর কেই বা ভালো জানে । স্যারদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে নানান রকম নাম দেয়া নিয়ে আর নাই বা বললাম
আর, স্যারকে বলে পানি খাইতে গিয়ে ৫ মিনিটের জায়গায় ১০-১৫ মিনিট পার করে যখন চুল-টুল ভিজিয়ে ক্লাসে ঢুকতাম, তখন স্যারদের বিখ্যাত বেত দেইখা কত রকম যে কৈফিয়ত অনায়াসেই দিয়ে পার পেয়ে গেছি তা বলতে গেলে টাইম মেশিনে ঘুরে জেনে আসতে হবে।
সেই মুহূর্ত গুলোর কথা মনে পড়লে হয়তো চোখগুলো অকারণে ঘোলা হয়ে যায় দিনগুলো আবার ফিরে পাবার বাসনায়,আর ঠিক কেমন যেনো,কেমন যেনো একটা শূন্যতা অনুভব হয়,যেটা আমি লিখতে পারছি না ... সত্যিই মজার আর আনন্দময় ছিল সেই দিনগুলো ; উদাহরন দেই__
সারা বছর এখন পড়ব,তখন পড়ব করতে করতে...আর , কাল সকাল থেকেই পড়া শুরু করব বলে মহাপণ করে যখন ঘুমাতে যেতাম, পরদিন সকালে উঠেই তা ভুলে ঐ আগের মতনই...।
পরীক্ষার সময় সামনের বা পিছনের জনের খাতা দেখার আপ্রাণ চেষ্টা যে কত করেছি আমরা,তা হয়ত অনুমেয় নয় আর কত যে কায়দা ... যেমন... স্যার কোনমতে দরজার বাইরে গেলেই হইত তখন ৭ নাম্বার প্রশ্নের উত্তর জানতে যখনই পিছনে তাকাতাম,স্যার দেখে ফেলত আর তখন টেবিলের নিচ থেকে অদৃশ্য কিছু তুলে স্যারকে বুঝাতাম যে আমার কলম পরে গেছে
আবার, আরেকজনের খাতা দেখতেছি , হঠাৎ করে স্যার আমার দিকে যখন তাকাত, তখনি আমি সঠাৎ করে উপরের দিকে তাকিয়ে এমন ভাব দেখাতাম যে আমি কিছু মনে করার চেষ্টা করতেছি হঠাৎ করে এমন ভাব নিয়া আবার লিখতে শুরু করতাম যে বিষয়টা আমার মনে পরে গেছে কিন্তু সব...’ হুদাই ফাঁপড়’...। স্যার বুঝত কিনা কে জানে
কবিতা বা উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতা দিয়েছেন তো ? সেখানে ফাঁকিবাজির আরেক মহারন্য কবিতা প্রেকটিসের নাম করে স্কুলের একটা খালি রুমে দরজা আটকিয়ে হেডফোনে গান শোনা বা স্কুলে লুকিয়ে আনা কারো ‘ “ ভিডিও গেমস” নামক ‘যন্ত্রে’ গেমস খেলা ছিলো রোমাঞ্চকর এডভেঞ্চারের মত[ছোট ছিলাম তো :p ]।। তখন, কেউ এসে দরজা ধাক্কা দিলে দ্রুত যার যার জায়গায় গিয়ে একত্রে মহা তৎপড়তার সাথে ভাব নিয়া জোরে জোরে বলতাম ... “”আবৃত্তি করছি ‘বিশ্বকবি’ কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতাটি ... বলবীর, বল উন্নত মমশির’ ‘’’ যাতে বাইরে যেই আসে,কবিতা প্রেকটিসের প্রতি আমাদের প্রচন্ড একাগ্রতা বুঝতে পারে।
ক্লাসে সিট দখল নিয়া যে বিস্তর হ্যাপা তা অবশ্যি কাউকে বলে দিতে হবে না , এই নিয়ে মারামারিও কম দেখতে হয়নি বোধ হয়। যেমন, আমার পছন্দ ছিল ১ম বা ২য় বেঞ্চ ...কোনদিন, আমি আগে গেলে আমার ব্যাগ টেবিলের উপর রেখে পাশে একটা বই রেখে ঐ সিট বুকিং দিয়ে রাখতাম আমার বন্ধুর জন্য,কিন্তু বুকিং ব্যাপারটা অনেকেই বুঝতে চায় না ‘ঘাড়-ত্যাড়া’ বলে যে মানুষের একটা শ্রেণীবিভাগ আছে ,তাদের কাছে প্রায়ই হার মানতে হত
এই রকম আরো কত ঘটনা যে মনে পড়ছে তার ইয়ত্তা হয়তো নেই তবে সেগুলো কারো অজানাও হয়তো নয় । কারণ, আমরা তো একই পথ দিয়া আসছি আর ফাঁকি আমরা সবাই দিছি একই রকম ফাঁকি, তবে কেউ কম কেউ বেশী ...
তবে, সব মিলিয়ে এখন বেশ ভালোই আছি আমরা, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা নিয়ে এইতো বেশ বেঁচে আছি,কি বলেন?
লেখকের ই-মেইল : [email protected]
লেখকের ফেসবুক প্রোফাইল লিঙ্ক ।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৮