এটা গোয়ালদী হুসেন শাহর মসজিদ । বাংলাদেশের সোনারগাঁও এ অবস্থিত ।
গোয়ালদীর গায়েবী মসজিদ বাংলাদেশের সোনারগাঁওতে অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ। সুলতান আলাউদ্দীন হোসেন শাহের আমলে মোল্লা হিজাবর খান ১৫১৯ সালে এই মসজিদটি নির্মাণ করেছেন।মসজিদটি এক গম্বুজ বিশিষ্ট। পশ্চিম দেয়ালে তিনটি মেহরাব রয়েছে। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব গ্রহণ করে।
বাবা আদম মসজিদ বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ জেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ। এই মসজিদটি পঞ্চদশ শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। এই মসজিদে নিয়মিত জামাতে নামাজ আদায় করা হয়। মসজিদের চত্বরে জনাব বাবা আদমের রহঃ মাজার অবস্থিত। ১৯৪৮ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকারের পুরাতত্ত্ব বিভাগ এ স্থাপনার তত্ত্বাবধান করছেন।১০৯৯ সালে বাবা আদম সৌদি আরবের মক্কা নগরের অদূরে তায়েফে জন্মগ্রহন করেন। পরবর্তী সময়ে আধ্যাত্মিক জ্ঞান সাধনায় বড় পীর হজরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) এর সাহচর্য পেতে বর্তমান ইরাকের বাগদাদে আসেন। সুদুর আরবে জন্মগ্রহন করেও তিনি উপমহাদেশে আসেন। বর্তমান বাংলাদেশের ধলেশ্বরীর তীরে মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিমে আসেন ১১৭৮ সালে সেন শাসন আমলে। তখন বিক্রমপুর তথা মুন্সিগঞ্জ ছিল বল্লাল সেনের রাজত্বে। ওই বছরই বল্লাল সেনের হাতে প্রাণ দিতে হয় তাকে। হিজরী ৮৮৮ তথা ১৪৮৩ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয় বাবা আদম মসজিদ। মসজিদ নির্মাণে ৪ বৎসর সময় লেগেছিল।
এই মসজিদের ছাদে ৬টি গম্বুজ রয়েছে। উত্তর দক্ষিণে বিস্তারিত ভিত্তি এলাকা দৈর্ঘ্যে ৪৩ ফুট এবং প্রস্থে ৩৬ ফুট। এর দেয়াল ইটে নির্মিত যা প্রায় ৪ ফুট প্রশস্থ। ইটের আকার ১০ ইঞ্চি, ৭ ইঞ্চি, ৬ ইঞ্চি ও ৫ ইঞ্চি। এগুলো লাল পোড়ামাটির ইট। সম্মুখভাগে তিনটি খিলানাকৃতির প্রবেশ পথ রয়েছে যার মাঝেরটি বর্তমানে ব্যবহৃত হয়। অভ্যন্তরভাগে পশ্চিম দেয়ালে তিনটি মেহরাব রয়েছে আর পূর্ব দেয়ালে রয়েছে আরবি লিপিতে উৎকীর্ণ একটি শিলাফলক।
কিসমত মারিয়া মসজিদ রাজশাহী শহরের অদূরে দুর্গাপুর উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের একটি প্রাচীন মসজিদ। আনুমানিক ১৫০০ সালে এটি নির্মিত হয়েছিল।এই মসজিটটি রাজশাহী জেলার দূর্গাপুর উপজেলার মারিয়া গ্রামে অবস্থিত। রাজশাহী সদর হতে রাজশাহী ঢাকা মহাসড়ক ধরে প্রায় ১৩ কি.মি. গেলে শিবপুর বাজার নামক স্থান হতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সাইনবোর্ড ধরে এগিয়ে ৪-৫ কি.মি. গেলে এই মসজিদ পাওয়া যাবে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অন্তর্ভুক্ত[ হলেও আজ পর্যন্ত এর কোন রক্ষনাবেক্ষণ বা সংরক্ষণের কোন উদ্যগ নেওয়া হয়নি। আমবাগান আর ফসল এর ক্ষেত বেষ্ঠিত এই মসজিদটি সম্পর্কে গ্রামের জনগণের মধ্যে অনেক কিংবদন্তি কাহিনী প্রচলিত আছে।
এই মসজিদ সম্পর্কে সঠিক কোন ইতিহাস পাওয়া যায়না তবুও নির্মাণশৈলী দেখে অনুমান করা হয় মসজিদটি আনুমানিক ১৫০০ সালে স্থানীয় কোন মুসলিম দরবেশ বা দিল্লির মুঘল শাসকদের নির্দেশে কোন জমিদার কর্তৃক নির্মিত। মসজিদটির ক্ষয়ে যাওয়া দেয়ালে এখনও কিছু শৈল্পিক কর্ম বিদ্যমান। মুসলিম ঐতিহ্য অনুসারে শিল্পীদের কৃত পোড়ামাটির টেরাকোটা যা গাছ,ফুল,লতা ইত্যাদি ধারণ করেছে সেগুলো এই মসজিদের সৌন্দর্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। তখন হিন্দুপ্রধান এই এলাকায় মুসলিমদের সংখ্যা কম হওয়ায় এই মসজিদটি আকারে বেশ ছোট।মসজিদটির তিনটি প্রবেশদ্বার আছে। প্রত্যেকটি দ্বারের ঠিক সামান্তরালে উপরে ছাদের মাঝামাঝি একটি করে গম্বুজ আছে। মসজিদটির সামনে লাগোয়াভাবে ছোট্ট উচু উঠান(খোলা বারান্দা) আছে যা অনুচ্চ প্রাচির দ্বারা বেষ্ঠিত এবং একটি তিন ধাপী ছোট সিঁড়ি দ্বারা ভূমিতে সংযুক্ত। এর দক্ষিণে একটি দ্বিতল চৌচালা স্থাপনা আছে যা বিবির ঘর বলে পরিচিত। পুরো স্থাপনাটা নির্মিত হয়েছে চুন,সুড়কী ও ইট দিয়ে। দেশের অন্যান্য পুরাতন মসজিদ এর সাথে এই মসজিদএর একটি সাধারন ব্যতিক্রম পরিলক্ষিত হয়, তা হল মসজিদটির একেবারে সন্নিকটে কোন বড় জলাধার বা পুকুর দীঘি নাই।
খান মহম্মদ মির্ধার মসজিদ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের পুরানো ঢাকা এলাকার আতশখানায় অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ। এটি ১৭০৬ সালে নায়েবে নাযিম ফররুখশিয়ারের শাসনামলে নির্মাণ করা হয়। ইতিহাসবিদ মুনতাসীর মামুনের মতে ঢাকার প্রধান কাজী ইবাদুল্লাহের আদেশে খান মহম্মদ মির্ধা এটি নির্মান করেন।বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এই মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করছেন।
হাজী শাহাবাজের মাজার ও মসজিদ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের রমনা এলাকায় অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ। মোগল শাসনামলে শাহজাদা আযমের সময়কালে ১৬৭৯ সালে এটি নির্মিত হয়। মসজিদটি হাইকোর্টের পিছনে এবং তিন নেতার মাজার এর পূর্ব পার্শ্বে অবস্থিত। এর চত্ত্বরে হাজী শাহবাজের সমাধি অবস্থিত। দৈর্ঘ্যে মসজিদটি ৬৮ ফুট ও প্রস্থে ২৬ ফুট। এতে তিনটি গম্বুজ রয়েছে।
ঐতিহাসিক মুনতাসীর মামুনের মতানুসারে হাজী শাহবাজ ছিলেন একজন অভিজাত ধনী ব্যবসায়ী তিনি কাশ্মীর হতে সুবা বাংলায় এসে টঙ্গী এলাকায় বসতি স্থাপন করেন। ১৬৭৯ সালে তিনি জীবিত থাকাকালেই এই মসজিদ এবং নিজের মাজার নির্মাণ করেন। তখন সুবাহদার ছিলেন শাহজাদা মুহম্মদ আজম।
সূত্র: ইন্টারনেট