এবছর এই মৌসুমে বাংলাদেশে এখনো পযন্ত বজ্রপাতে প্রায় ৬০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। শুধুমাত্র আগাম সতর্কতার অভাবে এভাবে প্রতি বছরই শত শত মানুষ মারা যায়।
যদি বজ্রপাতের কোনো পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হতো তাহলে হয়তো এতো অধিক সংখ্যক প্রাণহানি হতো না।
বজ্রপাত সরাসরি শরীরের ওপর হলে বাঁচার কোনো সম্ভাবনাই নেই। আর আশেপাশে হলেও গুরুতরভাবে ঝলসে যেতে পারে শরীরের অধিকাংশ।
ধরুন নির্জন রাস্তায় অথবা ফাঁকা মাঠ দিয়ে যাচ্ছেন হঠাৎ ঝড় বৃষ্টি আর বিদ্যুৎ চমকানি শুরু হয়ে গেল।বুঝতে পারছেন না কী করবেন। ভয় হচ্ছে কখন মাথার উপর বাজ পড়ে।আগে থেকে বুঝারও তো উপায় নেই। জানা থাকলে না হয় একটা ব্যবস্থা নেয়া যেত। কাছাকাছি কোথাও গিয়ে আশ্রয় নেয়ারও সুযোগ থাকতো।
তবে আশার কথা হলো বজ্রাহত হওয়ার আগে অন্তত মিনিটখানেক সময় আপনি পেতে পারেন। অর্থাৎ প্রকৃতির রোষ আপনার মাথায় পড়ার আগে একটা শেষ সতর্কবার্তা পাওয়ার সুযোগ আছে।বজ্রপাত যেহেতু একটি বৈদ্যুতিক ঘটনা সেহেতু সতর্কবার্তাটাও সেরকম হবে।
বজ্রপাতের আগমহূর্তের লক্ষণ এবং তার প্রতিকারগুলো হলোঃ
(১) বজ্রপাতের আগমুহূর্তে এলাকার বাতাস বিদ্যুতায়িত হয়ে যায়।
(২) আপনার মাথার চুল শরীরের লোম খাড়া হয়ে যাবে। যেমনটি চুল আচড়ানোর পর চিরুনির কাছাকাছি চুল খাড়া হয়ে যায়।
(৩) আপনার শরীর আশপাশের বিভিন্ন বস্তু যেন একদম সোজা এবং স্থির হয়ে যেতে চাচ্ছে।
সঙ্গে সঙ্গে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিনঃ
(১) কাছকাছি বাড়িঘর বা কোনো ভবন থাকলে ঢুকে পড়ুন।
(২) একেবারে ফাঁকা মাঠে থাকলে তাৎক্ষণিকভাবে বসে মাটি স্পর্শ না করে যতটা সম্ভব মাটির কাছাকাছি থাকুন। তবে একেবারে মাটির সঙ্গে লেপটে থাকবেন না তাতে হিতে বিপরিত হতে পারে। কারণ আশপাশের সবকিছুই তখন কিন্তু বিদ্যুতায়িত।
(৩) খেয়াল করবেন আপনার ভেজা কাপড় বা শরীরের কোনো অংশ যেন মাটি স্পর্শ না করে।
(৪) খালি পা থাকলে জুতা পরে নিন।
(৫) কোনো ধাতব বস্তু যেমন রাস্তার খাম্বা বা পিলার ব্রিজের ধাতব অংশ প্রভৃতি স্পর্শ করবেন না।
(৬) ঘরে থাকলে জানালার পাশে থাকবেন না। ফ্লোরের কাছাকাছি থাকবেন।
(৭) সম্ভব হলে বাড়িঘরে বজ্রনিরোধক দণ্ড ব্যবহার করুন।
(৮) ফাঁকা মাঠে থাকলে বড় কোনো গাছ থেকে দূরে থাকবেন। আবার একেবারে ফাঁকা এলাকায় থাকবেন না। বজ্রপাত বড় বড় গাছে যেমন হয় তেমনি বিশাল ফাঁকা মাঠেও হওয়ার সম্ভাবনা এড়িয়ে দেওয়া যায় না।
(৯) বজ্রপাত থেকে বাঁচতে হলে যখন আকাশে বিজলি চমকাবে তখন খোলা আকাশের নিচে থাকা যাবে না।
(১০) বড় গাছ এড়িয়ে বৃত্তাকারে এর ৪০ ডিগ্রি দূরে দাঁড়ানো উচিত।
(১১) ফাঁকা স্থানে থাকলে বজ্রপাতের সময় উবুট হয়ে বসে যেতে হবে।
(১২) নৌকায় বা জলে থাকলে শুকনো স্থানে চলে যেতে হবে।
(১৩) গাড়ির চাকা বিদ্যুৎ কুপরিবাহী রাবারের তৈরি। সে কারণে গাড়ি নিরাপদ।
তথ্য ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মে, ২০১৬ সকাল ৯:৫৮