স্যার নাসাকা বাহিনী সিমান্তের দিকে আগায় আইতেছে। ওগো পরিকল্পনা ভাল মনে হয় না।
- দেশের বাড়ি কোথায় তোমার? বিজিবি জোয়ান জিজ্ঞেস করল। নায়েক সুবেদার র্যাংক লাগানো আছে তার। নেম প্লেটে মিজানুর রহমান লেখা।
- কিশোরগঞ্জ, উত্তর দিল গ্রামের লোকটি। জিয়া আমাগো ফ্রি জমি আর বাড়ি করে দিছিল, সেই থেকে পরিবার নিয়া এখানেই আছি।
- তোমার ভাষা শুনেই বুঝতে পেরেছি তুমি এখানকার না। আর কথা বলতে পারলোনা। গুলির আওয়াজে দাড়িয়ে পড়লো। মনে মনে অবাক হলো জোয়ানটি। এতবড় সাহস হয়েছে নাসাকার! খুপড়ি ঘর থেকে বের হয়ে এলো বাকি ৭জন জোয়ান। সবার হাতে চাইনিজ অটো রাইফেল। তোমাদের উত্তম জবাব দেওয়া হবে। দুজন জোয়ান দ্রুত মর্টার দুটি তাক করে দিল যেদিক থেকে গুলির আওয়াজ আসছে সেদিকে। ওয়্যারলেস ম্যানকে বলা হল বিউপিতে খবর জানিয়ে তাদের সাথে যোগ দিতে।
ওয়ারলেস ম্যান দ্রুত বের হয়ে এসে জানালো বিউপি থেকে খবর এসেছে আমরা যেন কোন ব্যবস্থা না নিই ঢাকা থেকে অর্ডার না আসা পর্যন্ত। ঢাকায় যোগাযোগ করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
নায়েক মিজানুর রহমান অবাক হয়ে দাড়িয়ে থাকল কিছুক্ষন। কি বলো এইসব! নাসাকা গুলি করতে করতে এগিয়ে আসছে এদিকে। আমরা যদি ঢাকার অনুমতির জন্য অপেক্ষা করি আমাদের মেরে এই ক্যাম্প দখল নিবে তারা। জরুরী মুহুর্মতে স্থানীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ আছে সব সময়। আমার এই ১৫ বছরে আমি অনেকবার নিতে দেখেছি।
এখন আর সেই সব নিয়োম নেই, দেখা যাবে এই কারনে আবার বিচারের সম্মুখীন হতে হচ্ছে আমাদের। উত্তর দিল এক সিপাহী।
গুলির আওয়াজ আরো এগিয়ে আসছে। নায়েক সুবেদার অতিরিক্ত দুটি ম্যাকজিন সহ অস্ত্র টা হাতে তুলে নিল। তোমরা তাহলে দুরে সরে যাও। আমার পক্ষে আর বসে থাকা সম্ভব না। আমি শপথের বরক্ষেলাপ করতে পারবোনা। এদের জবাব আমাকে দিতেই হবে।
অতিরিক্ত একটি ম্যাকজিন শেষ হয়ে গেছে ফায়ার করতে করতে। রক্ত ক্ষরনে শরীর শিথিল হয়ে আসছে.... গুলিটা পেটে না লাগলে ভাল হতো... যেভাবেই হোক জ্ঞান হারানো চলবেনা.... শেষ ম্যাকজিনটা ভরে নিল। ওদিক থেকে গুলির আওয়াজ একেবারে নিকটে চলে এসেছে .... অনেক কাছে এগিয়ে এসেছে তারা... আর একটু দাড়িয়ে থাকতে পারলেই ঢাকার অনুমতি চলে আসবে.... জানিনা আর কতক্ষন ঠেকিয়ে রাখতে পারবো..
তিনদিন পর নাসাকা নায়েক সুবেদারের মিজানুর রহমানের গলিত লাশ ফেরত দিয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৪৭