২০১২ সাল। ঈদের নামায পড়ে বাসায় ফিরেছি। শেষ বেলার প্রস্তুতি দেখে নিলাম। একটু পরেই রওনা দিব এয়ারপোর্ট। ১ টা ৩০ মিনিটে থাই এয়ারলাইন্সে থাইল্যান্ড অভিমুখে যাত্রা দিব আমি আর আমার বউ। উদ্দ্যেশ্য শুধুই দেখা। এটা ছিল প্রথমবার থাইল্যান্ড ভ্রমন। এরপর অবশ্য আরো যাওয়া হয়েছে।
আমার বউ সিলভী মোটামুটি মাস খানিক ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছে। অফিস থেকে ফিরেই দেখি ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছে। সমস্যা কি? না না, এই দেখো এইটা এইটা দেখতে যাব। এই হোটেল টা সুন্দর। সুন্দর কোন দিক থেকে? এর আশ পাশ দিয়ে সব মার্কেট। অনেক সুবিধা হবে। এইবার বুঝলাম সুন্দরের শানে নুজুল। বললাম তুমি কি মার্কেট দেখতে যাচ্ছো নাকি থাইল্যান্ড দেখতে যাচ্ছো? উত্তর দিল, একই কথা, এই মার্কেট গুলোকি তোমার থাইল্যান্ডের বাইরে? নাহ, কথা সত্য। কিন্তু সেদিন থেকেই মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে আল্লাহ জানে, বউ আমার কোন পর্যায় ফাঁসাবে।
আমার কন্যা বীচ এলাকায়
আমি যে ধরনের চাকুরী করি তাতে সারা বছর প্রায় ছুটি নাই। দুই ঈদে ৭ দিন করে দুইটা ছুটি পাই। যার কারনে ঈদের সময়টা বেছে নিতে হলো ট্যুরের জন্যে। ৭দিনের সাথে আরো একটা দিন যোগ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ঘুরতে যাবার। নিজে নিজে ভিসা করিয়েছি, থাই এয়ারের টিকিট কেটেছি তারপর সোজা যাত্রা দিয়েছি। কিছুই জানিনা, চিনিনা। আছে কিছু হোটেলের ঠিকানা। কি কি দেখার আছে বা সেখানে কিভাবে যেতে হয় সে নেট ঘেটে বের করেছে। তবে আমার মনে হয় কেউ যদি ট্যুরের উদ্দ্যেশ্যে যেতে চান তাহলে ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে যাওয়াই ভালো। এতে খরচও কম হবে আবার নিশ্চিন্তে ঘুরে আসতে পারবেন। আমরা নিজেদের মত করে যাওয়াতে বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলাম।
একটু আগে আগে এয়ারপোর্ট যেয়ে বোর্ডিং পাসের জন্য লাইনে দাড়ালাম। বিশাল ভীড়। জীবিকার জন্য যারা বিদেশ পাড়ি দিচ্ছে তাদের ভীড় বেশি। বোর্ডিং পাস দেবার লোকেরা দেখছি অনেকের সাথে খারাপ ব্যবহার করছে। পাসপোর্ট ভিসা টিকিট সব থাকার পরেও তারা জিজ্ঞেস করছে কি জন্য যাবেন? আরে বাবা এই প্রশ্ন করার তুমি কে? এইটা জিজ্ঞেস করবে সংশ্লিষ্ট দেশের দুতাবাস যারা ভিসা দিয়েছে! মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম আমাকে যদি জিগায় তাহলে বলব বাথরুম করতে যাব। আমার সিরিয়াল আসলে দেখলাম তেমন কিছুই বলল না। বোর্ডিং পাস দিয়ে দিল। তবে হাতে নিয়ে দেখি সিট দুজনের আলাদা দিয়েছে। আবার ফেরত দিয়ে ঘটনা জানতে চাইলাম। বলে আপনিতো আগে বলেননি। কতবড় বেয়াক্কেল হইলে এই কথা বলে! একসাথে দুইটা পাসপোর্ট দিয়ে আবার বলতে হবে আমরা দুজন একসাথে! ওদের উপর আগে থেকেই আমি বিরক্ত হয়ে আছি। এ জন্য উত্তরটা একটু বাকা করে দিলাম। বললাম ভাত খাবার সময় আপনি যে ডান হাত দিয়ে খান কারো তো সেটা বলতে হয়না। আমার দিকে চুপ করে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে আবার চেঞ্জ করে দিল।
ইমেগ্রেশনে এসে দেখি এখানেও বিশাল সিরিয়াল। ভাগ্যিস একটু আগে আগে এসেছিলাম। খুব ধীর গতিতে এক আংগুল দিয়ে আমাদের পুলিশ অফিসারেরা কম্পিউটার টিপতেছে। আমি নিশ্চিত একটু দেরি করে আসলে আমার বিমান চলে গেলেও তাদের ইমেগ্রেশন শেষ হইতো না। অবশেষে তাদের সামনে আসলাম। প্রথমেই জিজ্ঞেস করল কোথায় যাবেন? অথচ তিনি আমার পাসপোর্ট খুলে আমার থাই ভিসার দিকে তাকিয়ে আছে। উত্তর দিলাম না, নিজে নিজে উত্তরটা নিয়ে আবার প্রশ্ন করলো কয়দিন থাকবেন? মর জ্বালা, তার হাতে কিন্তু আমার রিটার্ন টিকিট আছে!! বললাম আমার এটা অন ওয়ে টিকিট না, রিটার্ন টিকিট। আমার দিকে তাকিয়ে অনেক কষ্টে টিকিটের ভাজ খুলল। মনে হচ্ছে তাকে দিয়ে আমি খাটিয়ে নিচ্ছি। উত্তরটা দিলে তাকে আর এই কষ্ট করতে হতনা। অথচ তিনি কিন্তু আমার টিকিটেও সিল মারবেন!
থাই এয়ারের নির্দিষ্ট সিটে বসে আছি। ব্যাংকক যাবার জন্য যতগুলো এয়ার লাইন্স আছে তার ভিতর থাই এয়ার সবচেয়ে ব্যায় বহুল। কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা কমে আপনি বিমান বাংলাদেশ বা রিজেন্ট এয়ারে যেতে পারবেন। তবে স্প্রিডে আপনি একটু পিছিয়ে থাকবেন। থাই এয়ার অন্যান্য এয়ার থেকে কম করে হলেও ১ ঘন্টা গতিতে এগিয়ে থাকে। তারপরেও আমাদের নিম্ন মধ্যবিত্তদেরর জন্য ২০ হাজার টাকা অনেক কিছু। বউ এর পাল্লায় পড়ে আমাকে থাই এয়ারের টিকিট নিতে হয়েছে। অবশ্য আমাদের বিমানের ডিসি-১০ খাল বিলে ল্যান্ড করার ইতিহাসও, থাই এয়ারের টিকিট নিতে উৎসাহিত করেছিল। সেদিন দেখলাম রিজেন্ট এয়ার তাদের রাডার অকেজো থাকা অবস্থাতেও আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট উড়িয়ে দিয়েছিল।
প্লেনে বসে থাইল্যান্ড
পিচ্চি পিচ্চি পুতুলের মত দেখতে থাই এয়ার হোষ্টেস ঘোরাফেরা করছে। পুতুলের মত বিশেষনটা অনেকের অপছন্দ হতে পারে। আসলে আমি বিমান বাংলাদেশে করে মালায়েশিয়া যাবার সময় দেখেছি খাস্তা স্বভাবের, মুখে মাস্তে পড়া মহিলারা সব এয়ার হোষ্টেস, মুখে অশুদ্ধ বাংলা ভাষা।
একটু পর ঘোষনা দেওয়া হল ফ্লাইয়ের কথা। এয়ার হোস্টেজরা দেখাতে থাকলো নিরাপত্তা ইস্যু গুলান। এক সময় উচুতে উঠতে থাকলো। জানালা দিয়ে উচু থেকে ঢাকা শহরকে সত্যি অস্বাধারন লাগছিল। হাতিরঝিলকে নিচে রেখে উড়ে চলল প্লেন। একসময় সব চোখের আড়ালে চলে গেল। প্লেন উপরে উঠছে, আরো উপরে। ৭হাজার ফিট থেকে ১৪ হাজার ফিট, ২০ হাজার ফিট শুধু উঠছে আর একটু পর পর ঘোষনা দিচ্ছে। একসময় উপরে উঠা বন্ধ হয়ে গেল। এখন মনে হচ্ছে প্লেন এক যায়গায় স্থির হয়ে আছে। সবাই সিট বেল্ট খুলে ফেলল। এয়ার হোষ্টেস আর ক্রুরা লাঞ্চ দেবার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ল।
লাঞ্চ খাওয়া শুরু করবো এমন সময় বউ বাইরের দিকে ইশারা করলো। জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আমি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। একি দেখছি আমি!! এ যেন স্বপ্নপুরী। মনে হচ্ছে চারিদিকে বিশাল বিশাল কনক্রিটের মেঘের ইমারত। সব স্থির। এ যেন মেঘের রাজত্বে আমি অবস্থান করছি। সে কি রুপ তার....! আমার পক্ষে সম্ভব নয় সেই রুপের ব্যাখ্যা দেওয়া।
২ ঘন্টা ৩০ মিনিট পর ব্যাংকক এসে ল্যান্ড করেছি। বিশাল এয়ারপোর্ট। ল্যান্ডিং পয়েন্ট থেকে ইমেগ্রেশন এলাকায় হেটে যেতে সময় লাগবে কমপক্ষে ৩০ মিনিট। আমরা গেলাম ১০ মিনিটে। প্যাসেঞ্জার স্পেজের মাঝ বরাবর ফ্লর এক্সেলেটর দেওয়া আছে। যার ইচ্ছা হেটে যেতে পারে আবার কেউ চাইলে ফ্লর এক্সেলেটরে দাড়ালে ফ্লর একাএকা চলতে শুরু করে। আমরা এর উপর দাড়িয়ে আছি অন্যদিকে আমি ভাবছি অন্যকথা। ইমেগ্রেশনে যদি আমার দেশের মত দেরি হয়ে যায় তাহলে বিপদে পড়ে যাব। সন্ধ্যা হতে চলল, এখান থেকে বের হয়ে রওনা দিতে হবে পাতায়ার দিকে। ঢাকা থেকে আসার সময় চিন্তা করে রেখেছিলাম ব্যাংকক থেকে বাসে পাতায়া যাব। ঘন্টা দুয়েক সময় লাগে বাসে করে পাতায়া যেতে। এই রাতে অপরিচিত পাতায়া শহরে যেয়ে হোটেল ঠিক করতে হবে। আগে থেকে হোটেল বুকিং দেওয়া হয়নি। নেট থেকে কিছু হোটেলের এড্রেস নিয়েছি। সেক্ষেত্রে ইমেগ্রেশন আমাদের দেশের মত হলে আসলেই বিপদে পড়বো। আশে পাশে তাকাচ্ছি আর আতংকিত বোধ করছি। এত মানুষ আর মানুষ, একটারপর একটা ফ্লাইট ল্যান্ড করছে। বিভিন্ন দেশ থেকে আসছে। সবার ইমেগ্রেশন পয়েন্ট একই যায়গা। ওরে আল্লাহ ওরে আল্লাহ.., এর ভিতর ইমেগ্রেশন পয়েন্টে হাজির হলাম। চোখের পলকে হাজার হাজার মানুষ লাইনে দাড়িয়ে পড়লো এবং চখের পলকে সব ফাকা হয়ে গেল। আমরাও পলকে পলকে বাইরে চলে এলাম। বের হবার আগে এয়ারপোর্ট থেকে ফ্রিতে ২০ বাথ ব্যালেন্স সহ দুইটা মোবাইলের সিম নিয়েছি। ট্যুরিষ্টদের জন্য ফ্রিতে দেওয়া হয়।
চারিদিকে অন্ধকার নেমে এসেছে। পাতায়া যাবার বাস স্টপেজ কিভাবে যেতে হবে জানিনা, সেটা কোথায় এটাও জানিনা। কারও কাছে জিজ্ঞেস করবো তেমন কাওকে দেখছিনা। পর্যটক যারা এসেছে তাদের জন্য গাড়ি রেডি আছে। আসার আগে থেকেই এরা ব্যবস্থা করে এসেছে। এর ভিতর আমাদের পাশে চারজনের দুটি বাংলাদেশী পরিবার এসে দাড়ালো। কথা বলে জানতে পারলাম তারাও পাতায়া যাচ্ছে। ট্রাভেল এজেন্সি এশিয়ান হোলিডেজের মাধ্যমে প্যাকেজে এসেছে। তাদের নিতে মাইক্রো বাস আসছে। আমরা কি করতে পারি জানতে চাইলে একটি থাই মেয়েকে দেখিয়ে বলল তার সাথে কথা বলে দেখেন। সে আমাদের গাড়িতে তুলে দিচ্ছে। তাকে যেয়ে বললাম আমরা পাতায়ার হোটেল ডিসকাভারি যেতে চাই, তুমি কোন সাহায্য করতে পারো কিনা? সে কি বুঝল আল্লাহ জানে। বলল আমি গাড়ি ঠিক করেছি হোটেল ব্রেভিলি প্লাজা পর্যন্ত, এখন তুমি অন্য হোটেলে যেতে চাইলে ড্রাইভারকে বেশি টাকা দিতে হবে। বললাম তুমি ড্রাইভারকে বলে দাও। সে কি কি যেন আলাপ করে জানালো আমাকে ২০০ বাথ দিতে হবে। থাই কারেন্সিকে বাথ বলে। আমাদের দেশের ২.৬৫ টাকা সমান তাদের এক বাথ। একটু অবাক হলাম। অনলি ২০০ বাথ!!! আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে ঝটপট উঠে পড়লাম।
ঝড়ের বেগে ছুটে চলছে গাড়ি, ১৩০-১৫০ এর নিচে কাটা নামছে না। বিশাল ছয় লেনের রাস্তা। রাস্তা থেকে বেশি ফ্লাইওভার। ফ্লাইওভারের উপর ফ্লাইওভার। রাতের বেলা দিনের মত আলো। কোন রাস্তায় ক্রসিং সিগনাল নেই। একটা ক্রসিং আসলেই রাস্তা একটা উপর দিয়ে চলে গেছে আর একটা নিচ দিয়ে। মাইক্রো বাসে আমরা ছয় জন। আলাপে আলাপে পরিস্কার হল ২০০ বাথের ঘটনাটি। আসল বিষয় হলো ব্যাংকক থেকে পাতায়া যেতে ট্যাক্সির ভাড়া ১০০০ বাথ আর মাইক্রো বাসের ভাড়া ১৫০০ বাথ। ওই থাই মেয়েটি মনে করেছে আমরা ছয়জন একসাথে। কিন্তু আমি ব্রেভিলি প্লাজায় না যেয়ে অন্য হোটেলে যেতে চাই। যার কারনে ড্রাইভারের সাথে কথা বলে আমাদেরকে বলেছে তোমাকে অতিরিক্ত ২০০ বাথ দিতে হবে। ড্রাইভারও খুশি এইকারনে যে আমরা ব্রেভিলি প্লাজা থেকে হোটেল ডিসকাভারি যেতে চেয়েছি তার ভাড়া ১০০ বাথের বেশি না। কিন্তু আমরা ২০০ বাথেই রাজি হয়েছি ।
১ ঘন্টা ৩০ মিনিটে আমরা পাতায়ার ব্রেভিলি প্লাজা হোটেলে আসলাম। সবাই নেমে গেল কিন্তু আমরা গাড়িতে থেকে গেলাম। ট্রাভেল এজেন্সির পক্ষ থেকে তাদের একজন বাংলাদেশী রিসিভ করলো। তাকে বললাম, আমরা আপনাদের লোক না, আলাদাভাবে এসেছি। অন্য হোটেলে উঠবো। সে একটু অবাক হলো, আমাদের লোক না তাহলে আমাদের গাড়িতে কেন? সে বলল আমার নাম মানিক, আমার নাম্বারটা রাখতে পারেন। কোন দরকার হলে আমাকে ফোন দিয়েন। এখানে আমি সাত বছর ধরে আছি। নাম্বার নিয়ে বের হয়ে গেলাম ডিসকাভারী হোটেলের দিকে। একটা মোড় ঘুরেই গাড়ি আমাদের ডিসকাভারী হোটেলে ঢুকিয়ে দিল। এভাবে পর পর কয়েকটি হোটেলে গেলাম। কোথাও রুম ফাকা নেই। আসলে আমরা যে সময়টা গিয়েছি এটা ট্যুরিষ্টদের সিজন। ওদিকে রাত ৯টা বেজে গেছে। অবশেষে ঐ মানিককে ফোন দিয়ে আমাদের সমস্যার কথা বললাম। তিনি আমাদের ব্রেভিলি প্লাজা হোটেলে ফিরে আসতে বললেন। আমরা ঐ গাড়ি নিয়ে আবার এখানে ফিরে আসলাম। ভাড়া আমাদের কাছ থেকে ২০০ বাথই রেখেছিল। মানিক সাহেব আমাদের ফোর স্টার ইন্ডিয়ান হোটেল ব্রেভিলি প্লাজাতে ২০০০ বাথ ভাড়াতে রুমের ব্যবস্থা করে দিলেন।
সময় নষ্ট করা যাবেনা, মাত্র তিন রাত চারদিন এখানে থাকবো। রুমে এসে ফ্রেস হয়ে বেড়িয়ে পড়লাম রাতের খাবারের জন্য, খাবার শেষে বিচ এলাকায় যাবো। কোন রকম রাতের খাবার শেষ করে বিচ এলাকার দিকে হাটা দিলাম।
ব্রেভিলি প্লাজা থেকে বের হলেই সামনে শহরের প্রধান রাস্তা। এই রাস্তা ধরে ওই পাড়ে গেলে অনেক গলির মত সরু সরু রাস্তা ভিতর দিকে চলে গেলে। যেকোন একটা দিয়ে ঢুকলেই আপনি বিচ রোড পেয়ে যাবেন। বড় ছোট সব রাস্তার দুপাশ দিয়ে বিভিন্ন প্রকার দোকানপাট। সব চেয়ে বেশি দোকান হলো মাসেজিং এন্ড স্পা। থাই ফুট মাসেজ বিশ্ব বিখ্যাত। হাফ প্যান্টের চেয়ে ছোট ছোট প্যান্ট আর হাতা কাটা গ্যাঞ্জি পরিহিত মেয়েরা আপনাকে মাসেজ করে দিবে, যদি আপনি নিতে চান। মেয়েরা রাস্তার দুপাশে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ডাকতে থাকে। ফুট মাসেজ ২০০ বাথ আর যদি সারা শরীর মাসেজ নিতে চান তাহলে ৫০০ বাথ গুনতে হবে। গ্লাসে ঘেরা দোকানের দিকে তাকালে দেখা যায় আন্ডার ওয়ার পড়া সুপুরুষ (!) গুলো শুয়ে আছে আর থাই সুন্দরী একজন তাকে মাসেজ করে দিচ্ছে। এছাড়া আছে ফিস মাসেজ। আমাদের দেশের চেলা মাছের মত এক আংগুল সাইজের সরু টাইপের একধরনের মাছ কাচের জাড়ে রাখা আছে। জাড়ের পানিতে পা চুবিয়ে বসে থাকবেন। পা দেবার সাথে সাথে শখানেক মাছ আপনার পা কুট কুট করে কামড়াতে থাকবে। দিনের বেলা মেক্সিমাম দোকান আপনি বন্ধ পাবেন। বিকালের পর আস্তে আস্তে সব খোলা শুরু হয়। পাতায়াকে বলা হয় নাইট লাইফ। দিনের পাতায়া নির্জন নগরী। রাতের বেলা জীবন শুরু। সারা রাত মানুষ গিজগিজ করে। দিন যত এগিয়ে আসে মানুষ তত কমতে থাকে। (চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৮