এখন আর তেমন সোশ্যাল মিডিয়ায় এক্টিভ নই। মূলত বিরক্তির কারণে। বিভিন্ন বিরক্তি আছে, সব বলে শেষ করা সম্ভব নয়। একটা বড় বিরক্তির কারণ হচ্ছে একেবারে যাচ্ছে-না-তাই লোকজনের ভাইরাল কিছু হয়ে যাওয়া!
মূল লেখায় যাওয়ার আগে বলে নেই। হিরো আলম এখানে আমি শুধুমাত্র উদাহরণ বলতে বুঝাচ্ছি; আদতে এক নাম দিয়ে পুরা এই ধরণের সেলিব্রিটিদেরকে বুঝাচ্ছি। তাই কেউ অযথা হিরো আলম রিলেটেড কথা মন্তব্যে না লিখলেই খুশি হবো।
হিরো আলম, অপু ভাই সহ বিভিন্ন মানুষ ইদানিং কালে খুব খুব নাম করেছে। হিরো আলমের বিষয়ে খবর পড়েছিলাম খুব সম্ভবত শাহরুখের পরে তাকেই বেশীবার খোঁজা হয় গুগলে!
নেটিজেনেরা এ নিয়ে মহা বিরক্ত। তারা নানান ভাবে নানানজনকে অপমান অপদস্ত করতে ব্যস্ত। হিরো আলমের মত অনান্যদের কটু কথা বলে একদল খুব মজা পায়।
সেদিন একটা ভিডিও এক ভাই দিলো, কোন এক আমেরিকান মহিলা শিল্পী; সে খুব খ্যাঁক খ্যাঁক করে হাসতে হাসতে তার হেটারসদেরকে ধন্যবাদ দিচ্ছে। বলছে এরা আমাকে ব্যাঙ্গ করতে গিয়ে আমার ভিডিও দেখে, আর সেটা আদতে আমারই উপকারে আসে!
তার কথা কিন্তু সত্য। নুসরাত ফারিয়ার "পটাকা" গানের কথা মনে আছে? বাংলাদেশের ইতিহাসে এত ডিসলাইক পাওয়া গান মনে হয় আর নাই। কিন্তু দিন শেষে তারা সব তথ্য হাইড করে দিয়েছে; উল্টার উপরে ভিডিও ভিউ পেয়েছে কোটি কোটি। সবার লাভ। নেটিজেনেরা মজা নিয়ে মজা পেয়ে লাভ করেছে; আর নুসরাত ফারিয়া ও প্রোডাকশন হাউজ লাভ করেছে টাকা দিয়ে!
খুব প্রথমে যান, যখন এই সব ফালতু লোকগুলি নাম করতে শুরু করে, সেই সময়ে যান। এদের কিন্তু আমরা এই হাসি ঠাট্টার নামেই উঠাই। পরে যখন খুব নাম করে যায় তখন বিজ্ঞপন দাতারা এদের ব্যবহার করে। এক সময় এরা মনে করতে থাকে যে অন্যেরা আমার সমকক্ষ না হতে পেরে হাসি ঠাট্টা করছে। এদের স্বাভাবিক জ্ঞানটুকুও লোপায়। এরা নিজেদের খুব বড় মনে করে বসে থাকে!
এদের থেকে খারাপ লোক থাকে, যারা এক সময় এদের সাপোর্টেই কথা বলতে থাকে। অন্য কেউ গঠন মূলক কিছু বললে তখন এরা বলে আপনি পারলে ওর মতে হয়ে দেখান বা আপনি পারলে ওর মত নাম করে দেখান।
আর একদল আছে আরও এক কাঠি সরেস! এরা তখন এই লোক গুলি গরীব বলে মানুষ দাম দেয় না ইত্যাদি ইতাদি বলে বেড়ায়।
------------
আমি এক সময় হলিউডের মুভি খুব দেখতাম। খুব মানে খুব। সপ্তাহে অন্তত ১০-১২টা। নতুন, পুরাতন, ভালো রেটিং, খারাপ রেটিং সব। বিভিন্ন অভিনেতার অভিনয় দেখেছি; অবাক হয়েছি কিভাবে মানুষ একটা চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলে। ব্যাটম্যান সিরিজে একজন জোকার আছে, তার কথা সবাই শুনেছেন হয়ত। তার অভিনয়ের মত অভিনয় খুব কম খলনায়কই করতে পেরেছে।
হলিউডের মুভি গুলির মধ্যে যেগুলি হাসি ঠাট্টায় পরিপূর্ণ, তার বেশীর ভাগেরই অভিনয় হয় সাবলিল; কিন্তু মানুষ হাসতে হাসতে শেষ। তার বিপরীতে আমাদের দেশের দিলদার কিংবা টেলি সামাদ এর মত অভিনেতাদের জন্য কষ্ট লাগে। খুব ছ্যাবলামী করে মানুষকে হাসাতে হয় তাদের! কার সমস্যা? পরিচালকের নাকি অভিনেতার? নাকি দর্শকই বড় সমস্যা?
------------
আমার সামনে টমক্রুজের কোন ইন্টারভিউ এমন পড়েনি যেখানে সে নিজেকে সেরা বলছে। তার সাথে কেউ পাল্লা করে পারে না ইত্যাদি ইত্যাদি বলছে। কিন্তু দেশের ভিতরেই অনেক আছে, যারা টমক্রুজকে দামই দেয় না। বরং নিজেকে বড় বলে বেড়ায়।
কেন?
-----------
খুব কষ্ট নিয়ে দেখতে হয়, ব্লগেও এই জনগন এখন ঢুকছেন। কেউ কেউ নিজেকে খুব সেরা, কেউ কেউ নিজের পছন্দজনকে সেরা ইত্যাদি তকমা দিয়ে দিচ্ছেন। তাতে সাপোর্ট জানানোর লোকও কম জুটছে না।
-----------
২০০৮-২০১৩ এর দিকের ব্লগকে খুব মিস করি। একটা জমজমাট পরিবেশ ছিলো। এমন এমন সব লেখা আসতো যার একএকটা পড়ে মনে হতো কিছু একটা শিখেছি, কিছু একটা জেনেছি। তুমুল আলোচনা হতো। আমি জীবনে যে সব মজার মজার কৌতুক পড়েছি, তার বেশীরভাগই ব্লগে। যে সব দুর্দান্ত লেখা পড়েছি, তার বেশীরভাগই ব্লগে। যে সব দুর্দান্ত কবি দেখেছি, তার বেশীর ভাগই ব্লগে। এখন সেটা মিস করি।
গ্রুপিং আগেও ছিলো; কিন্তু এখন কেমন যেন সব লন্ডভন্ড হয়ে গেছে!
-----------
নিজে যাকে বড় বলে, বড় সে নয়; লোকে যাকে বড় বলে, বড় সেই হয়! এই কথা আমরা কেন যেন ভুলতে বসেছি!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০২২ রাত ৩:১৫