ক্লাস সিক্সের সমাজ বিজ্ঞান বইয়ে একদম শেষে একটা চ্যাপ্টার ছিলো। চ্যাপ্টারের নাম মনে নেই; তবে সেটা জনসংখ্যা বিষয়ক ছিলো। সেখানে একটা বিষয় ক্লিয়ার করা ছিলো যে বাংলাদেশের সবচাইতে বড় সমস্যা হচ্ছে জনসংখ্যা সমস্যা।
চায়না এক সময় তাদের জনসংখ্যার লাগাম টেনে ধরতে ঘোষণা করেছিলো এক-বাচ্চা-পলিসির। বাংলাদেশেও এক সময় জোরেশোরে প্রচার চলতো, 'ছেলে হোক মেয়ে হোক, দুটি সন্তানই যথেষ্ট'। পরে সেই ঘোষণা চেঞ্জ করে বলা হয়েছিলো, 'দুটি সন্তানের বেশি নয়, একটি হলে ভালো হয়'। সেটা ২০১২ এর কথা। যদিও পত্রিকার নিউজ অনুযায়ী সরকার ২০১৮ তে সেই স্লোগান থেকে বের হয়ে 'ছেলে হোক মেয়ে হোক, দুটি সন্তানই যথেষ্ট' তে আবার ফেরৎ আসার কথা চিন্তা করছিলো।
বাংলাদেশের জনসংখ্যার লাগাম টেনে ধরতে এক সময় পশ্চিমাদেশ গুলি বিনামূল্যে কনডম ও জন্মনিরোধোক পিল বিলি করতো; সরকারী স্বাস্থ্য অধীদপ্তরের মাধ্যমে। এখনও ফ্রিতে এই সেবার চলে কিনা ঠিক জানা নেই।
যাই হোক, বলছিলাম সুখবরের কথা। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে ১৫-৪৯ বছর বয়সী মেয়েদের মধ্যে গড়ে বাচ্চা জন্ম দেবার সংখ্যা ছিলো ৬.৪ যা ২০১৯ এর দিকে ২.০৫-২.৩ এর দিকে নেমে এসেছে।
উপরের তথ্য গুলি নেওয়া হয়েছে এখান থেকেঃ Click This Link
এ বছরেরই নভেম্বরে ফাইনান্সিয়াল টাইমস একটা রিপোর্ট করেছেঃ China’s population is shrinking, fast।
এদিকে জাপানের পত্রিকা দি জাপান টাইমস এ বছরের আগষ্টে রিপোর্ট করেছেঃ Japan's population drops by record number to 126.65 million amid pandemic
ইতালীতে সম্প্রতি পোপ সকলকে বেশী করে বাচ্চা নেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন; এবং সরকারকেও অনুরোধ করেছেন এ বিষয়ে জনগনকে উৎসাহীত করতে। যদিও এবারই প্রথম বলেছেন এমন নয়, আগেও তিনি একই তাগিদ দিয়েছেন। এ বিষয়েও নেটে একটু ঘাটলেই পেয়ে যাবেন।
মোট কথা, সারা পৃথিবীতে (খুব সম্ভবত রহিঙ্গা বাদে) সবাই বাচ্চা কম কম ফুটানোর সিদ্ধান্তের দিকেই যাচ্ছে। এতে করে বুড়া জনসংখ্যা বেড়ে যাবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তাতে আমার দৃষ্টিতে ভালোই হয়। কারণ বয়স্ক মানুষেরা স্বাভাবিক ভাবে জ্ঞানী হন, কারণ তাদের এক্সপেরিয়েন্স বেশী। জ্ঞানী জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়া পুরা মানবজাতীর জন্য কল্যানকর হবে আশা করা যায়।
জানা কথা চাঁদগাজী সাহেব আমাকে সৌদী আরবের কথা জিজ্ঞাসা করবেন। তাই আগে থেকেই সৌদী আরবের অবস্থার একটা চিত্র নিচে দিয়ে দিলাম।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে যে ১৯৮০ এর দিকে সৌদী আরবে জনসংখ্যা বাড়ার প্রবণতা যেখানে ৬% ছিলো, সেটা নেমে এখন ১.৬% এ এসেছে। খেয়াল করলে দেখা যাবে একবার কমে ২০০০ এর দিকে আবার যে বাড়ার প্রবণতা ছিলো, সেটা ২০১০ এর দিকে এসে আবার নেমে গেছে। সৌদীদের কেউ কেউ (অফিসিয়াল কেউ না) বলে ইন্টারনেট প্রচলিত হওয়ার পর থেকে এখানের মেয়েরা বুঝতে পেরেছে যে আগের ৬/৭টা বাচ্চার মা হওয়া ভালো না; এতে নিজের ফিগার নষ্ট হয়।
যাই হোক, ওভারঅল খবর হচ্ছে, সারা পৃথিবীতে আগে যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছিলো, তা মোটামুটি লাগাম টেনে ধরা হচ্ছে। তার সাথে সাথে বিভিন্ন দেশে একই লিঙ্গের বিবাহের কারণে ভবিষ্যতে জনসংখ্যা বাড়ার এই ধারা আরও কমবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
এতে ক্ষতি কি? সেটা বুঝতে হলে অনেক জ্ঞানী হতে হবে। অবশ্য অত্যাধিক জ্ঞানীরা এর মধ্যে ক্ষতির কিছু খুঁজে পায়নি এখনও।
কমছে কমুক না, আমার ঢাকায় একটা জমি কেনার শখ হয়েছে কয়েকদিন হলো। জনসংখ্যা কমলে দামও একটু কমতে পারে। তবে মনে হয় এর জন্য কয়েক শতাব্দী না হোক, বেশ লম্বা সময় অপেক্ষা করতে হবে।
---------------------
আমার মতামত কি? আমি বলি বাচ্চা ফুটাও!