জয় জাহাজি স্ট্যাটাস দিছে " প্রেমিকার নাভীর উপরে মদ রাইখা খাইলে দুজনের নেশা হয়"। আবার কে একজন যেনো একবার বলছিলো প্রেমিকারে মাতাল কইরা প্রেম করতে না পারলে সারাজীবন প্রেম করেও প্রেমের আসল মজা পাওয়া যাবে না। ডাইলের মজা তলে প্রেমের মজা নাভীর উপর লাল জলে।
এইসব ভাবতে গিয়েই সব গুলিয়ে ফেলছিলাম। একবার ভাবতেছি মদ খাইয়া প্রেম করুম আবার ভাবতেছি প্রেম খাইয়া মদ করুম। অনেকটা ভাবতেই কেমন মাতাল হইয়া গেলাম। নিজেকে স্বাভাবিক করে ঠিক করলাম মাতাল আমরা দুজনে একসাথেই হবো, একা হবো না। প্রেমিকার নাভীতে রাইখা মদ খাবোই খাবো। কিন্তু পকেটে টাকা ছিলো না মদ কেনার। শেষ পর্যন্ত বাংলা সিনেমার নায়কের রিক্সা চালিয়ে অপারেশনের টাকা কিংবা রক্ত কেনার টাকা জোগাড় করে ফেলা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আমি রিক্সা চালিয়ে মদ কেনার মিশনে নামলাম। রিক্সা চালাতে গিয়ে মাঝে মাঝে হতাশ হয়ে গেলে আমি আমার রিক্সায় ওঠা কিছু ধৈর্য্যহীন কাপলকে দেখে মোটিভেট হতাম। যারা রিক্সার মধ্যেই মাতলামো শুরু করতো। এদের দেখে আরো জোরে প্যাডেলে চাপ দিতাম। ফাইনালি রিক্সা, ভ্যান চালিয়ে টাকা জোগাড় করে মদ কিনলাম। গ্যারেজে রিক্সা জমা দিয়ে মাঝরাতে মদ নিয়ে বাসায় আসার পথে মহল্লার বিশিষ্ট মদখোর সাম্বু পথ আটকাইয়া বললো-
--অনুপ্রেরণা নিবি বাংলা সিনেমার রিক্সা চালক নায়কের কাছ থেকে। কিন্তু বাংলার ভিলেনকে ফেস করবি না তাকি হয়!?
--দেখ সাম্বু, তোর শত্রুতা আমার সাথে, আমার প্রেমিকার সাথে না। এই মদ আমার প্রেমিকার জন্য।
--হাহাহাহা কর আরো মাতলামো কর। মজা লাগে মজা! তোর প্রেমিকার লগে মদ খামু আমি তুই মাতাল চোখে ঢুলুঢুলু হয়ে দেখবি।
--ওই জাম্বু, আমাকে নিয়ে যা বলার বল, আমার প্রেমিকাকে নিয়ে কিছু বললে তোর মদ খাওয়ার রাজকীয় গ্লাস ভেঙ্গে ফেলবো হারামজাদা।
-- হালায় প্রেমিকার লগে মদ খাওয়ার চিন্তা কইরাই মাতাল হইয়া গেছে। হালায় জাম্বু ভাইরে পাইলো কই! ভাইতো মইরা গেছেগা। ওর প্রেমিকার লগেই মদ খাওয়া লাগবে! ডাবল নেশা হবে তাইলে। ওই মদের বোতল ল হালার কাছ থেকে।
আমাকে তিনজন শক্ত করে ধরে পালাক্রমে সবাই আমার মদ খাইলো। আমাকে এক ফোঁটাও দেয়নি। অনেক চেষ্টা করেও আমি কিছু করতে পারিনি। গাঁয়ে শক্তিই পাইনাই। কিন্তু বুঝলে পারতেছিলাম না মদ না খাইয়া মাতাল হইলাম ক্যামনে! এরপর আমি প্রেমিকার সাথেই মদ খাওয়ার বাসনাটাকে জীবন মরন পণ হিসেবে নিলাম।
আবার রিক্সা চালিয়ে টাকা জোগাড় করে আরেক বোতল মদ কিনে বাসায় আসার পথে ধরলো পুলিশে। তারা আমাকে হাজতে ডুকিয়ে আমার সামনেই আবারো পালাক্রমে আমার গায়ের রক্ত পানি করে কেনা মদের বোতল শেষ করে ফেললো। জাম্বুর নাহয় মদখোর ছিলো কিন্তু পুলিশ কেনো এভাবে আমার মদ খেলো। এটা ভাবার আগেই নিজেকে আবিষ্কার করলাম লাঠিওয়ালা একটা মোটা পুলিশের সামনে। অফিসার আমারে কয়-
--আর কে কে আছে তোর গ্যাংয়ে?
--কিসের গ্যাং স্যার! আমি গরিব, রিক্সা চালায়া খাই। প্রেমিকার নাভিতে রাইখা মদ খাবো সেজন্য মদ কিনছিলাম।
--মেয়েছেলের দালালীও করস! তাইলেতো বিশাল মাল তুই। একে একে সবার নাম বল নাইলে তোর পুটকিতে রাইখা গরম ডিম খাবো শালা।
ভাবলাম প্রেমিকার নাভীতে রাইখা মদ খাওয়ার আগে কেউ পুটকিতে রাইখা ডিম খাক। দুইটাইতো খাওয়াখাওয়ির বিষয়, অভিজ্ঞতা হবে। বললাম-
--সহমত স্যার।
--শালা মশকরা করস আমার লগে! অই গরম ডিম আন।
এরপর আমার উপর দিয়ে যা গেলো সেটা না বলাই ভালো।
মাদক সরবরাহ ও নারী পাচারের অভিযোগে আমি একবছর জেল খেটে বের হলাম। কিন্তু মাথা থেকে প্রেমিকার নাভিতে রেখে মদ খাওয়ার খায়েশ বের হলো না। লেগে পড়লাম কাজে। "দানে দানে তিনদান" এই মোটিভেশন নিয়ে মদ কিনে এবার কোন জামেলা ছাড়াই বাসায় আসলাম। বাড়িওয়ালা ততদিনে বাসায় থাকা আমার সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রুমে নতুন ভাড়াটিয়ার কাছে ভাড়া দিয়ে দিয়েছে। ভাগ্যিস মদের বোতলটা সদ্য কিনেছি, রুমে রাখতে হয়নি। না হলে খাচ্চর বাড়িওয়ালা মদটাও মেরে দিতো।
ঢাকা শহরে আরো একমাস এখানে সেখানে থেকে জীবনের সাথে যুদ্ধ করে নতুন বাসা নিলাম। মদের বোতলটা স্বযতনে Joy Jahaji'র বাসার ফ্রিজে রেখেছিলাম। কে জানতো জয় জাহাজী আমাকে "শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দেয়া"র প্র্যাক্টিক্যাল শিক্ষা দিবেন। মদের বোতলের কপালে যা হবার তাই হলো। কিন্তু আমার কিছুই হলো না।
" একবার না পারিলে দেখো শতবার" এই বাক্য থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আবারো ঝপিয়ে পড়লাম। সফল হলাম। মদ কিনলাম। এবার আর কোন ভুল করিনি, সরাসরি মদ নিয়ে বাসায় আসলাম। বাসায় কিছুটা আলোছায়ার ছোঁয়া এনে একটা রোমান্টিক পবিবেশ তৈরি করলাম। একটা রেক্সিনও নিলাম বিছানায় দেয়ার জন্য, যাতে নাভির উপর রাখা মদ গড়িয়ে পড়ে বিছানা নশজাত না হয়। প্রেমিকার নাভীতে রেখে মদ খাওয়ার সকল আয়োজন সম্পন্ন করে প্রেমিকাকে ফোন দেয়ার জন্য মোবাইল হাতে নিয়ে কোথাও প্রেমিকার নাম্বার পেলাম না, নাম্বার খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত হওয়ার পর হুট করে মনে পড়লো,
আমারতো কোন প্রেমিকাই নাই।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪০