somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুদ্ধাপরাধীদের জন্য আলাদা কবরস্থান চাই

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে আপামর জনগণের স্বতঃস্ফুর্ত অংশ গ্রহণ বিশ্ববাসীর কাছে ছিলো এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তারপরেও কিছু ঘৃণিত বেঈমান, কুলাঙ্গার বাঙালী ছিল- যারা মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছে। শুধু বিরোধীতা করেই চুপ থাকেনি, তাঁরা নির্বিচারে বাংলাদেশের নিরীহ জনগণকে হত্যা করেছে, মুক্তিযুদ্ধাদের ওপর নির্যাতন করেছে, লাখ লাখ মা-বোনের ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে । সর্বোপরি বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অস্বীকার করেছে। এইসব বেঈমান, মীরজাফর, রাজাকারদের বিচার দেরীতে হলেও করা হচ্ছে । স্বাধীনতার স্বপক্ষের বাংলাদেশের সাধারন জনগণ এই সব রাজাকারদের বিচারের রায় কার্যকর করায় উৎফুল্ল, আনন্দিত ।



আমরা জানি, যেসব শীর্ষ পর্যায়ের যুদ্ধাপরাধীরা ধরা পড়েছে, বিচার হয়েছে, রায় কার্যকর করা হয়েছে, তারাই শুধুমাত্র দেশের স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেনি, তারাই কেবল মানুষ হত্যা, অত্যাচার, নির্যাতন করেনি, তাদের সাথে আরো অনেক রাজকার, আল বদর, আল শামসসহ ঘাতক আছে , যাদেরকে আমরা বিচারের আওতায় এখনো আনতে পারিনি। প্রকৃতির নিয়মেই প্রতিদিনই যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত অনেকেই এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। কেউ দেশের বাইরে, কেউ দেশের ভেতরে। যারা যে ধর্মের সেই ধর্মের নিয়মেই শেষ কৃত্য সম্পাদন হচ্ছে। মুসলমান হলে তাদেরকে কবরস্থানে ধর্মীয় নিয়ম-কানুন মেনে দাফন কার্য শেষ করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো- যে মাটিতে মুক্তিযুদ্ধের ত্রিশ লাখ শহীদ ঘুমিয়ে আছেন, সেই মাটিতে কিভাবে যুদ্ধাপরাধীর কবর হবে?



ধর্মীয় সহানুভুতির আড়ালে এই সব যুদ্ধাপরাধীরা নীরবে, কখনো কখনো বীর মুক্তিযুদ্ধার কবরের পাশে শায়িত হচ্ছে। একজন যুদ্ধাপরাধী কোন ভাবেই একজন মুক্তিযুদ্ধার পাশে শায়িত হতে পারে না, হলে সেটা মুক্তিযুদ্ধাদের প্রতি অপমান প্রদর্শিত হয় বলেই আমার ধারনা!


আমি আমার এই লেখার মাধ্যমে সরকারে কাছে বিশেষ করে স্বাধীনতা স্বপক্ষের সরকারের কাছে জোর দাবী জানাচ্ছি, সরকার যেন যুদ্ধাপরাধীদের জন্য পৃথক একটা কবর স্থান নির্ধারন করে দেন। সেখানেই যেন সব যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের দোসরদেরকে শায়িত করা হয়।ইতিমধ্যে যারা মারা গেছে বা বিচারের আওতায় দন্ড কার্যকর করা হয়েছে- তাদের কবর এই বিশেষ কবরস্থানে প্রতিস্থাপন করা হোক ।

আমার এই দাবীর সমর্থনে কিছু যুক্তি নিচে তুলে ধরলাম:

১। নতুন প্রজন্মকে যুদ্ধাপরাধী ও যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে ।

২। ভুল ক্রমেও কোন রাজাকার, রাজাকারের বাচ্চা, দোসর এবং সমর্থনকারী শহীদ মুক্তিযুদ্ধার সমাধীর পাশে শায়িত হতে পারবে না।

৩। সাধারন মানুষ যেন বছরে একদিন ঘৃণা জানাতে ঐ কবরস্থানে গিয়ে থুথু ছিটাতে পারে।


৪। প্রতিটি যুদ্ধাপরাধীর কবরে নাম ফলকে লিখতে হবে "যুদ্ধাপরাধী অমুক" যেমন: "যুদ্ধাপরাধী মীর কাশেম আলী" এরপর সংক্ষেপে তার কুকীর্তির ফিরিস্তি লেখা থাকবে, ভবিষ্যত প্রজন্ম জানবে এবং প্রচন্ড ঘৃণা নিয়ে ধিক্কার জানাতে পারবে।


৫। সর্বশেষে রাজাকাররা ধর্মীয় সহানুভুতির আড়ালে সরল মানুষদের ধোঁকা দিয়ে সহানুভুতি আদায় করতে পারবে না।


৬। যেভাবে যুদ্ধাপরাধীদের কথিত শহীদ আখ্যা দেয়া হচ্ছে, তা করতে পারবে না ।

৭. একাত্তরের গণহত্যার কুশীলবদের শহীদ আখ্যা দেয়া যাবেনা, নামফলকে রাজাকার, আল বদর ও যুদ্ধাপরাধীই লিখতে হবে।


যুদ্ধাপরাধীরা এদেশের কলংক । কলংকিত এসব যুদ্ধাপরাধীরা কোন ভাবেই যেন বাংলাদেশের সুনামধন্য , জাতীয়ভাবে সমাদৃত কবরস্থান গুলোতে স্থান না পায়। ওদের জন্য অতি দ্রুত একটি কবরস্থান তৈরি করা হোক এবং নাম দেয়া হোক "যুদ্ধাপরাধী কবরস্থান” ।

আসুন, যুদ্ধাপরাধীদের জন্য আলাদা কবরস্থানের দাবীতে সোচ্চার হই ।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৪
৬টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×