ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়েছিলে সেদিন তুমি, কিছু একটা বলতে চেয়েছিলে, বলতে পারোনি । আমি কিন্তু ঠিকই বুঝেছিলাম- কি বলতে চাচ্ছো । ইচ্ছে করছিলো - চিৎকার করে বলি- অপরাজিতা, ভালোবাসি তোমাকে ।
অপরাজিতা- সেদিনের সেই ভূলের মাসুল দিয়ে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত । এই সমাজ সংসার আর তুমুল বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে তোমাকে বুকে টেনে নিতে পারিনি , তোমার বলতে না পারা কথাগুলো আজও আমাকে তাড়িয়ে বেড়ায় । আজও মাঝরাতে ঘুমের ঘোরে তোমার কল্পছবি ভেসে উঠে স্মৃতির মানসপটে ।
জানি- ইচ্ছে করলে পারতাম, ক্ষণিকের জন্য তোমার চাওয়াটার মূল্য দিতে, হয়তো বা তুমি নিজেকে শান্তনা দিতে পারতে এই ভেবে- শেষ মূহুর্তগুলো প্রিয় মানুষটির সঙ্গে কাটিয়েছো বলে ।
যখন মরণব্যাধী তোমার রক্তে বাসা বেঁধেছিলো, সব স্বপ্ন যখন ফিকে হয়ে এসেছিলো, জীবন হলদে বিবর্ণ হয়ে পড়েছিলো তখনও কিন্তু তোমার পাশে ছিলাম , হাতে হাত রেখে সাহস যুগিয়েছি, ভাবতে পারিনি - এতোটা তাড়াতাড়ি তুমি চলে যাবে ।
সব আশা যখন শেষ হয়ে গিয়েছিলো, জীবন প্রদীপ যখন নিভূ নিভূ ঠিক তখনই তুমি জীবনের শেষ চাওয়াটা আমার কাছে চেয়ে বসেছিলে , আমি নিজেকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছিলাম না - বুঝতে পারছিলাম না আমার কি করা উচিত ।
অবশেষে যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম- তোমার শেষ চাওয়াটুকুও পূরণ করবো, ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গেছে- তুমি চলে গেলে না ফেরার দেশে , আমি আমার নিজেকে হারালাম তখনই ।
তারপর এক এক করে দিন চলে গেছে- সবাই ভূলে গেছে ভূলতে পারিনি তোমাকে, আমার অস্তিত্বকে ।
রাত দুটো, হাসপাতাল করিডোরে দাড়িয়ে ছিলাম, চিৎকার করে ডাকছিলে আমায়- তোমার পাশে বসলাম, তোমার অবাক চাহনি, ছলছল চোখে কতক্ষণ তাকিয়েছিলে বলতে পারবো না.... ডাক্তার যখন বলছিলো- তুমি নেই, তখন নিজেকে সামলে নিতে পারিনি । চিৎকার করে কেঁদেছিলাম .....
আজ চার বছর পরও ভূলতে পারিনি....
ভালো থেকো অপরাজিতা,
ঐ দূর আকাশে , তারার দেশে
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৬ রাত ১:০৬