নিজামি কি যুদ্ধাপরাধি? ৭১ সালে কি করেছিল নিজামি? কয়টা খুন করছে এই রাজাকার? কয়টা ধর্ষন করছে? কয়টা মেয়ের শাড়ীর আচল খুলে বুক খাবলে ধরছে এই ধাড়ী রাজাকার?
৭১ সালে নিজামির ভুমিকা কি?
৭০ সালে এই দেশে ভয়াবহ সাইক্লোন হয়, উপকুল এলাকায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়, সেই সময়ে পশ্চিম পাকিস্তানিরা গরিব বাংগালদের অবহেলা করে, সাক্লোনে টিনের চাল, ঘরবাড়ী ক্ষয় ক্ষতি হয়, হাহাকার করে উঠে অসহায় বাংগাল। তার কিছুদিন পরেই ৭০ এর নির্বাচন হয়। তখন ত পাকিরা জানত না কিভাবে ব্যালট বাক্স চুরি করতে হয়, ফলে পুর্ব পাকিস্তানের সব কটি সিটই পায় মুজিবের নৌকা, আর পশ্চিম পাকিস্তানের সব সিট পায় ভূট্টো পিপলস পার্টি। যেহেতু মোট ভোটে শেখ মুজিব এগিয়ে আছে, ৩০০ আসনের মধ্যে ১৭০ টি আসন পেয়ে আওয়ামি লিগ সংখ্যা গরিস্টতা লাভ করে এবং শেখ মুজিব প্রধানম্নত্রি হইবার যোগ্য হয়। কিন্তু বাদ সাধে ভূট্টো, সে প্রধানমন্ত্রি হইতে চায়।
এর আগে ১৯৬৮ সালে শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্তের মামলা হয়, সেখানে মুজিবের ফাসির রায় হয়। যদিও মুজিবকে বাচান ভাষানি, কিন্তু অবিশ্বাসের দানা বেধে থাকে পশ্চিম পাকিস্তানিদের মনে, ভূট্টো সেই সুযোগ নেন, তিনি মুজিবের প্রধানম্নত্রিত্ব নাকচ করেন।
এই ছেড়াবেড়া অবস্তা থেকে বাচার জন্য ইয়াহিয়া খান পুর্ব পাকিস্তানে আসেন শেখ মুজিব আর ভূট্টোর সাথে আলোচনা করতে। আওয়ামিলিগের ৬ দফা পড়ে দেখেন, সেখানে স্বাধিন বাংলাদেশের কোন কথা নাই, শেখ মুজিব স্বাধিন বাংলাদেশ চান নাই। আসলে পাকিস্তান ভাংতে চেয়েছে ইন্ডীয়া।
সেই সময়ে রাজনৈতিক অচলায়তনে জামাতের নেতারা শেখ মুজিবকে সাপোর্ট করেন, গোলাম আজম, নিজামি এরা সবাই বলেন শেখ মুজিবকে পাকিস্তানের প্রধানম্নত্রি করার জন্য। ৭১ সালের মার্চে ইহাহিয়া খান ঢাকায় আসেন মুজিবের সাথে রফা করতে, সেদিন শেখ মুজিব প্রধানম্নত্রি হলে আজকে বাংলাদেশ হত না, এটাই সত্য কথা। পাকিস্তান ভাংগার জন্য ভূট্টো দায়ী, এতে কোন সন্দেহ নাই।
সেই আলোচনা ভেস্তে যায়, ফলে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু হয়। গোপনে ঢাকায় ট্যাঙ্ক আনা শুরু হয়, ইন্দিরা গান্ধী টের পেয়ে যায়। পাকি জান্তারা ভেবেছিল কিছু ট্যাঙ্ক রাস্তায় নামালেই সব শান্ত হয়ে যাবে। কিন্তু ইন্দিরার চালাকি বুঝতে পারে নাই।
এদকে ইন্ডীয়া গোপনে গেরিলা যুদ্ধ করছে র'এর এজেন্ট দিয়ে পুর্ব পাকিস্তানের সিমান্ত এলাকায়, মদদ দিচ্ছে বিচ্ছিন্নতাবাদিদের। যুদ্ধ শূরু হয়ে যায়।
নিজামি ছিলেন ছাত্র সংঘের সভাপতি, কিন্তু তিনি যুদ্ধের ডামাডোলে বিষন্ন হন এবং ছাত্র সংঘ থেকে ইস্তফা দেন, রাজনিতি থেকে বিদায় নেন। পুরা যুদ্ধেই তিনি নিষ্ক্রিয় ছিলেন। নিজামির বিরুদ্ধে কোন চাক্ষুষ সাক্ষি নেই যে তিনি কোন নারির স্তন চুষেছেন বা কাপড় খুলে নেচেছেন। এটা সত্য যে, গোলাম আজম গং পাকিস্তানকে ভাগ হোক এটা চান নাই, তারা বুঝতে পেরেছিল এটা ইন্ডিয়ার গোপন কারসাজি পাকিস্তানকে ভেংগে দুভাগ করে দুর্বল করে দেয়া। সেই স্টান্ড পয়েন্ট থেকে তারা পাকিস্তান ভাগের বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু তারা ইন্ডীয়ার র'এর চালের কাছে হেরে গেছেন।
নিজামি হয়ত রাজণৈতিক কারনে যুদ্ধ বিরোধিতা করেছিলেন, সেদিন অনেকেই যুদ্ধের বিপক্ষে ছিলেন, কিন্তু সেটা ত যুদ্ধাপরাধ নয়। যুদ্ধাপরাধ করতে হলে খুন, ধর্ষন, এগুলির প্রমান থাকতে হবে। কিন্তু নিজামি তখন রাজনিতির সাথেই যুক্ত ছিলেন না, তিনি রাজনিতি থেকে ইস্তফা দিয়ে রিসার্চ ফেলোশীপে চাকরি করেন।
আজকে যারা মুক্তি যোদ্ধা, শাহ্রিয়ায়র কবির, জাহানারা ইমাম, মুনতাসির মামুন, ওয়াজেদ মিয়া, মুনির চৌধুরি, পান্না কায়সার, এরা সবাই সরকারি চাকরি করেছেন, এরা কি সবাই যুদ্ধাপরধি নাকি মুক্তিযোদ্ধা?
নিজামির ফাসি হবে, এটা নিশ্চিত, হয়ত এই লেখা পড়ার সময়েই নিজামির ফাসি হয়ে যেতে পারে। ফাসিটা নিশ্চিত করেছে মোদি, আপনি ইন্ডীয়ান ডিফেন্স স্ট্রাটেজি রিভিঊ পড়ে দেখতে পারেন। মোদি সরকার ঠিক করেছে, এই দেশে ইন্ডীয়া বিরোধি দল মাত্র একটাই - জামাত। তাই জামাতের সব নেতাকে ফাসিতে ঝুলাইতে হবে, তবেই এই দেশ মা দুর্গার গজে চড়ে শিশ্ন চাগাইতে পারবে। আসলে, এই দেশে রাজনিতি হল রিটেইল পলিটিক্স, বাঙ্গালির পেটে ভাত আর ইলিশ পড়লে সব কাফি, নিজামির ফাসি হোক আর খালেদার বালুর বাক্সে আটকা থাকুক, তাতে কি আসে যায়?
সুত্রঃ বিডিফার্স্টডটনেট
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৪৪