ফল সেশনের এক্সাম শেষ হওয়াতে কোন কাজ নেই। কাজ না থাকলে আমার আবার মন ভাল থাকে না। কি করব কিছু বুঝতে পারছিলাম না। বউ বলল চল দুইজনে মিলে বেড়িয়ে আসি। দুইজনে মিলে গেলাম বাইরে, কিন্তু ঠান্ডায় কতক্ষন আর বাইরে থাকা যায়। একটু পরে কিছু কেনা কাটা করে বাসায় চলে আসলাম।
দুইজনে মিলে যখন হাটছিলাম, আশে পাশে শুভ্র সাদা বরফ জমে কি সুন্দর না লাগছিল। রাস্তার দুইপাশে শুভ্র সাদা বরফ যেন চিক চিক করছে। এত শুভ্র সাদা আর কোন কিছু হতে পারে কিনা আমার জানা নেই।
বাসায় এসে কি করব বুঝতে পারছি না। হঠাৎ মনে হল দধি বানাব। মাথায় ওই যে শুভ্র সাদা বরফ ঘুরছে ওখান থেকে আইডিয়া আসল। সত্যি বলছি জীবনে কখনো দধি বানাইনি। কিন্তু মাথায় যে ভুত চাপছে বানাতেই-ত হবে।
কি করব ভাবতে ভাবতে গুগোল মামারে জিগাইলাম কিভাবে দধি বানাব। গুগোল মামা সাথে সাথে এত গুলো ভিডিও নিয়ে আইল, পড়লাম আরেক বিপদে কোনটা রেখে কোনটা দেখব!!
শেষ মেষ একটাতে দিলাম টিপ। দিল কিছু টিপস। তবে একটা মজার তথ্য জানতে পারলাম, দধি সর্বপ্রথম বানায় মিডেল ইষ্টের লোকেরা সত্য কিনা কইতে পারি না।
মাথায় এইটুকু ঢুকাইলাম ফ্রিজে চেক করে দেখলাম দুধ জমে পুরা পাথর হয়ে আছে। মেজাজটা গেল আবার বিলা হয়ে। অনেক টানা টানি করে ফ্রিজ থেকে বার করলাম কিন্তু যে পরিমান জমাট বেধে আছে মনে হচ্ছিল এক যুগেও মনে হয় গলবে না। খাবার দাবারের এই বিষয় গুলোতে আমি আবার নাক গলাই না বেশি। নলেজের অভাব দুঃখিত।
ভিজাতে দিলাম একটা পাত্রে, বসে আছি কি করব বুঝতে পারছি না। মনে হল রাতের খাবারটা সেরে নেই। রাতের খাবার সেরে নিলাম তখন-ও দুধ গলেনি।
বেকুবের মত কাজ করলাম, দুধ যে কিভাবে গলাতে হয় সেইটাই আমি জানি না। অনেকক্ষন পরেও দেখলাম যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থাইয় আছে। অবশেষে বউয়ের শরনাপন্ন হলাম (এক রকম বাধ্য হয়ে)।
দুধ গলা শুরু হইল কিন্তু ইনগ্রিডিয়েন্ট পরে দেখলাম ২%।
কিভাবে যে কি করব কতক্ষন ধরে যে চুলায় রাখতে হবে কে যানে।
আমার বউকে আবার ডাকলাম কি ব্যাপার? মনে মনে একটা মিচকি হাসি দিয়ে বলল কেন তুমি না দই বানাতে পার। আমি কইলাম যাও আমি পারলে বানাব না পারলে যা বানাব তাই খাব তোমারে ডাকব না।
সেই যে দুধ নাড়া শুরু করলাম, একটা ঘন্টা ধরে নাড়তে নাড়তে আমার হাত ব্যথা হয়ে গেল। কিন্তু কি করার মাথায় যে ভুতে ধরেছে দধি যে আমাকে বানাতে হবেই। আবার সেই সাথে বউয়ের খোঁচানি। দই-ত আমাকে বানাতেই হবে।
প্রায় একটা ঘন্টা নাড়ার পরে দেখলাম দুধ ঘন হয়ে এসেছে মনে মনে খুব খুশি হয়ে গেলাম দধি-ত হয়ে গেল।
মাগার মনে পড়ল এখন-ত আবার আগে বানানো দধি দিতে হবে। যাই হোক বাসায় ছিল দিলাম মেরে। ।
হের পরে মনে পড়ল এখন নাকি ১২ ঘন্টার জন্য ঢেকে রেখে দিতে হবে। আইচ্ছা কন-ত এত কষ্ট করে দধি বানানোর পরে আবার নাকি এখন খেতে পারব না।
আপনারা আমাকে মাফ করে দিয়েন আপনাদের দাওয়াত দিয়ে আনলাম কিন্তু দধি এখন খাওয়াইতে পারলাম না। আপনারা অপেক্ষা করুন খুব তাড়া তাড়ি আপনাদের জন্য খাওয়ানোর ব্যবস্থা করছি।
ঢেকে রেখেছি কাল নাগাদ খেতে পারব আপনাগো দোয়ায়। আর গুগোল মামার পরামর্শ যদি কাজে লাগে।
আর যদি দই না হয় ঈমানে কইতাছি দোষ আমার না দোষ গুগোল মামার। তব মানুষ ভালা, যদি এখানে না খাওয়াইতে পারি, তয় আমি নিজে কিনে খাওয়াব আপনাদের। দাওয়াত দিছি যখন কথা রাখুম।
আজ এখানেই কাল পর্যন্ত কিছুই বলতে পারছি না, জিভে দধির লোভ নিয়ে আজকে রাতে ঘুমাতে যাব।
ভাল থাকবেন। কিন্তু কোথাও যাইয়েননা আবার তাইলে কিন্তু শেষ হয়ে যাবে। তখন কিন্তু আবার আপনাগো আমার সহ খাওয়াইতে নিয়ে যাইতে হবে।
বিঃদ্রঃ ছবিটা আপাতত গুগোল মামার কাছ থেকে নেওয়া।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১০ সকাল ১১:৪৪