১..
একবার এসে ছুঁয়ে দিয়ে যাও
তোমার অই প্রতিষেধক হাতে
এ বুক, বুকের ভিতরের ঘর।
দেখে যাও,
কতোটা জরা-ব্যাধি, দুর্দশা এতে
নিঃসঙ্গ হবার পরের প্রহর থেকে।
তুমি একবার এসে ছুঁয়ে দিলে,
প্রাণ ফিরে পাবে
আঙিনার ফ্যাকাশে ঘাস,
বসন্তের মতো আবার যৌবন ফিরে পাবে বৃক্ষ।
একবার অই ঔষধি হাতে ছুঁয়ে দিলে
মিটে যাবে এ বুকের ভিতরের সকল দুঃখ,
পৌষের এক ভোরে যে আগুন লেগেছিল ঐ ঘরে,
তারপর থেকে সব জ্বলে পুড়ে ছাই!
পুড়ে যাওয়া বুক থেকে
এখন আর আগের মতো সুগন্ধি বেরুয় না,
কুটকুটে গন্ধে নাক চেপে পার হয়ে যায় সবে,
কেউ দেখে না!
তুমি এসে একবার ছুঁয়ে দিয়ে যাও,
দেখবে,
ভালবাসারা ফের জন্মাবে এখানে
হাইব্রিড কুঁড়িতে কুঁড়িতে বকুলের ঘ্রাণ ঝরবে।
আচ্ছা, দেবী, তুমি জানো কি?
তোমার ওটা হাত না ঔষধি!
ছুঁয়ে দিও হাত
পহেলা জানুয়ারী ২০১৫
রাত আটটে আটান্ন
কালনী এক্সপ্রেস
২..
আমার না খুউব ইচ্ছে করে প্রেমে পড়ি
এ্যাই শ্যাষ বয়সে
তোকে দেখে, তোকে ভেবে
কৈশোরের মতন মজনু সাজি।
ইচ্ছে করে,
আড্ডা ছেড়ে
যাই তোর পিছন পিছন,
ছুটে বেড়াই শহরময়
আলাভোলা সেই কৈশোরের মতন।
আড়চোখে
সাতসকালে দূর থেকে
ইচ্ছেমতন তোকে দেখি
চোখে চোখ পড়লে শ্যাষে
লজ্জায় মুখ আলতো মাখি।
কাঁপা হাতে পত্র নিয়ে রোজ বিকেলে
রাস্তা রুখি, সস্তা মাজনে দাঁত ঘষিয়ে
খ্যালখ্যালিয়ে শুধুই হাসি,
একলা একলা তোকেই ভাবি।
সন্ধ্যারাতে আকাশপানে তারার মাঝে
তোকে খুঁজি
হাত বাড়িয়ে পাইনা তোকে
বুকের মাঝে তুইকে বুঝি।
ইচ্ছে করে রোজ রাত্তিরে তোর আঁচলে
মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ি
স্বপ্ন দেখে
জেগে উঠি।
আমার যত সময় গ্যাছে, যাই গ্যাছে
সব শুধু তোকে ভেবে, তোকে দেখে,
বুকের ভিতর উন্মাদনা - মিটবে কবে?
সম্ববত তোকে পেলে।
আমার না খুউব ইচ্ছে করে এ্যাই বয়সে
প্রেমে পড়ি
খোলস ছেড়ে বয়স ভুলে আমার
তোকে,
যখন ইচ্ছে জড়িয়ে ধরি।
আমার না খুউব ইচ্ছে করে
আরো একবার
ভালবাসি, শুধুই তোকে
আমার তোকে।
আচ্ছা, তুই কি আমার হবি?
তুই কি আমি হবি?
'আমার না খুউব ইচ্ছে করে'
পশ্চিম রাজাবাজার
চারটে ছয় পঞ্চাশ
দশে ডিসেম্বর ২০১৪
৩..
আমার জন্ম হয়েছিল বহু আগে,
পিতৃপিষ্ঠ হতে মাতৃগর্ভ হয়ে
পৃথিবীতে আসার পর
তারপর বহু বছর পার হয়ে গেছে
বেড়েছে শুধু আমার ধড়।
তখনও আমার জন্ম হয় নি,
তবে আমার আত্না ছিলো
বুকের ভিতর কিছুই ছিলো না, ছিলো শূণ্যতা
তারপর তোমাকে পেয়ে জন্ম নিয়েছিলো
বুকের ভিতর কিছু, টের পেতাম তার প্রগাঢ়তা।
সেই থেকে আমার বুকে শুরু হলো জ্বালাপোড়া
অনুভূতিগুলো জ্বলছে আর জ্বলছে, আমি পথ চলছি
জ্বলে পুড়ে অঙ্গার, আমার সর্বস্ব- আগাগোড়া
ডিজেল ট্র্যাঙ্কের মতোই যেন 'জন্ম হতেই জ্বলছি'।
জন্ম হতেই জ্বলছি
পশ্চিম তেজতুরি বাজার
৩০ শে নভেম্বর ২০১৪
তিনটে তেপ্পান্ন
৪..
তোমার দুয়ারে ভালোবাসা লুটিয়ে পড়ে কুয়াশা হয়ে
আমার উঠোন জুড়ে কাঁপুনি দিয়ে ভালোবাসা ঝরে।
কতো কথা লুকিয়ে থাকে তোমার চোখে মুখে বুকে
রোজ সকালে কাঁথামুড়ি দিয়ে যখনি আড়মোড়া ভাঙ্গে।
ভুঁড়িভোজ হয় কাঁচা হাতে রাঁধা গরুর গোশতে
লেবুর অভাবে বিকল্প খুঁজে নিও আমার ঠোঁট কামড়ে।
লেম্বু
আঠাশে ডিসেম্বর ২০১৪
দুপুর একটে ছেচল্লিশ
কাওরান বাজার
৫..
তোমার মুখে ভালবাসি শব্দটা শোনার জন্যে
আমি কত অপেক্ষা করেছি! কত অপেক্ষা করছি!
চাতক পাখির মতো
বাতাসে কান পেতে রয়েছি,
একটু গুড়গুড় আওয়াজ পেলেই ভেবেছি
ঐ বুঝি বৃষ্টি এলো
এবার তোমায় নিয়ে খোলা রিকশায় ভিজবো।
তোমার ফিসফিসিয়ে বলা কথায়
ভুল করে কত মনে করেছি
ভালবাসি বলেছো
কিন্তু না, পরক্ষনে ভুল ভেঙেছে
দ্বিতীয় আওয়াজে।
তোমার মুখ থেকে ভালবাসি শব্দটা শোনার জন্যে
আমি কত অপেক্ষা করেছি!
তোমার কাছ থেকে একটু ভালবাসা পাওয়ার জন্যে
দিগ্বিদিক বাহানা করে ফিরেছি!
তুমি বুঝতে দেও নি
কতটা ভালবাসা লুকিয়ে আছে তোমার
ঐ মাংসপিন্ডের ভিতরে,
হয়তো আমিই বুঝিনি
স্বল্প মেধার অধিকারী বলে
হৃদঘটিত গাণিতিক হিসাবে মূর্খ বলে।
তবুও,
তোমার মুখ থেকে ভালবাসি শব্দটা শোনার জন্যে
জেগে থাকি একেকটা রাত, রাতের পর সকাল।
প্রতিটা মূহুর্ত চতুর হয়ে বসে থাকি
এভাবেই কেটে যাচ্ছে একেকটা প্রহর-কাল।
অপেক্ষা
রাত একট তেত্রিশ
পশ্চিম রাজাবাজার
তেরোই জানুয়ারি ২০১৫
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৫