somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তুই...তোর......আমরা

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১২ ডিসেম্বর, ছয়টা সতেরো

প্রিয় তুই,
আজ বহুদিন পর হঠাত্‍ তোকে চিঠি লিখতে বসে গেলাম, শেষ চিঠিটি তোকে কবে লিখেছি? চার বছর আগে। সে চিঠিও তুই পড়িস নি, এটাও পড়বি না জানি, পড়বে ভার্চুয়াল কিছু মানুষ, আমার কোন কথাই তোর কান পর্যন্ত পৌঁছেবে না।

ভালো আছিস? ভালো থাকারই কথা, আমাকে ছেড়ে নিজের মতো থাকা শিখে গেছিস। তুই করে বলছি কেন? আরে, আমাদের এখনকার সম্বোধন তো তুইই। তুই করেই তো কথা বলি, তুই না আমার জীবনে প্রথম বান্ধবী, আর আমিও তোর!

কেমন কাটছে তোর দিনকাল? খুব ব্যস্ত, তাই নাহ? হ্যাঁ, ব্যস্ততার কারনেই তুই আমাকে এখন মনে করতে পারিস না। সামনে কত ব্যস্ততার তোর! মাঝে মাঝে ফোন করিস কিন্তু কোন কথাই বলা হয় না, দুয়েকটা অজরুরী কুশল জিঞ্জাসা করেই শ্যাষ হয়ে যায় আলাপ। আমি ভালো আছি কিনা তা না পারতে জিজ্ঞেস করিস, তুই ভাবিস আমি অনেক ভালো আছি, তাই নাহ? হ্যাঁ রে, আমি অনেক ভালো আছি। তোকে ভুলে এখন অনেক মেয়েকে নিয়ে সময়ের পর সময় ডুবে থাকি চ্যাটে, ফোনে। তবে জানিস? যখন খুউব একা থাকি তখন তোর কথা খুউব মনে পড়ে। সবকিছু বদলে গেছে এখন, আগের সেই বাঁধহীন আবেগ আর নেই, নিয়ন্ত্রণ করা শিখে ফেলেছি সময়ের সাথে সাথে। তুইও শিখে ফেলেছিস!

আচ্ছা রে, তোর মেয়েটা এখন কেমন আছে? ভালো? খুব জ্বালাতন করে, তাই নাহ? করবেই তো। ওসব পাত্তা দিস না, সংসার ঠিকঠাক মতো সামলে রাখ।

আমার কথা জানতে চাইবি না? ওহ হো, তুই তো জানিসই আমার অবস্থা! হাহাহা, কখনো বিশ্বাস করতে পারলি না আমায়! কী কী করেছি তোর জন্যে তা তোকে বলেছি তুই ঠিকই বিশ্বাস করিস নি। আচ্ছা, তুই এমন কেন? সারাজীবনে তোর কাছে এতটুকুও মিথ্যা কথা বলি নি আর সেই তুই কিনা আমার প্রতিটা কথা অবিশ্বাস করে যাস! আমার না তখন খুব কষ্ট হয়, তাই হাসি। আজকে যে আমার এ অবস্থা, অর্ধমৃত জীবন, অন্ধকার ভবিষ্যত সবই তো তোকে ভালবেসে হয়েছে রে। জানি তুই বিশ্বাস করবি না, বলবি তোকে দোষারোপ করছি। না, না, আমি তোকে দোষারোপ করছি না, আমি শুধু বলছি যে তোকে ভালবেসে, তোকে না পেয়ে আমি নিজের সবচে বড় ক্ষতিগুলো করে ফেলেছি। কী আর করা! যা চলে গেছে তা তো গেছেই, ফেরত আনা যাবে না। আমার সোনালী সেদিনগুলো ফেরত আসবে না, উজ্জ্বল ভবিষ্যতও আর হবে না, এমনকি তুই, তুইও আমার জীবনে ফেরত আসবি না। ফেরত আসলেই কি সব আগের মতো হয়ে যাবে? না রে, সব বদলে গেছে। ফেরত আসারই তো কোন সুযোগ নাই। সে বাদ দে, আমি আশা করি না। আমি চাই না তোকে আমার জীবনে, দূরেই থাক তুই। দূর থেকেই ভালবাসবো। ভালবাসা তো এই নয় যে, পেতেই হবে, মানুষটাকে কিংবা ভালবাসাটাকে। ভালবাসা হচ্ছে ভালবাসা, ভালো বেসে যাওয়া, যতদিন পারা যায়, আমৃত্যু। আমি তোকে ভালবেসে যাব, বিনিময়ে কিছুই চাই না।

এ্যাই, তুই না সেদিন ফোন জিজ্ঞেস করলি কি চাই আমার? দেশে আসছিস, আমার জন্যে কিছু নিয়ে আসবি। দেখেছিস, আমি কিছু বলতে পারলাম না, চাইতে পারলাম না, তুই যাই দিতে বলছিস তাইই না করে দিছি। শেষ পর্যন্ত তুই গোঁ ধরলি, কিছু যদি না চাই তবে দেখা করবি না। আমি মুসবতে পড়লাম, তোকে যে আমি আরেকবার দেখতে চাই। শেষ যেবার চর্মচক্ষু দিয়ে দেখেছিলাম তা ভুলে গেছি, কারন হয়ত ঐ চোখ তখন ঝাপসা ছিল। আমি বললাম, কিছু একটা চাইব তবে মাথা আসছে না। তুই ফোন রাখার পরই মাথায় আসলো কি চাইব! কবিতা লিখে ফেললাম একটা তা নিয়ে, কয়েকদিন পর আবার তুই ফোন করলি জানার জন্যে, সেদিনও বলতে পারলাম না ফোন কেটে গেলো। তোর একটা ওড়না কিংবা ব্যবহারকৃত কোন কাপড়, এসবই চাওয়ার ইচ্ছে ছিল কিন্তু বলতে পারি নি, তুই ছেলেমানুষী ভাববি তাই! এ বয়সে কি ছেলেমানুষী মানায়? মানায় না। সেদিন তুই ফোন রাখার পর মনে হয়েছিল তোর একটা ওড়না যদি থাকত! বুকে জড়িয়ে ধরে উম নিতাম, তোর স্পর্শ নিতাম! নাকে গুঁজে গন্ধ নিতাম তোর গায়ের, ঘামের। চাইতে পারি নি রে!

চাইব দেখি, বুকে সাহস জমা করে চাইব, দিস আর না দিস তবুও একবার যেন অল্প সময়ের জন্যে দেখা হয় তা চাইব। আমি জানি, আমার সাথে দেখা করাটা তোর জন্যে কতটা দূরহ! তারপরও চাইব। তোকে সেদিন বলেছিলাম, দেখা করার সময় নীল শাড়ি পরে আসতে পারবি কিনা? কিংবা নীল জামা? পারবি না বলেছিস, জানি হয়তো পারবি না। তবুও চাই তুই আয়, তোকে দেখি। শেষবার চলে যাওয়ার আগে তুই আমার সাথে দেখা করতে চেয়েছিলি, কত কান্নাকাটি করলি দেখা করতে অথচ আমি দেখা করি নি! আমার যে তখন কি হয়েছিল! জানিনা। তোর সাথে শেষবার দেখা না করার অপরাধবোধ এতটা বছর ধরে আমাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খার করছে, আমি শুধু একটিবার তোকে দেখতে চাই। মরার আগে আমার যদি শেষ কোন ইচ্ছা থাকে তবে তা হচ্ছে, তার আগে তোকে একটিবার দেখে যেতে চাই। ঐ চোখ দুটির দিকে ভালো করে তাকাবো, যে চোখে আমি লজ্জায় কখনো ঠিকমতো তাকাতে পারি নি। প্লীজ, একটিবার অন্তত আমার সাথে দেখা করিস, মরে গিয়েও তাহলে শান্তি পাবো।


আজ আর না রে, কাজ আছে, অন্যদিন অন্যকিছু লিখবো নে। ভালো থাকিস।


ইতি
তোর....
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:০৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×