গত ১৫ ফেব্রুয়ারী ঢাকা থেকে রওনা হয়ে ১৯ ফেব্রুয়ারী পোছাই নাফাখুম |
আমাদের নাফাখুম যাওয়াটা একটু অন্য সময় এর তুলনায় আলাদা ছিল | দিন হিসাবে বর্ণনা করার চেষ্টা করছি |
১৫ ফেব্রুয়ারী রাত ১১.০০ টা আরামবাগ থেকে বাস এ রওনা হয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারী সকালে বান্দরবান পৌছাই
সকাল ৯.০০ টায় চাঁদের গাড়িতে থানচি রওনা হই| পৌছাই ১.30 মিটিতে | নেমেই গোছল টা সেরে নেই সান্খু নদীতে |
বিকেলে ১ টা ঝিরি পথ ধরে হেটে যাই সন্ধা পর্যন্ত | রাতে থানচি রেস্ট হউসে থাকি |
১৭ তারিখ সকালে বোট এ যাবার কথা রেমাক্রী | কিন্তু BDR এর ১ টা প্রবলেম এর কারণে বোট যেতে দিচ্ছে না ওদিকে | দিবে দিবে করে দুপুর পার করে ফেললাম | যাওয়া গেল না | বিকেলে পাশের পাহাড়ে গেলাম | সন্ধার পর রেস্ট হাউস এ ফিরলাম |
১৮ তারিখ বোট এর অপেক্ষা না করে সকাল ৭.০০ টায় হাটা শুরু করি রেমাক্রীর উদ্দেশে | সাঙ্গু নদীর পাড় বেয়ে পাহাড়ি পথ হেটে যেতে হচ্ছে |
কোনো কোনো জায়গায় নদীর ভিতর দিয়ে আবার কোনো কোনো জায়গায় পাহাড়ের চুড়ায় উঠতে হচ্ছে | জটিল ১ experience | ২ পাশের দৃশ গুলো দেখে মনে হচ্ছে- কোনো শিল্পী যেন তার অপন মনে একেছে | ১ কথায় অসাধারণ | তিন্দু পৌছাই ১.০০ টার পর | তিন্দুতে গোছল ও দুপুরের সামান্য খাবার খেয়ে নেয় | দুপুর ৩ টা | রেমাক্রী যেতে হবে | কারোর মনে কোনো ক্লান্তি নাই | সবাই রাজি হলো আবার হাটবে রেমাক্রী এর দিকে | শুরু হলো | তুলনামূলক ভাবে আগের পথ এর থেকে অনেক কঠিন এই পথ | রিস্কও অনেক বেশি | খাড়া পাহাড়ে উঠতে হচ্ছে পাহাড়ের গা বেয়ে, পা রাখার সু ব্যবস্থা নাই | কোনো রকম পা এর প্রথম বা শেষ অংশ রাখা যাবে এরকম সিড়ি | হঠাত সন্ধা নেমে এলো | পাহাড়ের মধ্যে অন্ধকার | কোথায় কিভাবে যাব জানিনা | ২/১ জায়গায় পথ হারিয়া ফেলছি | সবার মনে এইবার আতংক আশ্রয় নিয়েছে | কিভাবে যাব বাকি পথ ? মাঝ পাহাড়ে কি করব? কি যে ১ অবস্থা? লাইফে আর এ রকম অবস্থায় পড়তে হবে কিনা জানিনা | এই experience এর কথা বলে বোঝানো যাবে না | আকাশে পূর্নিমা চাদ উঠেছে | মনে হচ্ছে আমাজন এর মাজে একমাত্র হেল্পিং হ্যান্ড | ভালই লাগলো | লোমহর্ষক ১ টা ট্রাভেলিং শেষ করে ৮.০০ টায় পৌছাই রেমাক্রী | রাতে থাকার জায়গার সন্ধান করা শুরু হলো | ১ মাত্র রেস্ট হাউজ ফাকা নাই | পরে ১ টা চাটাইয়ের বেড়া ওয়ালা স্কুল পেলাম | বেন্চ গুলো ১ জায়গায় করে রাতে ওখানেই |
১৯ তারিখ সকালে হাটা ধরলাম নাফাখুম এর উদ্দেশে | ২ ঘন্টা লাগে যেতে | ৯.০০ টার পরে পোছাই | এ এক অদ্ভুত জলপ্রপাত | বাংলাদেশ এ এত সুন্দর জায়গা আছে ভাবতেই মন জুড়ে যাই |
সমই পেলে ঘুরে আসুন ১ বার | যদিও আপনাদের ক্ষেত্রে আমাদের মত লোমহর্ষক জার্নি হবে না | সহজ ১ প্ল্যানিং বলে দিচ্ছি-
১. ঢাকা টু বান্দরবান যাবেন বাস এ | (রাতে রউনা হলে সকালে পোছাবেন |)
২. বান্দরবান তেকে থানচি যাবেন চাঁদের গাড়িতে | সময় লাগবে ৪ ঘন্টা মত | (দুপুর ১ টার মধে যাওয়া যাবে |)
৩. থানচি থেকে বোট এ রেমাক্রী | সময় লাগবে ৪ ঘন্টা মত | ( ওই দিন ই রউনা হবেন | প্রথন দিন শেষ |)
৪. খুব সকালে উঠে নাফাখুম রউনা হবেন | যাওয়া ২, আশা ২, মোট ৪ ঘন্টা লাগবে | ওখানে থাকবেন ১ ঘন্টা | ১২ টায় ফিরবেন রেমাক্রী | ঘুরে এসে দুপুরের খাওয়া শেষে আসে পাশে ঘুরে দেখতে পারেন | ( দ্বিতীয় দিন শেষ |)
৫. বোট আগে থেকে টিক করে রাখবেন | সকালে উঠে রউনা থানছির দিকে | থানচি ১ টার দিকে আসবেন | দুপুরে খায়া শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে বান্দরবান এর গাড়িতে উঠবেন | রাতের গাড়িতে ঢাকা রউনা | (তৃতীয় দিন শেষ |)
৬. পরদিন সকালে ঢাকা | বাসায় ফিরে ২ ঘন্টা রেস্ট নিয়ে অফিস এ দৌড়|
আরোও ছবি দেখতে ক্লিক করুন :
https://www.flickr.com/photos/15553948@N02/sets/72157626118828672/
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৩৯