নিজের এসএসসি ও এইসএসসি পরিক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়ার পর যতটানা আনন্দিত হয়েছিলাম ছোট বোনের এসএসসি রেজাল্টে তার চেয়ে সহস্র গুন আনন্দ পেয়েছিলাম।
সাল ২০১০ আমি এইস এস সি পরিক্ষায় জিপিএ ৫ সহ উত্তির্ন হই।
মনের মাঝে ছোট বেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং পরবো।
তাই ম্যাথমেটিক্যাল টার্মগুলোর প্রতি ঝোঁকও ছিল অত্যাধিক।
কিন্তু বাবা মার ইচ্ছা ছেলেকে ডাক্তার হিসেবে দেখবে!!!
তাই আর সাত পাচ না ভেবে বাবা মার স্বপ্ন পূরনের উদ্দেশ্য ভর্তি হয়েগেলাম ফার্মগেটে অবস্থিত রেটিনা মেডিকেল কোচিং সেন্টারে।
ভালোই চলছিল পড়ালেখা কোচিং এ অবস্থান ছিল ও চোখে ধরার মত।
২ মাস যেতে না যেতেই ভাইরাল ফেভারে আক্রান্ত হই ।
এর পর অনেকদিন পড়ালেখা স্থিমিত থাকে ।
পরিনাম হিসেবে মেডিকেল ভর্তি পরিক্ষায় অকৃতকার্য !!! তবে তা দুরস্থ ছিল না???
কিন্তু দূঃখ লাগে নি কারণ আমি কৃতকার্য হই নি তাতে কি হয়েছে কিন্তু আমার যায়গায় তো অন্য যোগ্য একজন হয়েছে।
প্রথমবার আমার নিয়তী আমাকে টেনে স্থির করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।
তখন আমার মেডিকেলের স্বপ্ন চলেই গেছে প্রায় কিন্তু মা বাবার মনে সেই স্বপ্ন তখন ও বেঁচে ছিল!!!
তাইত আবার ২য় বারের জন্য আমাকে ভর্তি হতে হয় বগুড়ার শাখার প্রাইমেট মেডিকেল কোচিং সেন্টারে।
দীর্ঘ ১ বছরের চেষ্টা ২য় বারের মত বিফল হয়ে যায়!!!!!
তখন নিজের প্রতি কেমন যেন সন্দেহ চলে এসেছিল আর নিজেকে সত্যিই অনেক অযোগ্য মনে হয়েছিল।।
কিন্তু তখন মনের মধ্যে বাবা মার স্বপ্ন পূরনের যেদ টুকু পুশে রাখি ।
নিজে পারিনি তো কি হয়েছে ছোট বোন কে ডাক্তার বানাতে আমি আপ্রাণ চেষ্টা করে যাব।
তারপর থেকে আমার ছোট বোন কে সেই পথে চালনা করি ।
ও এসএসসি তে যখন জিপিএ ৫ পায় তখন আমি সত্যি অনেক আনন্দিত ছিলাম কেননা তখন প্রথম ধাপটা সফল ভাবেই পার করেছিলো।
এখন ওর পড়ালেখা পুরোটায় মেডিকেলের ভর্তি পরিক্ষার প্রস্তুতির সমতূল্য।
কিন্তু এইবারকার মেডিকেল ভর্তি পরিক্ষা সত্যিকার অর্থে এক ইতিহাস!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
আবার দুঃখের বিষয় এই যে আমার বোন এত বড় সৌভাগ্যবতী নয় যে এই ইতিহাসের অংশ হতে পারবে!!!!!!
কেননা আমাদের পরিবার এর ইতিহাস গড়ার জন্য পুজিটুকুর যোগান দিতে অপারগ!!!!!
কিন্তু তার মেধার প্রতি আমার যথেষ্ট আস্থা আছে।।
কিন্তু কোথায় আজ মেধাবীরা ???
সব তো নপুংসকের বাচ্ছা কাচ্চা মানে অতিব মেধাবী!!!!
যারা কিনা ২০০ তে ১৯৮ স্কোর করে!!!!!!
যাদের ভীড়ে সল্প মেধাবীরা ধিশেহারা !!
নিজের মাথা খাটিয়ে ১৭৫ স্কোর করেও মেডিকেলে একটা সীট জোটে না!!!!!
এর মধ্যের যারা নিজের চেষ্টায় যোগ্যতা অর্জন করেছে তারা আজ কলল্কিত !!!!!
জাতি তাদের কে কি জবাব দিবে??
আছে কোন উত্তর????
সময় কে আটকে রেখে , নিজের রক্ত কে পানি করে, নিজের দেহে দাগ অংকিত করে, সামজিকতাকে ভূলে আজ যারা তাদের যোগ্যতা অর্জন করলো তাদেরকে আজ নপুংসক হিসেবে নাম পেতে হচ্ছে!!
আসলে কারা নপুংসক কারা এই মেধাবীরা?? নাকি যারা এই অবস্থার জন্য দায়ী??
হাইরে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় !!! হইরে মেডিকেল কলেজ!!!!!
তোদের ভবিষৎ কোথায়?????
তাই বাবা মার স্বপ্ন কে মনের খাঁচায় বন্দি করে বোন কে এই পথ থেকে সরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এতে করে বাবা মার স্বপ্ন হয়তো অপূর্ণ থাকবে কিন্তু তাদের হইতো পিচ্চিটার মনে মনে দিয়ে যাওয়া ধিক্কার শুনতে হবে না।
পিচ্চিটা এইবার এইস এস সি পরিক্ষায় বসবে জানি না কি রকম ফলাফল করবে ?? তবুও আশা রাখি ।
দোয়া করবেন যেন ওর মেধা নপুংসক কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঠাই না পায়।।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০৬