১০ মাস ১০ দিন আমায় গর্ভে ধারন করেছিলে,সয়েছিলে অনেক কষ্ঠ ।
তোমার কষ্ঠের বিনিময়ে আমি দেখতে পেরেছি পৃথিবির আলো, আমার জন্মের পর তুমি সকল কষ্ঠ ভুলে যে অমলিন হাসি দিয়েছিলে তার তুলোনা করার মত মানদন্ড ধরনীতে নেই।
তিন মাস মাথা ঘোরানো আর বমির জন্য কিছুই খেতে পারতে না । পরে যখন খেতে পারতে, তখন আমার বেড়ে ওঠা, সেকি তোমার কষ্ট! সারা দিন ঘরের সব কাজ শেষে, সবার প্রয়োজন মিটিয়ে যখন বিছানায় গেলে, তখন আর ঘুম আসে না । সারা রাত বিছানায় এপাশ-ওপাশ করে কাটত তোমার; ঘরের আর সবাই ঘুমিয়ে থাকত তখন। সকালে আবার সবার আগে ঘুম থেকে ওঠা। রাত কীভাবে কেটেছে, কেউ জিজ্ঞেস করেনি তোমাকে। আবার প্রতিদিনের মতো চলা শুরু।
এত কষ্টের পরও, মা, এই অনাগত সন্তানকে নিয়ে তোমার কত আশা, কত স্বপ্ন! যখন সময় হলো এই ঘরের সবাইকে নতুন একটি মুখ উপহার দেয়ার, তখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে আমাকে আনলে বংশের প্রদীপ হিসেবে । এরপর শুরু হলো আমার পেছনে সময় ব্যয় করা- কখনো খাওয়ানো, গোসল করানো, কাপড় পরানো, ছোট্ট ছোট্ট শব্দ শেখানো প্রভৃতি । (তুমি বলেছিলে)…যেদিন আমি প্রথম ‘মা’ বলতে পেরেছিলাম, তখন তোমার খুশি কে দেখে! তুমি ভাবতে লাগলে তোমার চেয়ে সুখি বুঝি জগতের আর কেউ নেই । আদরে আদরে ভরে দিলে তোমার নয়নের জীবন। আমার ভালো করে বেড়ে ওঠার জন্য ভুলে গেলে নিজের খাওয়া-দাওয়া। ভালো কাপড় পরে স্কুলে পাঠাবে আমাকে, তাই ছেড়ে দিলে নিজের পছন্দের কিছু কেনা ।
যখন হাঁটতে পারতাম না, কথা বলতে পারতাম না, তুমিই আমার মনের ভাষা বুঝেছিলে, আমার সব প্রয়োজন মিটিয়েছিলে। তখন তো তুমি বলে বা লিখে কিছু বোঝাওনি । মা গো, তোমার একটু আদরের অপেক্ষায় আমি বসে আছি।
জানো মা আজ আমি অনেক একা!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
আমি আজ চার দেয়ালের ও কিছু সুতায় বাধানো বই এর মাঝে বন্দি...
আজ তোমাকে খুব মা মা বলে ডাকতে ইচ্ছা করছে.।
কিন্তু কেমন করে ডাকি বল????
তুমি তো অভিমান করে আমাকে পড়ালেখা নামে মিথ্যা মায়া জালে বাধিয়ে দিয়েছো............।